WordPress database error: [Disk full (/tmp/#sql_1df056_0.MAI); waiting for someone to free some space... (errno: 28 "No space left on device")]
SELECT COLUMN_NAME FROM INFORMATION_SCHEMA.COLUMNS WHERE table_name = 'sdsaw42_hsa_plugin' AND column_name = 'hsa_options'


Warning: mysqli_num_fields() expects parameter 1 to be mysqli_result, bool given in /var/www/vhosts/protikhon.com/httpdocs/wp-includes/wp-db.php on line 3547

WordPress database error: [Duplicate column name 'hsa_options']
ALTER TABLE sdsaw42_hsa_plugin ADD hsa_options VARCHAR(2000) NOT NULL DEFAULT ''

গোপনে সে তথ্য পৌঁছে দেয়া হতো বঙ্গবন্ধুকে গোপনে সে তথ্য পৌঁছে দেয়া হতো বঙ্গবন্ধুকে

গোপনে সে তথ্য পৌঁছে দেয়া হতো বঙ্গবন্ধুকে

প্রকাশঃ মার্চ ২৫, ২০১৬ সময়ঃ ৩:৪০ অপরাহ্ণ.. সর্বশেষ সম্পাদনাঃ ৪:০৫ অপরাহ্ণ

Radioএকটু পেছন থেকেই শুরু করি। মার্চের সেই দিনগুলোর কথা বলুন, আঁচ পাচ্ছিলেন বড় কিছুর?

শুরুতেই বলে নিই। আমার কোনো দলের সঙ্গেই রাজনৈতিক সম্পৃক্ততা নেই। তবে ৭০ সালের নির্বাচনে ভোট দিয়েছিলাম একটা তাগিদ থেকেই। তখন মোটামুটি পরিষ্কার হয়ে গেছে স্বাধীনতা ছাড়া বাঙালীর অন্য কোনো বিকল্প নেই। রাজনীতি না করলেও রাজনীতির খোঁজ ঠিকই রাখতাম। রাখতে হতো। আসল পরিবেশটাই তখন হয়ে গিয়েছিলো সেরকম। আমার ঘনিষ্ঠ বন্ধু ও মুক্তিযোদ্ধা নুরুদ্দিন মাহমুদের (এয়ার ভাইস মার্শাল সুলতান মাহমুদের ছোটো ভাই) সঙ্গে এ ব্যাপারগুলো নিয়ে বেশ আলোচনা হতো। বলতে পারেন গোপন একটা তৎপরতায় জড়িত ছিলাম আমরা। আমাদেরই এক বন্ধু ফ্লাইট লেফট্যানেন্ট শামসুল আলমের কাছ থেকে আমরা বিমানবন্দরে পাকিস্তানীদের সামরিক আনাগোনার খোঁজ পেতাম। গোপনে সে তথ্য পৌঁছে দেয়া হতো বঙ্গবন্ধুকে। উনার হয়তো এসব জানার অন্য মাধ্যম ছিলো। কিন্তু তারপরও আমরা এক ধরণের সন্তুষ্টি পেতাম কিছু করতে পারার আনন্দে।

বাঙালী হিসেবে বঞ্চনার অভিজ্ঞতা আপনার কেমন?

ভালোই। বাবার চাকুরির সুবাদেই আমার পড়াশোনা হয়েছে করাচিতে। বাঙালীর ছেলে হিসেবে ভালো কলেজে পড়া, কিংবা করাচি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়াটা ছিলো বিশাল ব্যাপার। পাকিস্তানীরা প্রায়ই ‌‌’বাঙালী, বাঙালী’ বলে টিজ করতো। তবে আমার যা মার্কস ছিলো তাতে এসব কোনো বাধা হয়ে দাঁড়ায়নি। আরেকটা সুবিধা ছিলো শুদ্ধ উচ্চারণে উর্দু বলতে পারার ক্ষমতা। এটাও বেশ কাজে এসেছে।

ফিরে যাই সেই দিনটিতে। কিভাবে ঘটলো ব্যাপারটা?

এজন্য আরেকটু পেছনে ফেরা যাক। সাতই মার্চই আসলে একটা বড় কিছু ঘটে যাওয়ার আশঙ্কা ছিলো। রেসকোর্সে বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতার ঘোষণা দিতে যাচ্ছেন এমন একটা গুজব ছড়িয়ে পড়েছিলো গোটা দেশে। সেদিন পাকিস্তান আর্মিরও প্রস্তুতি ছিলো ভয়ঙ্কর কিছু ঘটানোর। এটা ঘটনাক্রমে জানতে পারি আমি রেডিও টিউন করতে গিয়ে। যদিও সেদিন রেসকোর্সে উপস্থিত ছিলাম আমি। ডায়াসের পেছনদিকেই। এই ভাষণটি রেডিওতে সম্প্রচার করার কথা ছিলো, কিন্তু পাকিস্তান সরকার সেটা স্থগিত রেখেছিলো। তখনই টিউন করতে গিয়ে আমার কানে আসে বিভিন্ন আর্মি ইউনিটের নানা কথাবার্তা।

কোন ওয়েভ লেংথে?

মিডিয়াম ওয়েভে।

তার মানে ২৫ মার্চ রাতে সেই অভিজ্ঞতাটাই প্ররোচিত করেছিলো আপনাকে অসাধারণ সেই কাজটি সারতে?

তা বলতে পারেন। তবে রেডিও শোনার অভ্যাস আমার অনেক আগে থেকেই। একটা সনি টিআর-থাউজেন্ড রেডিও ছিলো আমার। এছাড়া গান শোনার জন্য ব্যবহার করতাম জার্মান গ্রুনডিগ ব্র্যান্ডের একটা রেকর্ডার। স্পুল সিস্টেম। ২৫ মার্চ মাঝরাতে ভয়ঙ্কর গোলাগুলির শব্দে আমি জেগে উঠি। তখন খিলগাঁও থাকতাম আমরা। ছাদে উঠে দেখি ট্রেসারের আলোয় উজ্জ্বল চারপাশ। সেইসঙ্গে গুলির আওয়াজ। নীচে নেমে আমি রেডিও খুলি। টিউন করতে করতে শর্ট ওয়েভে পেলাম উর্দু ও ইংরেজি মেশানো কথাবার্তা। বুঝতে পারলাম পাকিস্তানী আর্মি ইউনিটগুলোর মধ্যেকার কথাবার্তা এগুলো। এরপর একটা ক্যাবল দিয়ে রেডিওর সঙ্গে সংযুক্ত করে শুরু করলাম রেকর্ডিং। ভাগ্যক্রমে আমার একদম নতুন একটা স্পুল ছিলো। তবে একটানা রেকর্ড হচ্ছিলো না। কারণ এসব কথাবার্তার মধ্যে বেশ বিরতি ছিলো। আমাকে থেমে থেমে রেকর্ড করত হচ্ছিলো। এভাবে সকাল পর্যন্ত চললো।

এরপর?

তখন পর্যন্ত পুরো ব্যাপারটা আমার পরিবারের মধ্যেই সীমাবদ্ধ। ২৭ মার্চ কারফিউ ওঠার পর বের হলাম শহর দেখতে। নারকীয় ধংসযজ্ঞের চিহ্ন চারপাশে। আমি, নুরুদ্দিন একটি বাইকে চড়ে ঘুরছিলাম। গুলিস্তানের কাছে এসে দেখা হলো শামসুল আলমের সঙ্গে। সে জানালো বঙ্গবন্ধুকে গ্রেপ্তার করেছে আর্মি। বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় দেখলাম একই অবস্থা। ইকবাল হল পুরো বিধ্বস্ত। এরও কদিন পর, এপ্রিলের শুরুর দিক রমনা কালীবাড়ি গেলাম। পাশেই আমার অফিস। ঢোকার আগে দেখি এক লোক বমি করতে করতে বেরোচ্ছে। কাছেই একটা আর্মি জিপ ছিলো। কিছু বললো না যদিও। তবে লোকটিকে দেখেই বুঝলাম কি বিভৎস দৃশ্য চাক্ষুস করেছে সে। আমার অভিজ্ঞতাও হলো তার মতোই।

অডিও টেপ নিয়ে কেমন সমস্যায় পড়েছিলেন? তখন কি বুঝেছিলেন কি অমূল্য উপাত্ত আপনার হাতে?

আমি এর মধ্যেই স্পুলটি অডিও ক্যাসেটে কনভার্ট করে নিয়েছিলাম। এপ্রিলের শেষ দিকে ঠিক করলাম এটি ভারতে পাঠাবো। এ ব্যাপারে সাহায্য করতে এগিয়ে এলো কাজী নামে এক বন্ধু। পাকিস্তান টোবাকোতে কাজ করতো সে। ঠিক হলো মইদুল ইসলাম (সাংবাদিক/ন্যাপ কর্মী) ও জামিল চৌধুরী এটি ভারতে নিয়ে যাবে। কাজী থাকতো ইস্কাটনে। ভয়ঙ্কর অভিজ্ঞতাটা হলো যেদিন আমি ওর বাসায় যাচ্ছি ক্যাসেট ডেলিভারী দিতে, অল্পের জন্য বেঁচে গেছি বলতে হবে। রিক্সায় আমার কোলে একটা রেকর্ডার, তার মধ্যে সেই ক্যাসেট। পুরো রাস্তাটা ফাঁকা। মৌচাক মোড়ে এমন সময় একটা আর্মি জিপ টার্ন নিলো, আসতে লাগলো বরাবর আমার দিকে। আত্মা খাচারাম অবস্থা তখন। যদি থামিয়ে বলে বাজাতে, আর তারপর শোনে কি আছে তাহলে আর জান নিয়ে ফিরতে হবে না। কিন্তু মুখের ভাবে সেটা বুঝতে দিলাম না। রিক্সা একপাশে সাইড করে দাড়াতে বললাম। জিপটা পাশ দিয়েই গেলো। আমি হাসি মুখে তাকালাম তাদের দিকে। কিছু ঘটলো না। ঠিকমতোই পৌছে দিলাম। আগস্টের দিকে স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র থেকে প্রচারিত হয় টেপটি। তবে আমার নাম বলেনি। অবশ্য জানার কথা নয় তাদের।

স্পুলটির কি হলো?

এটি নিয়ে আরেক সমস্যা। কখনো এটা রাখতাম আমার অফিসে, কখনো বাসায়। মে মাসের দিকে একদিন অফিসে গিয়ে দেখি লন্ডভন্ড হয়ে আছে চারদিক। পাকিস্তান আর্মি রাতে রেড দিয়ে তল্লাশী চালিয়েছে। ভাগ্যক্রমে স্পুলটা সেরাতে আমার বাসায় ছিলো।

চাকুরী করতে সমস্যা হয়নি?

না, হয়নি।

ডিসেম্বরে বুদ্ধিজীবিদের যখন তালিকা করা হচ্ছিলো, তাতে পরিচিত কেউ ছিলো না?

আমাদের আনবিক শক্তি কমিশনের কেউ ছিলেন না। তবে সে সময় অন্য একটা ঘটনা ঘটেছিলো। ডিসেম্বরের শুরুতে ডেমরার মুক্তিযোদ্ধারা আমাদের বাসার পাশের জলাঞ্চলটা ব্যবহার করতেন চলাচলের জন্য। এক রাতে পাকিস্তান আর্মি সেদিক লক্ষ্য করে সারারাত গুলি চালালো। পুরোটা সময় বেশ আতঙ্কে কেটেছে।file (5)

বিজয়ের সময়কালটা বলবেন?

তখনকার অনুভূতি আমি সারেন্ডারের সময়কার কথাবার্তাও রেকর্ড করেছিলাম।

সেগুলো কই!

আছে কোথাও। খুজলে পাওয়া যাবে।

এসব তো আমাদের মুক্তিযুদ্ধের অসামান্য সব দলিল। আপনিতো চাইলে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরে দিতে পারেন এসব।

দিয়েছিতো। অপারেশন সার্চলাইটের ট্রান্সক্রিপ্ট আমি তাদের দিয়েছি অডিও টেপসহ। যদিও তারা আমার পেশা প্রকৌশলী লিখেছে, আপনি দয়া করে এটা অবশ্যই সংশোধন করে দেবেন।

এই যে অসাধারণ একটি কাজ করেছেন এজন্য সরকারী তরফে কোনো স্বীকৃতি পেয়েছেন? ব্যাপারটা জানালেন কবে, মানে কাজটা যে আপনার। তাছাড়া এটা তো যুদ্ধাপরাধের প্রমাণ হিসেবে দাখিল করার কথা ছিলো।

আমি ঠিক স্বীকৃতির জন্য কিছু করিনি। সত্যি বলতে স্বীকৃতির কাঙ্গালও নই। ‘৭২ সালের ফেব্রুয়ারির দিকে বাংলাদেশ অবজারভারে আমি একটা লেখা লিখি এটা নিয়ে। কিছুদিন পর পুলিশের ডিআইজি শাকুর সাহেব আমার সঙ্গে দেখা করেন ট্রান্সক্রিপ্ট নিয়ে আলোচনা করতে, এতে যুদ্ধাপরাধের প্রমাণ হিসেবে উল্লেখযোগ্য কি কি পাওয়া যায় দেখতে। আমি অডিওর একটা কপি দিয়েছিলেন তখনকার সেনাপ্রধান শফিউল্লাহ এবং নুরুদ্দিনের বড় ভাই সুলতান মাহমুদকে। কিন্তু এরপর আর কোনো খবর পাইনি। বরং জিয়া সরকারের আমলে একবার সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে দেখি ট্রান্সক্রিপ্টটা ছাপা হয়েছে তাদের কীর্তি বলে। আমি অবজারভারে প্রতিবাদলিপি পাঠালাম। বুঝতেই পারছেন। কোনো উত্তর আসেনি, প্রতিবাদও ছাপা হয়নি। অবশ্য আমি সবকিছু এমপিথ্রি ফরম্যাট করে রেখেছি।

আশির শুরু থেকে আমি দেশের বাইরে। কালেভদ্রে আসা হয়। এর মধ্যে একবার এনটিভিতে একটা অনুষ্ঠানে ডাকা হয়েছিলো আমাকে। নুরুদ্দিনও ছিলো। সেখানে প্রচার করা হয়েছিলো টেপটি। এইতো। নিজের প্রচার নিয়ে আমি ভাবি না। তবে এবার দেশে ফিরে মুক্তিযোদ্ধার চেতনার যে নবজন্ম দেখলাম, তাতে আমি যেমন অবাক তেমনি খুশী। আমাদের গর্বের এই অর্জনটাকে ধরে রাখতেই হবে নতুন প্রজন্মের কাছে।

কৃতজ্ঞতা : জন্মযুদ্ধ

==========

আরো সংবাদঃ

মন্তব্য করুনঃ

পাঠকের মন্তব্য



আর্কাইভ

April 2024
S S M T W T F
 12345
6789101112
13141516171819
20212223242526
27282930  
20G