বিলুপ্তির পথে ঐতিহ্যবাহী খেজুর রস

প্রকাশঃ নভেম্বর ২৩, ২০১৫ সময়ঃ ৫:৩৯ অপরাহ্ণ.. সর্বশেষ সম্পাদনাঃ ৯:১৯ পূর্বাহ্ণ

জেলা প্রতিনিধি

khejurএক সময়ে শীত মৌসুমের শুরুতেই গ্রামগঞ্জের মানুষরা গাছ ছিলানো (গাছ কাটা) নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়তেন। কে কার আগে খেজুর গাছ কেটে প্রকৃতির সেরা উপহারসমূহের মধ্যে অন্যতম খেজুর রস সংগ্রহ করতে পারে এ প্রতিযোগিতায় নেমে পড়তেন। কিন্তু আজ এই ঐতিহ্যবাহি খেজুর রস প্রায় বিলুপ্তির পথে।

উপকূলীয় দক্ষিণাঞ্চলের আমতলী-তালতলী থেকে হারিয়ে যেতে বসেছে বাংলার ঐতিহ্যবাহি সুস্বাদু খেজুর রস। এ অঞ্চলের মানুষের নবান্নের সেরা উপহার ছিল খেজুর রসে তৈরি নানা প্রকার পিঠা-পায়েশ। খেজুর রস দিয়ে অল্প সময়ে তৈরি করা হতো পাটালি গুড়, ভীড়মিঠাসহ নানা রকমের মজার মজার খাবার সামগ্রী।

সময়ের বিবর্তনে হারিয়ে যেতে বসেছে ঐতিহ্যবাহি খেজুর রস। খেজুর গাছ কাটার সাথে নিয়োজিতদের এ অঞ্চলের আঞ্চলিক ভাষায় বলা হয় শিয়ালী অথবা গাছি। সিডর ও আয়লায় এবং এক শ্রেণির ইটভাটার মালিকরা ইট পোড়ার কাজে খেজুর গাছ ব্যবহার করায় খেজুর গাছের সঙ্কট দেখা দেয়। ফলে খেজুর রস ও গুড় দুষ্প্রাপ্য হয়ে পড়ে।

গত ৭-৮ বছর ধরে প্রকৃতিক দুর্যোগসহ জলবায়ু পরিবতনের কারণে দক্ষিণাঞ্চলে খেজুর গাছের সঙ্কট দেখা দেয়ায় রস পাওয়া যাচ্ছে না। অথচ আমতলী ও তালতলী উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় হাজার হাজার খেজুর গাছ থেকে রস সংগ্রহ করতো গাছিরা।

দিনে দিনে খেজুর রস থেকে বঞ্চিত হচ্ছে গ্রামগঞ্জের মানুষ। কয়েক বছর আগেও শীত মৌসুমে খেজুর রসের তৈরি নানা প্রকার পিঠা-পায়েশসহ সুস্বাদু নবান্নের খাদ্যসামগ্রী দিয়ে উৎসাহ ও আনন্দের মধ্যে নবান্নকে বরণ করত এ অঞ্চলের মানুষরা।

এখন আর খেজুর রস না পাওয়ায় নবান্নের আনন্দ থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন তারা। দক্ষিণাঞ্চলের মানুষ শীত মৌসুমে অতিথিদের রসের তৈরি পায়েশ দিয়ে আপ্যায়ন করানোর প্রচলন এখন ভুলতে বসেছেন।

গাছ কাটার কাজে ব্যস্ত উপজেলার চন্দ্রা গ্রামের খোকন হাওলাদার জানান, গ্রামে এখন খেজুর গাছ না থাকায় পরের গাছ কেটে রস বের করতে হয়। গাছের মালিককে সপ্তাহে ৩ দিন রস দিয়ে বাকি ৩ দিন আমি নিয়ে বাজারে বিক্রি করে যে টাকা পাই তাতে পরিশ্রমের মূল্য হয় না। মৌসুমি রসের স্বাদ পেতে গাছ কাটা ছাড়তে পারিনি।

প্রতিক্ষণ/এডি/এআরকে

আরো সংবাদঃ

মন্তব্য করুনঃ

পাঠকের মন্তব্য



আর্কাইভ

October 2024
S S M T W T F
 1234
567891011
12131415161718
19202122232425
262728293031  
20G