WordPress database error: [Disk full (/tmp/#sql_1df056_0.MAI); waiting for someone to free some space... (errno: 28 "No space left on device")]
SELECT COLUMN_NAME FROM INFORMATION_SCHEMA.COLUMNS WHERE table_name = 'sdsaw42_hsa_plugin' AND column_name = 'hsa_options'


Warning: mysqli_num_fields() expects parameter 1 to be mysqli_result, bool given in /var/www/vhosts/protikhon.com/httpdocs/wp-includes/wp-db.php on line 3547

WordPress database error: [Duplicate column name 'hsa_options']
ALTER TABLE sdsaw42_hsa_plugin ADD hsa_options VARCHAR(2000) NOT NULL DEFAULT ''

প্রসঙ্গ : ক্যাডার ও বিসিএস ক্যাডার প্রসঙ্গ : ক্যাডার ও বিসিএস ক্যাডার

প্রসঙ্গ : ক্যাডার ও বিসিএস ক্যাডার

প্রকাশঃ জুলাই ৩১, ২০১৭ সময়ঃ ৯:৫৭ অপরাহ্ণ.. সর্বশেষ সম্পাদনাঃ ১০:০৬ পূর্বাহ্ণ

নির্ঝর আহমেদ প্লাবন:

বাংলাদেশে অনেক ক্যাডার আছে। যেমন- ছাত্রলীগ ক্যাডার, ছাত্রদল ক্যাডার, ছাত্রশিবির ক্যাডার, ছাত্রফ্রন্ট ক্যাডার, ছাত্র ইউনিয়ন ক্যাডার, বিসিএস ক্যাডার প্রভৃতি। এসব ক্যাডারের মধ্যে বিসিএস ক্যাডারই ব্যতিক্রম বলে জানতাম। আরো জানতাম এরা উদার , শিক্ষিত এবং রুচিশীল। আমি কোনোদিন বিসিএস ক্যাডার হতে চাই নি। এখনো চাই না। নামের সঙ্গে ক্যাডার শব্দ যোগ হোক এটা আমার কাছে মূল্যবোধ পরিপন্থি। যাইহোক বাংলাদেশের পরিপ্রেক্ষিতে বিসিএস ক্যাডার হলো সবচেয়ে সম্মানিত চাকরিগুলোর মধ্যে একটি। মনে রাখতে হবে বিসিএস ছাড়াও এদেশে আরো অনেক সম্মানিত চাকরি আছে। বিসিএসকে একমাত্র সম্মানের মানদণ্ড ধরার মানে নেই। বস্তুতঃ সব চাকরিই সম্মানের। আবার সব চাকুরিজীবীই চাকর। আমার সঙ্গে কমপক্ষে ৫০জন বিসিএস ক্যাডারের পরিচয় আছে। এদের মধ্যে ৩/৪ জনকে পেয়েছি যাদেরকে শিক্ষিত বলা যায়। এটা বিসিএস ক্যাডারের নয় আমরাই দুর্ভাগ্য।

এখন মূল প্রসঙ্গে আসি। ইদানিং ‘বিসিএস ছাড়া ক্যাডার নয়’ আন্দোলন চলছে। এটা ভালো। যারা সর্বোচ্চ সনদ অর্জন করে ফেলেছে, যাদের ক্লাসে পড়াতে হয় না, যাদের পড়তেও হয় না, সমাজের প্রতি যাদের দায়বদ্ধতা নেই, যাদের অফিসে জবাবদিহি নেই তাদের তো কোনো না কোনো কাজ দরকার। সুতরাং আন্দোলন করে সময় পার করছে। বিষয়টা ইতিবাচক। মুখস্তবিদ্যা দিয়ে মূলত বিসিএস ক্যাডার হয় (কিছু কিছু বিসিএস ব্যতিক্রম অাছে)। আর মৌখিক পরীক্ষার আগে কোথায় কোথায় দৌড়াতে হয়, কোথায় কী ঢালতে হয় সেটা কারো অজানা নয়। ব্যতিক্রম আছে। ব্যতিক্রমের সংখ্যাটা অতি নগন্য। তাদেরকে স্যালুট জানাই। আর ঐ ব্যতিক্রমরাই মূলত শিক্ষিত হয়। আমি যে ৩/৪ জনকে শিক্ষিত পেয়েছি তারা সবাই পরীক্ষা না দিয়েই ক্যাডার হয়েছেন। কয়েকদিন আগে দুইজন পরীক্ষায় পাশ করা এবং একজন অন্যভাবে হওয়া ক্যাডারের সঙ্গে বেশ আড্ডা হলো। এদের একজন অধ্যাপক (তিনি একটা সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ) আর দুইজন সহকারী অধ্যাপক । যে দুইজন পরীক্ষায় পাশ করা তারা কিছুক্ষণ নিজেদের পাশের আস্ফালন করেই শেষ হয়ে গেলেন। আর যিনি অন্যভাবে ক্যাডার হয়েছেন তিনি জ্ঞান-বিজ্ঞানের বিচিত্র দিক নিয়ে বেশ বুদ্ধিদীপ্ত আলোচনা করলেন। যখন ঐ পাশ করা ব্যক্তিরা নিজেদের সাবজেক্ট নিয়ে অন্য সবাজেক্টের একজনের সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে হিমশিম খাচ্ছেন তখন বুঝতে পারলাম তারা আসলে কী চিজ! যাইহোক ঐ দুজনই আমার সাবজেক্টে পাশ করা লোক। একজন আবার তাঁর বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথম শ্রেণিতে প্রথম হয়েছেন বলে তাঁর অহংকারের অন্ত নেই।

আমি আমার বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রিলিমিনারি রেজাল্ট দেয়ার আগের দিন প্রিলিতে চান্স পেয়েছে ঘোষণা দিয়ে মিষ্টি বিতরণ করতে দেখেছি। এবং পরের দিন রেজাল্ট হওয়ার পর দেখলাম তারা সবাই চান্স পেয়েছে। এরপরের কাহিনী আমি আর জানি না।
বিসিএসে যারা ক্যাডার হন তাদের প্রতি আমাদের বিনম্র শ্রদ্ধা এবং ভালোবাসা সব সময় অব্যাহত ছিলো, আছে এবং থাকবে। বিসিএস ক্যাডাররা মনের দিক থেকে উদার এবং মহৎ হবেন এটাই আমাদের প্রত্যাশা। বাস্তবে আমাদের প্রত্যাশা পূরণ হচ্ছে না। ক্যাডারদের ভাবসাব দেখে ছাত্রলীগ ক্যাডারের সঙ্গে পার্থক্য করতে পারছি না। এ ব্যর্থতা সম্পুর্ণ আমার। বিসিএস ক্যাডার হওয়ার পর তাঁদের ভাবসাব এমন মনেহয় তাঁরা রাষ্ট্রপতির চেয়েও বড় কিছু হয়ে গেছেন। তাঁদের ফেসবুক স্ট্যাটাস দেখে হতাশ হওয়া ছাড়া কোনো উপায় আমাদের নেই। তাছাড়া তাঁদের লাগামহীন দুর্নীতির কথা না হয় নাই বললাম। অফিসে ফাঁকি দেয়ার কথাও বাদ রাখলাম, স্থগিত রাখলাম তাঁদের চরিত্রহীন কর্মকাণ্ডর বিবরণ।

আমরা তাঁদেরকে অনেক বড় উচ্চতায় দেখতে চাই। আপত্তির বিষয় হচ্ছে তাঁরা নিজেরাই নিজেদেরকে এত বড় করে দেখেন যে, তাঁদের কে মানুষ বলতে আমাদের ভয় হয়। মনে হয় তারা দেবতার পর্যায়ে পৌঁছে গেছেন। দেবতাদের জন্য সব জায়েজ সুতরাং তাঁদের জন্যও সব জায়েজ। বিসিএস ক্যাডার হয় জনগণের সেবা করার জন্য অথচ জনগণই তাঁদের সেবা করে। তাঁদেরকে আমরা দেবতাই মানলাম। দেবতাদের কিছু মহত্ম আছে। আরেকজন যদি অল্প যোগ্যতিা নিয়েও দেবত্ব অর্জন করে তাতে বড় দেবতাদের কোনো আপত্তি নেই। আমরা তো এটা ভালো করেই জানি যারা পরীক্ষা দিয়ে বিসিএস ক্যাডার হয়েছে অার যারা অন্যভাবে ক্যাডার হয়েছে উভয়ের মর্যাদা এক নয়। তারপরেও আরেকজনের ক্যাডার হতে গেলে আমাদের পরীক্ষায় পাশ করা ক্যাডারদের এত আপত্তি কেন ? এতটুকু উদারতা দেখানোর মানসিকতা যাদের নেই তারা বিসিএস ক্যাডার হয় কীভাবে।

মোতাহের হোসেন চৌধুরী, আপনাকে প্রতিনিয়তই স্যালুট জানাতে হচ্ছে। প্রমথ চৌধুরী, আপনাকেও। আপনারাই আমাদের শিখিয়েছেন সনদ অর্জন, পরীক্ষায় পাশ করা,বড় চাকরি পাওয়া, ক্যাডার হওয়া আর শিক্ষিত হওয়া এক নয়। অারো শিখিয়েছেন সুশিক্ষিত লোকমাত্রই স্বশিক্ষিত। যারা আপন শিক্ষায় উদ্ভাসিত হয়ে প্রেম-ভালোবাসার তীর্থ নীরে অবগাহন করতে পারে নি তারা সনদ অর্জন করলেও এমনকি পরীক্ষায় পাশ করলেও শিক্ষিত নয়। শুধু শিক্ষিত হলেই চলবে না আপনারা বলেছেন, শিল্পীতও হতে হবে। যারা সত্যকে ভালোবাসতে পারে না, সুন্দরকে ভালোবাসতে পারে না, ভালোবাসাকে ভালোবাসতে পারে না, নিজের ক্ষতি স্বীকার করে ভালোবাসতে পারে না, তারা আর যাই হোক মূল্যবোধ অর্জন করতে পারে না। তারা বিসিএস ক্যাডার হলেও তাদের কাছে মূল্যবোধ আর মূলা সবজি একই জিনিস। মানবতার মহৎ আহবানে তারা কখনোই সাড়া দেয় না।

বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাশ করার পর ক্যাডারের জন্য পরীক্ষা দিতে হবে কেন ? বরং আমাদের বিসিএস ক্যাডারদের উচিত পরীক্ষা বিহীন ক্যাডার নিয়োগ দেয়ার জন্য আন্দোলন করা। স্নাতক এবং স্নাতকোত্তর পাশ করার পর যদি একজন শিক্ষার্থী ক্যাডার হওয়ার যোগ্য না হয় তাহলে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো বন্ধ করে দেয়া হোক। বিশ্ববিদ্যালয়গুলো যদি যোগ্য নাগরিক তৈরি করতে না পারে তাহলে আমরা বিশ্ববিদ্যালয় দিয়ে কী করব ?
বিসিএস ক্যাডাররা কোন দলের ক্যাডার তা কারো কাছে অবিদিত নয়। আমার দেখা অসংখ্য মেধাবী শিক্ষার্থী ঘুষ না দেয়ায়, কেউ আবার সরকারী দলের সমর্থক না হওয়ায় মৌখিক পরীক্ষায় এবং মেডিকেল পরীক্ষায় টিকেও পুলিশ ভেরিফিকেশনে গিয়ে বাদ পড়েছে। বিসিএস মেধাবীদের আড্ডাখানা এতে কোনো সন্দেহ নেই, তবে মধ্যম মানের মেধাবীদের। উচ্চ মানের মেধাবীদের সেখানে কোনো দিনই স্থান ছিলো না হয়তো থাকবেও না। যখন যে দল ক্ষমতায় ছিলো তখন সে দলের লোকরাই বিসিএস ক্যাডার হয়েছে। এটা যিনি বিসিএস ক্যাডার তিনি যেমন জানেন তেমনি গ্রামের অশিক্ষিত লোকরাও জানে।

আমাদের বিসিএস ক্যাডাররা অন্যকে সম্মান দিতে শিখুক। অন্যকে গ্রহণ করতে শিখুক, অন্যকে ভালোবাসতে শিখুক, আত্ম সমালোচনা করতে শিখুক, পরমত সহিষ্ণু হোক। অন্যকে মেনে নেয়ার মতো উদার মানসিকতা তাঁদের মননে জাগ্রত হোক। দেবত্বের স্তর থেকে তাঁরা মানুষের স্তরে নেমে আসুক। আর যারা এটা পারবে না সরকারের কাছে অনুরোধ তাদের ক্যাডারশিপ কেড়ে নেয়া হোক।

 

বি:দ্র:  প্রতিক্ষণের যেকোনো লেখা অনুমতি ব্যতিত কোথাও প্রকাশ বা প্রচার করা যাবে না। এটি কপি রাইট আইনে দন্ডনীয় অপরাধ।

 

আরো সংবাদঃ

মন্তব্য করুনঃ

পাঠকের মন্তব্য



আর্কাইভ

April 2024
S S M T W T F
 12345
6789101112
13141516171819
20212223242526
27282930  
20G