WordPress database error: [Disk full (/tmp/#sql_1df056_0.MAI); waiting for someone to free some space... (errno: 28 "No space left on device")]SELECT COLUMN_NAME FROM INFORMATION_SCHEMA.COLUMNS
WHERE table_name = 'sdsaw42_hsa_plugin' AND column_name = 'hsa_options'
WordPress database error: [Duplicate column name 'hsa_options']ALTER TABLE sdsaw42_hsa_plugin ADD hsa_options VARCHAR(2000) NOT NULL DEFAULT ''
আহনাফ আইমান:
আমরা বৃহস্পতিবার মিরপুর চিড়িয়াখানায় গিয়েছিলাম। সেখানে নানা ধরণের পশুপাখি দেখতে পেলাম। এছাড়া দেখলাম একটা উল্লুক অনেক জোরে আওয়াজ করছিল। সব মানুষ দৌঁড়ে তা দেখতে চলে গেল। আমরাও অবাক হয়ে অনেক্ষণ ধরে তাকে চিৎকার করতে দেখলাম।
শুক্রবার সকাল ১০টায় আমরা সবাই গাজীপুর সাফারিপার্কে যাওয়ার জন্য বাসে উঠলাম। দুপুর ২টা ৩০মিনিটে পৌঁছে গেলাম। আমি ভাবছিলাম গাজিপুর সাফারিপার্ক কেমন হবে মিরপুর চিড়িয়াখানার মতোই? কিন্তু সেখানে গিয়ে দেখলাম চিড়িয়াখানা ও সাফারিপার্কের মধ্যে অনেক পার্থক্য।
ঢাকা চিড়িয়াখানায় দেখেছিলাম অনেক প্রাণীকে খাবার দেয়নি। তাই তারা অনেক ক্ষুধার্ত ছিল। ওদের দেখে আমার অনেক মায়া হল। এই প্রাণীগুলোকে যে খাবার না খাইয়ে রাখছে তা খুব অন্যায়। আমি পত্রিকায় পড়েছি, চিড়িয়াখানার লোকজন সবসময় বাঘের জন্য একটি গরু জবাই করে কিন্তু গরুর মাংসগুলো বাঘকে না দিয়ে তারা নিজেই খেয়ে ফেলে। তাই মিরপুর চিড়িয়াখানায় আমার তেমন একটা ভালো লাগেনি। তবে মিরপুর মিউজিয়াম অনেক সুন্দর। এখানে বিভিন্ন প্রজাতির ডিম, মাছ ও তিমির হাড় দেখেছি। এছাড়া মাছের এ্যাকুরিয়ামও ছিল। আমরা তাও দেখেছি।
গাজিপুর সাফারিপার্কে আমরা প্রথমে বাঘ, সিংহ ও হাতি দেখতে গেলাম। কিন্তু সেখানে এতো বড় লাইন যে আমরা ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম। বাঘ, সিংহ ও হাতির সাথে কি আমাদের অন্য প্রাণীও দেখা হবে না? তাই আমরা পাখি, প্রজাপতি, হাঁস, ফেন্সি কার্প গার্ডেন, সাপ ও অক্টোপাস দেখতে চলে গেলাম।
ম্যাকাও ও বিভিন্ন রঙের টিয়াপাখি দেখলাম। সেখান থেকে বেরিয়ে কার্প মাছের রাজ্যে গেলাম। কার্প মাছকে খাওয়ানোর জন্য আমাদের হাতে কিছু খাবার দেওয়া হল। আমরা কার্পকে খাবার দিলাম, সাথে বিভিন্ন ছবিও তুললাম। এবার হাঁসের রাজ্যে চলে গেলাম। সেখানে সাদা রাজহাঁস, কালো রাজহাঁস, বিদেশি ছোট হাঁস ও বিভিন্ন রঙের হাঁস দেখলাম। আমরা বোর্টে করে হাঁসের লেকে ঘুরে বেড়ালাম। বোর্ট থেকে নেমে ধনেশ, ক্যাঙ্গারু, জেব্রা, চিল, শকুন ও ময়ূর দেখলাম।
সাফারি পার্ক থেকে বেরিয়ে আঙ্কেলের বাসায় সে রাতটি থাকলাম। এর পরদিন সকালে নুহাশ পল্লীতে গেলাম। সেখানে অনেক্ষণ থাকলাম। সেখানে মা ও ছেলের একটি ভাস্কর্য দেখলাম। দেওয়ালে হুমায়ূন আহমেদের ছবিও দেখলাম। সেখানে কিছুক্ষণ থাকার জন্য একটি রুম আছে। সেখানে দুটো পানির ফুয়ারা আছে। একটিতে কঙ্কালের মাথা আর অন্যটি কুয়ার মতো দেখতে। একটু সামনের দিকে গেলে একটি মেয়ে বই পড়ছে এরকম একটি ভাস্কর্যও আছে। আমি তার কাঁধে হাত দিয়ে ছবি তুললাম। সেখানে চা খাওয়ার চেয়ার টেবিলও আছে। তার পেছনে একটি মহিলা খাবার দিচ্ছে এরকম একটি ভাস্কর্য আছে। সেখানে অনেক মহিলা বসে চা খাচ্ছে। সবাই গাড়ি পার্কিংও করছে। সেখানে হুমায়ূন আহমেদের কবরের ভেতরে একটি লোক ও তার ছেলে ঢুকে ছবি তুলছে। এছাড়া আরেকটি জায়গায় দাবার বড় বড় কাঠের তৈরি গুটি আছে। অনেকে সেই গুটিগুলো নিয়ে দুষ্টুমি করছে আর এদিক থেকে ওদিকে সরিয়ে দিচ্ছে। অনেকে আইসক্রিম খেয়ে তা মাঠের মধ্যে ফেলে রেখেছে। আমরা সবাই একটি ট্রিহাউজে উঠলাম। সেখানে ছবিও তুললাম। এই ট্রিহাউজটি হুমায়ূন আহমেদের সিনেমা নয় নম্বর বিপদ সংকেতে দেখেছি। আমরা যখন ছবি তুলছিলাম তখন অনেক মানুষ তার নিচে দাঁড়িয়ে ছিল ট্রি-হাউজে উঠার জন্য।
সেখানে মাঠে অনেক বড় বড় ছেলেরা ক্রিকেট খেলছে কোনো অনুমতি ছাড়া। সেখানে হুমায়ূন আহমেদের ওষুধী গাছের বাগানে অনেকজন খাবার খেয়ে এর বাটিগুলো ফেলে চলে গেছে ময়লা করে। একটি ক্যাকটাস গাছের পাতায় সব প্রেমিক-প্রেমিকাদের নাম লিখে রেখেছে।
আমাদের সাথে থাকা আঙ্কেলটি মাথায় কোট দিয়ে আরও সামনে গিয়ে পাতার বাঁশি বাজালো। আমরা সবাই তা শুনলাম। আমি সেখানে উপরে থাকা একটি দোলনায় দোল খেলাম। পুকুরের মাঝখানে থাকা বিশ্রামের জায়গা দেখে নয় নম্বর বিপদ সংকেতে দেখা ঢোল বাজানোর কথা মনে পড়ে গেল এবং ছবিতে পুকুরের মাঝখানের ঐ জায়গায় যাওয়ার জন্য একটা নৌকা দেওয়া হয়েছিল। আমরা এর কিছু দূরে মাঝখানে ব্রিজে হেঁটে একটি জায়গায় চেয়ারের মধ্যে বসলাম। অনেক ছবিও তুললাম। আমরা দেওয়ালের ঐ পাড়ে একটি নদী দেখলাম। নদীটিকে লবণাঙ্গ সাগরের মতো মনে হল।
আমরা সেখানে আরও দূরে ডাইনোসরের ভাস্কর্য দেখলাম ও দোলনা, স্লিপারে চড়লাম। আমরা আরও দূরে মাটির বড় বড় দুটি ঘর দেখতে পেলাম। সেখানে একটি গাছের লতাগুলো দেখতে সাপের মতো। সেখানে দুটি গরু বাঁধা ছিল। পিকনিকে যারা এসেছিল তাদের জন্য বড় বড় ডেকচিতে করে খাবারের ব্যবস্থা করছিল। আমরা আর কিছুক্ষণ থাকলে তাহলে শাওনকে দেখতে পেতাম। আমরা যখন নুহাশপল্লীতে ছিলাম তখন শাওন তার দুই বাচ্চা নিয়ে সাফারি পার্কে ছিল।
সারাদিন মিলে আমরা অনেক মজা করলাম। গাজিপুর সাফারি পার্ক ও নুহাশপল্লীর ভ্রমণ শেষ করে সেদিন রাতে ঢাকায় আবার ফিরে আসলাম।