WordPress database error: [Disk full (/tmp/#sql_1df056_0.MAI); waiting for someone to free some space... (errno: 28 "No space left on device")]
SELECT COLUMN_NAME FROM INFORMATION_SCHEMA.COLUMNS WHERE table_name = 'sdsaw42_hsa_plugin' AND column_name = 'hsa_options'


Warning: mysqli_num_fields() expects parameter 1 to be mysqli_result, bool given in /var/www/vhosts/protikhon.com/httpdocs/wp-includes/wp-db.php on line 3547

WordPress database error: [Duplicate column name 'hsa_options']
ALTER TABLE sdsaw42_hsa_plugin ADD hsa_options VARCHAR(2000) NOT NULL DEFAULT ''

ইব্রাহিম হত্যার সিদ্ধান্ত কি সুলেমানের ভুল ছিল না? ইব্রাহিম হত্যার সিদ্ধান্ত কি সুলেমানের ভুল ছিল না?

ইব্রাহিম হত্যার সিদ্ধান্ত কি সুলেমানের ভুল ছিল না?

প্রকাশঃ জানুয়ারি ১১, ২০১৭ সময়ঃ ১১:৪৮ অপরাহ্ণ.. সর্বশেষ সম্পাদনাঃ ১১:২৯ পূর্বাহ্ণ

শারমিন আকতার:

hurrem-ve-ibrahim-ve-sulejman-muhtesem-yuzyil

“ইব্রাহিমকে তুমিই দাফন করবে মাতরাজ্জি। যেন কেউ না জানে ওর কবর কোথায়। এমনকি আমিও না”। ইব্রাহিম, জান্নাত ও জাহান্নামের মাঝে সর্বদা বসবাসকারী একজন। অটোম্যান সাম্রাজ্যের অতি গুরুত্বপূর্ণ যোদ্ধা উজিরে আজম। সুলতান সুলাইমানের অতি কাছের বন্ধু, পরামর্শদাতা, সহচর, ভাই। সব হারিয়ে ফেলা ছোট্ট ছেলে ইব্রাহিম দেবলেতে আলিয়ার অতি গুরুত্বপূর্ণ একজন হয়ে উঠবে তা কে জানতো। এরপর শুরু একের পর এক সাফল্যগাঁথা। সবকিছু ঠিকঠাক, যেন নিজ হাতে তৈরি সুখের গল্প। তবে এই সুখের গল্পে জাহান্নামের ছিটেফোঁটা আসতে শুরু করলো এক ডাইনীর আবির্ভাবের পর থেকে। সবকিছু তছনছ হতে শুরু করলো। সুলেমান-ইব্রাহিমের বহু দিনের ভাতৃত্বের মাঝে ঝড় হয়ে এলো আলেকজান্দ্রা উরফে হুররাম সুলতান। চুরাবালির মতো গ্রাস করতে শুরু করলো এই অটোম্যান সাম্রাজ্যের সুনিশ্চিত ভবিষ্যৎকে। এক এক করে তার চক্রান্তে শেষ হতে লাগলো সুলেমানের অতি কাছেরজনরা। হুররামের সবচেয়ে কঠিন প্রতিদ্বন্দ্বী সামান্য এক কাগজে লেখা কয়েকটি কথায় মুহূর্তের নেই হয়ে গেল! অনেকদিনের প্রচেষ্টার ফল অবশেষে আকর্ষিকভাবে এত সহজে ধরা দেবে তা হুররাম স্বপ্নেও ভাবতে পারেনি।

মুহূর্তের আবেগে সবচেয়ে ক্ষমতাধর উজিরে আজমকে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দিয়ে দিলেন ইব্রাহিমের অতি প্রিয় বন্ধু, সহচর, ভাই সম্রাট সুলতান সুলাইমান। গভীর রাতে সবার আড়ালে সবচেয়ে নিরাপদ আশ্রয়ে থাকাকালীন সময়ে। একবারও ভাবলেন না অতি প্রিয় বোন হেতিজার কথা, তার সন্তানদের কথা। পালগপ্রাণ হেতিজা এক নজর স্বামীর মুখ দেখলেও তাঁর সন্তানরা বাবার মুখ দেখার সুযোগও পেলো না। এমনকি জনসমক্ষে ইব্রাহিমের জানাজাও পড়তে দেওয়া হল না। সবার অগোচরে চিরনিদ্রায় শায়িত হলেন পারগায় জন্ম নেওয়া অতি সাধারণ জেলের সন্তান থেকে অটোম্যান সাম্রাজ্যের উজিরে আজম হওয়া ইব্রাহিম পাশা। তাঁর বাবা, ভাই লিও জানতেও পারলো না কোন অতল সমুদ্রের গহ্ববরে হারিয়ে গেছে তাদের সেই ছোট্ট ভাই।

অটোম্যান সাম্রাজ্যের সুদক্ষ সম্রাট সুলতান সুলাইমানও কি স্বার্থপর নন? তিনি কি আসলেই ন্যায় বিচার করেছিলেন ইব্রাহিম পাশার সাথে? তাই যদি হবে তাহলে একইসাথে বহু অভিযোগে অভিযুক্ত তাঁর স্ত্রী, সম্রাজ্ঞী হুররাম সুলতানকে কেন মৃত্যুদণ্ড দিলেন না?

ইব্রাহিম হুররামের মতো মন ভুলানো কথা বলতে পারে না বলে? ইব্রাহিম কথায় কথায় সুলতান সুলাইমানের অতি প্রিয় সহধর্মীনী হুররামের মতো চোখের জল ফেলতে পারে না বলে? কথায় কথায় অজ্ঞান হতে পারে না বলে? হুররামের মতো ইব্রাহিমও সুলতান সুলাইমানের অতি আপনজন নয় বলে?

সুলাইমান নিজের বাচ্চাদের কথা ভেবে হুররামকে অতীতে ক্ষমা করে দিতে পেরেছিলেন; বিষের পরিবর্তে ঘুমের ঔষধ দিয়ে, অথচ ইব্রাহিমের ক্ষেত্রে তা হল না কেন? কেন বোন হেতিজার কথা ভেবে ক্ষমা করে দিলেন না? কেন হেতিজার সন্তানদের কথা ভাবলেন না? সুলতান সুলাইমানের কি তাঁর বোন হেতিজার কথা ভাবা উচিত ছিল না? ইব্রাহিমকে ছাড়া হেতিজা কী করে থাকবে, তাঁর বাচ্চাদের ভবিষ্যৎ কী হবে; এগুলো কি সুলতানের ভাবনায় থাকার প্রয়োজন ছিল না?

ইব্রাহিমতো এর আগেও অনেক অপরাধ করেছিল। অটোম্যান সুলতান সুলাইমান তখন ক্ষমা করতে পারলে এবারও করলো না কেন? যেখানে মাত্র কিছুদিন আগে সুলতানের সহধর্মীনি, কুচক্রী নারী হুররাম সুলতানের বিরুদ্ধে সুলাইমানের প্রথম সন্তান মুস্তফাকে হত্যা চেষ্টার মতো গুরুতর অভিযোগ উঠলে সুলাইমান যদি তা উড়িয়ে দিতে পারে; তবে ইব্রাহিম কেন এ সামান্য অভিযোগে মৃত্যুদণ্ড পাবে?

ইব্রাহিম নিজেকে সুলতানের প্রশিক্ষক বলেছে বলে? সত্যিই তো তাই। সুলাইমান যা কিছু শিখেছে তার অধিকাংশই ইব্রাহিম থেকে। তবে এ কথা অস্বীকার করতে নারাজ কেন ছিল সুলতান সুলাইমান? তিনি তিন মহাদেশে আধিপত্য বিস্তারকারী সম্রাট বলে?

অহংকার কি তাহলে শুধু দেবলেতে আলীয়ার সফল সুলতান সুলাইমান-ই করতে পারবেন? দক্ষ যোদ্ধা, বহু ভাষাবিদ, অটোম্যান সাম্রাজ্যের প্রভাবশালী উজিরে আজম এবং সুলাইমানের অতি প্রিয় বন্ধু হিসেবে কি ইব্রাহিম পাশার অহংকার করাটা অযৌক্তিক ছিল?

সম্রাট সুলতান সুলাইমানের নেওয়া এ সিদ্ধান্ত কি আসলেই ভুল ছিল না? ইব্রাহিমের সবসময়ের প্রতিদ্বন্দ্বী এবং তাঁর মৃত্যু কামনাকারী হুররামের মতে, তার স্বামীর সিদ্ধান্তই সঠিক। যদিও এ মতামত পুরোপুরিই বিতর্কিত। কারণ ইব্রাহিমের মৃত্যুর জন্য হুররামই সরাসরি দায়ী। সে কখনও থেমে থাকেনি; যতক্ষণ পর্যন্ত ইব্রাহিমের মৃত্যু নিশ্চিত হয়নি। এদিকে হুররামের অপরাধের ব্যাপারে প্রমাণ পাওয়ার পরও সম্রাট সুলতান সুলাইমান সবসময়ই উদাসীনতা দেখিয়েছেন। কখনও হুররামের মিথ্যা ভালবাসার জালে পড়ে; আবার কখনও রাজার সন্তানদের কথা ভেবে।

সুলতান সুলাইমান নিজের অজান্তে, অহংকার বশে একথা ভুলে গিয়েছিল যে, ভুল সবাই করে। সুলতানের স্বপ্নে দেখা বেশ কয়েকটি ঘটনা পুরোপুরিই মিথ্যে ছিল। যেমন, ইসকান্দার চেলেভির নিরপরাধ হওয়া, নিজের ছেলে মেহমেদকে সম্রাট হতে দেখা। তিনি নিজের বিবেককে সঠিক পথে ধরে রাখতে পারেনি ষড়যন্ত্রকারীনি হুররামের কারণে। তার পাতা ফাঁদে পা দিয়েছিলেন এই পৃথিবীর সবচেয়ে ক্ষমতাবান সম্রাট সুলতান সুলাইমান।

অবিস্মরণীয়ভাবে সফল সাম্রাজ্য পরিচালনাকারী সম্রাট সুলতান সুলাইমান নিজেও একাধিক ভুল করে বসেছিলেন। দু:খজনক হল, সাম্রাজ্য পরিচালনা করার ক্ষেত্রে নয় বরং সামান্য দাসী থেকে নিজ কুট বুদ্ধির জোরে সুলতানের সম্রাজ্ঞী বনে যাওয়া হুররাম সুলতানের ক্ষেত্রে। ইব্রাহিমের অপরিসীম ভালবাসা না দেখে শুধু উদ্ধত আচরণটিই চোখে পড়ল সুলাইমানের? ভালবাসা কি সেটাই যা শুধু চোখে দেখা যায়? এত দুরদর্শী সম্রাট কেন তা বুঝলেন না?

 শিক্ষণীয়: সুলতান সুলেমান যদি ইব্রাহিম পাশার কাছ থেকে প্রথমেই সমস্ত অপরাধের উত্তর চাইতো, তাহলে হয়তো আজ মৃত্যুদণ্ড দেওয়ার প্রয়োজন হতো না। আমাদের জন্য শিক্ষণীয় হল এই, ‘যেকোনো বিষয়ে সন্দেহ বা অভিযোগ পেলে অভিযোগকারীর সাথে সরাসরি কথা বলুন। তারপর সিদ্ধান্ত নিন। এক্ষেত্রে ভুল হওয়ার সম্ভাবনা অনেকটা কমে যাবে। কেউ আপনাদের মাঝখানে তৃতীয় পক্ষ হয়ে সুযোগ নিতে পারবে না।

 

আরো সংবাদঃ

মন্তব্য করুনঃ

পাঠকের মন্তব্য



আর্কাইভ

April 2024
S S M T W T F
 12345
6789101112
13141516171819
20212223242526
27282930  
20G