WordPress database error: [Disk full (/tmp/#sql_1df056_0.MAI); waiting for someone to free some space... (errno: 28 "No space left on device")]SELECT COLUMN_NAME FROM INFORMATION_SCHEMA.COLUMNS
WHERE table_name = 'sdsaw42_hsa_plugin' AND column_name = 'hsa_options'
WordPress database error: [Duplicate column name 'hsa_options']ALTER TABLE sdsaw42_hsa_plugin ADD hsa_options VARCHAR(2000) NOT NULL DEFAULT ''
মুনওয়ার আলম নির্ঝর
সকাল সকাল হিমু খালি পায়ে রুপার বাসার সামনে হাজির । সে রুপাকে বলে রেখেছিল নীল শাড়ি পড়ে বারান্দায় থাকতে। সাধারণত সে এমনটা বলেও আসে না তবে আজ এসেছে কারণ সে রুপাকে নিয়ে জন্মদিনের এক দাওয়াতে যাবে। শুনেছে ওখানে শুভ্র, মিসির আলী, বাকের ভাইরাও আসবে। ভয়ের বিষয় মাজেদা খালারও আসার কথা।
যা-ই হোক এত ভাবার সময় নেই। ঐ তো রুপাকে দেখা যাচ্ছে সে তার বাসার বারান্দায় দাঁড়িয়ে আছে সত্যি সত্যি। অদ্ভুত সুন্দর লাগছে মেয়েটিকে। হিমুকে দেখেই সে নেমে আসার ইঙ্গিত দিল। হিমু রুপাদের গেটের সামনে ভয়ে ভয়ে দাঁড়িয়ে আছে কারণ রুপার বাবা দেখতে পারলে একদম রমনা থানায় পাঠিয়ে দিবেন। আর এখন রমনা থানার ওসি অতটা সুবিধের না ; কোন কিছুতেই কেন যেন অবাক হন না।
রুপা তার সাদা গাড়িতে করে বেড়িয়েছে। আর হিমু তার পাশে । রুপা চুপ করে আছে। হিমুও কিছু বলছে না ; মনে হয় কিছুই বলতে ইচ্ছে করছে না। রাস্তায় প্রচন্ড জ্যামে তারা আটকে আছে। রুপা তার কাঁধে মাথা রেখে ঘুমিয়ে পড়েছে। মেয়েটাকে অদ্ভুত সুন্দর লাগছে । যে মেয়েকে ঘুমের সময় সুন্দর লাগে সেই মেয়ে আসলেই অনেক সুন্দর। ওরা এসে এক বড় পাঁচতারা হোটেলের সামনে নামলো।
দু’জন অবাক হয়ে তাকিয়ে রইল । আর বলেই ফেলল, এতো হুবহু আমার মতো করে সেজেছে। অনেক কষ্টে এক কোণায় শুভ্র, মিসির আলী আর বাকের ভাইয়ের দেখা পাওয়া গেল। ওরা ভয়ার্ত চোখে দাঁড়িয়ে আছে। রুপা আর হিমু দু’জন তাদের দিকে এগিয়ে গেল।
শুভ্র চুপচাপ বই পড়ে যাচ্ছে। আর ওর পাশে এসে একটু পরপর কোন হিমু অথবা রুপা এসে সেলফি নামক কিছু একটা মোবাইল দিয়ে তুলছে।
এই হিমু আর রুপা তাদের কাছে যেতে পারলো না ; কারণ এর আগেই ওদের ঘিরে ধরে সেলফি নামক বস্তুটি তোলা শুরু হল। হিমু খুব চিন্তিত সবাই তো আছেন কিন্তু মাজেদা খালা কই ?
হিমু আর রুপাকে রমনা থানার ওসি বাকের ভাইদের পাশে এনে দিলেন। বাকের ভাই হিমুকে বললেন, ‘এর চেয়ে ফাঁসি অনেক ভাল। একটু পরপর তোমার আর রুপার কপিগুলো আসছে আর কিনা কি করছে মোবাইল উপরে তুলে ; আর বলে, ‘ আপনার এফবি আইডি আছে?’ এখন বল তো, এই জিনিস কই পাই ?
হিমু অসহায় এর মতো এদিক-সেদিক তাকাতে লাগলো। সবচেয়ে ভাল আছেন মিসির দা আর শুভ্র ; আপন মনে পড়েই যাচ্ছে। কোন দিকে নজর নাই তাদের । এর মধ্যেই দেখা গেল মাজেদা খালা ছুটে আসছে এদিকে। এসেই চিৎকার শুরু করে দিলেন হিমুকে উদ্দেশ্য করে।
বলতে শুরু করলেন, ” কই ছিলি ? এত দেরি করলি ক্যান? তুই ফেইসবুক চালাস না ক্যান?
হিমু আস্তে আস্তে করে বললো, ” ফেস আর বুক তো একাই চলে খালা আবার চালানো লাগে নাকি? ”
মাজেদা খালা রেগে গিয়ে বললেন, ‘এটা সেই ফেসবুক না। যাই হোক ফাজলামো করবি না একদম। তোকেও একটা ফেসবুক খুলে দিবো। আর চালানোর জন্য তোর খালুর ট্যাবটা দিয়ে দিবোনে। এবার গলার আওয়াজ খাদে নামিয়ে জিজ্ঞেস করলো,’ তোর সাথে সুন্দরী এই মেয়টা কে?’
হিমু তার গলারস্বর খালার চেয়েও নীচে নামিয়ে বললো, ‘মেয়েটাকে বিয়ে করবো ভাবছি। কেমন হয় বল তো খালা?’
সন্দেহের চোখে মাজেদা খালা মেয়েটার দিকে তাকিয়ে বলল, ‘দেখ, আবারো ফাজলামো শুরু করছিস? যাই হোক সবাই কাছে আয় একটা সেলফি তুলি।’
সবাই অবাক হল। খালা তখন সবাইকে বিষয়টা বুঝিয়ে বলল বিষয়টা আসলে কি। সবাইকে নিয়ে খালা সেলফি তুলে চেক ইন দিলো। এর মধ্যে ডাক আসলো জন্মদিনের কেক কাটা হবে।
সবাই ভেতরে গেল কিন্তু দেখা গেলো কেকের সাথে সেলফি তোলা নিয়ে হিমু এবং রুপার কপিরা হট্টগোল বাধিয়ে দিয়েছে আর এই ফাঁকে মাজেদা খালার কেকের সাথে সেলফি তুলে ফেবুতে চেক ইন দিচ্ছে। রুপা আর বাকের ভাই হট্টগোল থামাতে ব্যস্ত হয়ে পড়লেন। আর এদিকে হোটেলের বেয়ারাকে বোলে একটু নিরিবিলি জায়গা খুঁজে বের করে নিয়েছে শুভ্র আর মিসির আলী বই পয়াড়ার জন্য। এখন তারা পৃথিবীর সবচেয়ে সুখী মানুষ। আর এদিকে এই হট্টগোলের মাঝে সেখান থেকে বেরিয়ে এসেছে হিমু। কড়া রোদে ফুটপাত ধরে হাঁটছে। সে জানে এই ঝামেলা সামালানোর জন্য রুপাই যথেষ্ট। আর সাথে তো বাকের ভাই আছেন। তার এখন হারিয়ে যেতে হবে। আর হারিয়ে যাওয়াটা সবসময় আনন্দের।