WordPress database error: [Disk full (/tmp/#sql_1df056_0.MAI); waiting for someone to free some space... (errno: 28 "No space left on device")]
SELECT COLUMN_NAME FROM INFORMATION_SCHEMA.COLUMNS WHERE table_name = 'sdsaw42_hsa_plugin' AND column_name = 'hsa_options'


Warning: mysqli_num_fields() expects parameter 1 to be mysqli_result, bool given in /var/www/vhosts/protikhon.com/httpdocs/wp-includes/wp-db.php on line 3547

WordPress database error: [Duplicate column name 'hsa_options']
ALTER TABLE sdsaw42_hsa_plugin ADD hsa_options VARCHAR(2000) NOT NULL DEFAULT ''

মমি কাহিনী মমি কাহিনী

মমি কাহিনী

প্রকাশঃ এপ্রিল ১৬, ২০১৬ সময়ঃ ৩:২৫ অপরাহ্ণ.. সর্বশেষ সম্পাদনাঃ ৩:২৫ অপরাহ্ণ

প্রতিক্ষণ ডেস্কঃ

mummy-in-casket_shutterstock_1533285সত্যিকার অর্থে, মমি হচ্ছে প্রাচীণ মৃতদেহ। কিন্তু তারপরও মমি সবার আগ্রহের বস্তু। মমি কোনো সাধারণ কঙ্কাল বা ফসিল নয়। মমিতে হাজার হাজার বছর পরেও জীবিত থাকে কিছু নরম টিস্যু, বেশিরভাগ সময় যা হয় মমি করা মৃতদেহটির চামড়া। টিস্যু সংরক্ষণের বিষয়টি দূর্ঘটনাবশতও ঘটে থাকতে পারে, আবার এটি মানুষের আবিষ্কারও হতে পারে। তবে তখনই টিস্যু মৃতদেহে সংরক্ষিত থাকে যখন ঐ মৃতদেহে ব্যাকটেরিয়া বা ফাংগাস জন্মাতে না পারে।

আসুন দেখে নিই পৃথিবীর ইতিহাসে মমির কারণে বিখ্যাত কিছু সংস্কৃতি এবং তাদের মমি তৈরি করার কৌশল।

ঐতিহাসিকভাবে মমি করার সবচেয়ে সাধারণ পদ্ধতি হলো লাশ দ্রুত শুকিয়ে ফেলা। কারণ যেখানে পানি নেই সেখানে ব্যাকটেরিয়া এবং ফাংগাস জন্মাতে পারে না। মমি সূর্যের তাপে, আগুন, ধোঁয়া অথবা ক্যামিকেলের সাহায্যে শুকানো হতে পারে। যেহেতু বেশিরভাগ ব্যাকটেরিয়া সাব-ফ্রিজিং তাপমাত্রায় বেঁচে থাকতে পারে না, তাই স্থায়ী ফ্রিজিং পদ্ধতি দ্বারাও মমি তৈরি করা সম্ভব। একটি প্রাণিদেহ যদি অক্সিজেনমুক্ত পরিবেশে রাখা হয়, তাহলে তা থেকেও মমি তৈরি হতে পারে।

পৃথিবীর বেশিরভাগ বিখ্যাত মমিই আকস্মিকভাবে তৈরি হয়েছে। বেশিরভাগ সময় তখন, যখন একটি প্রাণিদেহের শেষ আশ্রয়স্থল অবক্ষয়ের প্রাকৃতিক প্রক্রিয়া থেকে দেহটিকে রক্ষা করেছে। কিন্তু পৃথিবীর অনেক সংস্কৃতির লোকেরা তাদের মৃতদেহগুলো বিশেষ উদ্দেশ্যে মমি করেছে। কৃত্রিমভাবে মৃতদেহ সংরক্ষণ করাকে ইংরেজিতে বলা হয় embalming। এবং এই এমবালমিং এর পদ্ধতি বিভিন্ন সংস্কৃতিতে বিভিন্ন।

mummy

মিশরীয়গণঃ মাস্টার অব মমিফিকেশন –

প্রাচীন মিশরীয়রা মমি তৈরির কারণে সবচেয়ে বেশি বিখ্যাত। যদিও প্রথম দিকে এই মমির ব্যাপারটি তাদের দক্ষতার কারণে নয়, মিশরের প্রাকৃতিক পরিবেশের কারণে ঘটেছিল। শুষ্ক, বৃষ্টিপাতহীন মরুভূমির বাতাস এবং উত্তপ্ত বালি মমি করার মতো দ্রুত সময়ে লাশ শুকিয়ে ফেলতো। বস্তুতঃ, সবেচেয়ে প্রাচীণ মিশরীয় মমিটিও এই পদ্ধতিতে তৈরি হয়েছিল বলে মনে করা হয়, যা তৈরি হয়েছিল খ্রিস্টপূর্ব ৩৫০০ বছর পূর্বে।

মিশরীয়রা সর্বপ্রথম কৃত্রিম মমি তৈরি করে খ্রিস্টপূর্ব ৩০০০ বছর পূর্বে। এমবালমিং বা কৃত্রিমভাবে মমি তৈরি করার এই চেষ্টাটি ছিল ত্রুটিপূর্ণ। কিন্তু এই মমিটি মিশরীয় সংস্কৃতির সেই উত্থানশীল বিশ্বাসের প্রতিনিধিত্ব করে যা মনে করে যে অনন্ত জীবন লাভের উদ্দেশ্যে মৃতের দেহ সংরক্ষণ করা প্রয়োজন।

শুরুর দিকে মমিফিকেশন এতটাই খরচসাধ্য ছিল যে এই সুবিধাটি কেবল ফারাও ও তার নির্বাচিত প্রিয়ভাজনরাই নিতে পারতো। বাকিদের ভাগ্যে সে সময়কার বিশাল এক গোরস্থানে সাধারণ কবরই জুটতো। কিন্তু অনন্ত জীবনের হাতছানি এতটাই মনোহর ছিল যে যেসব মিশরীয়র সামর্থ্য ছিল, খ্রিস্টপূর্ব ১৫৫০ সাল নাগাদ তাদের প্রত্যেকেরই মমি তৈরি হয়েছিল।

কৃত্রিমভাবে মমি তৈরি করা এক সময় একটি শিল্পে পরিণত হয়। নীলনদের দু ধারের কুড়েতে এর চর্চা হত। একটি মমি তৈরি করতে ৭০ দিনের মতো সময় লাগতো। এর মধ্যে প্রথম ৪০ দিন লাশ শুকানোর কাজে ব্যয় হত। মমি করার প্রক্রিয়া শুরু হত শরীরের বা দিকে একটি অপারেশনের মাধ্যমে ফুসফুস, পাকস্থলি, যকৃত, নাড়িভুড়ি প্রভৃতি বের করে আনার মধ্য দিয়ে। ব্রেন হুক নামক একটি যন্ত্রের সাহায্যে নাক দিয়ে মগজ বের করে আনা হত। কিন্তু হৃদপিন্ড শরীরেই রেখে দেওয়া হত কারণ বিশ্বাস করা হত যে, এটি সকল চিন্তার উৎস।

শরীরের সব অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ বের করে আনার পর মৃতদেহকে ওয়াইনে ভেজানো হত, যা শরীরে থাকা ব্যাকটেরিয়া ধ্বংস করতে সাহায্য করতো। এরপর মৃতদেহটিকে ন্যাট্রন নামল প্রাকৃতিক লবণের একতি ধরণ দ্বারা ঢেকে দেওয়া হত এবং প্যাক করা হত। এরপর মৃতদেহটি মমি করার টেবিলে শুকানোর জন্য রেখে দেওয়া হত। ৪০ দিন পর এই মৃতদেহ কালো হয়ে যেত এবং কুঁচকে যেত। তবে তখন তা নতুনভাবে সংরক্ষনের উপযোগী হত।

প্রাচীন মিশরীয়রা বিশ্বাস করতো একজন ব্যক্তির কা (ভাইটাল ফোর্স) এবং বা (ব্যক্তিত্ব) মৃত্যুর সময় শরীর ছেড়ে চলে যায়। তবে তারা এটাও বিশ্বাস করতো কা এবং বা আবার শরীরে ফিরে আসতে পারে যদি শরীরকে আবার একটি আদর্শ নতুন রূপ দেওয়া যায়।

মিশরীয়রা ৪র্থ থেকে ৭ম ক্রিস্টপূর্বের মধ্যে মমি তৈরি করা বন্ধ করে দেয়। কারণ এ সময়টাতে অনেক মিশরীয় খ্রিস্ট ধর্ম গ্রহণ করছিল। তবে ধারণা করা হয়, ৩০০০ বছর সময়কালে প্রায় ৭ কোটি মমি তৈরি করা হয় মিশরে।

624x468

দক্ষিণ আমেরিকান এবং ইনকা মমি –

মমি তৈরিতে মিশরীয়রা বিখ্যাত হলেও তারাই প্রথম মমি তৈরি করেনি। চিনচরস নামক একটি পরিশীলিত জেলে সম্প্রদায়, যারা বর্তমান চিলির উত্তর উপকূলে বাস করতো, তারা খ্রিস্টপূর্ব ৫০০০ হাজার বছর পূর্বে প্রথম মমি তৈরি করে।

চিনচররা প্রথমে তাদের লাশগুলোকে বিচ্ছিন্ন করে ফেলতো এবং ক্যামিকেলের সাহায্য অভ্যন্তরীন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গগুলোকে ধ্বংস হওয়ার হাত থেকে রক্ষা করতো। এরপর লাশের খন্ডগুলোকে আবার একত্রিত করতো। তারা প্রায়শই মেরুদণ্ড, পা, হাতের বাহু প্রভৃতি রক্ষায় কাঠ ব্যবহার করতো এবং তন্তু ও পালক দ্বারা মৃতদেহের অভ্যন্তর পরিপূর্ণ করতো। মমির বাইরেটা কাঁদা দিয়ে লেপা হত যার উপর তারা ছবি আঁকতো বা খোদাই করতো। সকল বয়সী নারী-পুরুষের দেহ মমি করা হত কিন্তু কিছু মানুষ অবশ্যই অন্যদের চেয়ে বেশি গুরুত্ব পেত।

আরও উত্তরে, পালোমার আরেকটি উপকূলীয় গোত্রও ৪০০০ বছর খ্রিস্টপূর্বে মমি তৈরি করেছিল।

৫০০০ বছর পর, ১১০০ থেকে ১৫০০ খ্রিস্টাব্দে ইনকা সভ্যতার সময় মৃতদেহ সংরক্ষণের আন্দিয়ান ঐতিহ্য বজায় ছিল। বেশিরভাগ ইনকা মমি ভ্রূনের পরিচিত ভঙ্গিতে সংরক্ষন করা হত এবং চামড়া ও কাপড় দ্বারা আচ্ছাদিত করে বাক্স বা সিরামিক জারে রাখা হত। এই মমিগুলো প্রায়ই খাদ্য, কাপড় এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় বস্তু সহকারে কবর দেওয়া হত। কিছু প্রত্নতাত্ত্বিক বিশ্বাস করেন, ইনকারা সবার মমিই করতো। কেবল এলিট শ্রেনীর নয়।
যখন ১৫০০-১৬০০ খ্রিস্টাব্দে স্প্যানিশরা ইনকা দখল করে তখন তারা মমিফিকেশন প্যাগান সংস্কৃতি হিসেবে চিহ্নিত করে নিষিদ্ধ করে দেয়।

সম্ভবত সবচেয়ে অনন্য ইনকা মমিগুলো পাওয়া গেছে পর্বতের সুউচ্চ শিখড়ে যেখানে ইনকারা তাদের দেবতার উদ্দেশ্যে মানুষ উৎসর্গ করতো। আন্দিজ পর্বতমালায় ১১৫টির মতো মমি পাওয়া গেছে। ১৯৯৫ সালে, ডঃ জোহান রেইনহার্ড পেরুর আন্দিজে জুয়ানিটা নামের এক কিশোরীর মমি খুঁজে পান। এই মমিটিই এখন পর্যন্ত আবিষ্কৃত সবচেয়ে ভালভাবে সংরক্ষিত ইনকা মমি।

IMG_2197

অন্যান্য কৃত্রিম মমি –

কৃত্রিমভাবে মমি তৈরি করার পদ্ধতি আসলে একটি সংস্কৃতির যন্ত্রপাতি ও কৌশল সম্পর্কে ধারনা দেয়। উদাহরণস্বরূপ, আলাস্কা উপকুলের এলিউট মানুষেরা তাদের মৃতদের শরীরের ভেতরের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ সরিয়ে নিয়ে, সেই শূন্যস্থানে ড্রাই আইস ভরে দেওয়ার মাধ্যমে মৃতদেহের মমি করতো। তারা বাষ্প ও পানি মৃতদেহের চর্বি ঝড়িয়ে ফেলতে ব্যবহার করতো এবং খোলা বাতাসে শুকাতো। এটি শুকিয়ে গেলে মমিকে পানি-নিরোধক চামড়া ও কাপড়ের অনেকগুলো আস্তরণে জড়িয়ে উষ্ণ গুহায় রাখা হত। এলিউটিয়ান গুহায় প্রত্নতাত্ত্বিকগণ ২৫০ বছর আগের ৫০টিরও বেশি মমি খুঁজে পেয়েছেন।

আবার পাপুয়া নিউগিনিতে, মমি প্রস্তুতকারকরা মৃতের দেহের ধোঁয়া নিরাময় করতো, তাদের কাদার আস্তরণে ঢেকে দিত এবং একটু উঁচু মাচায় তুলে দিত যা থেকে সারা গ্রাম দেখা যায়।

দূর্ঘটনাবশত তৈরি মমি –

কিছু অসাধারণ মমি সম্পূর্ন আকস্মিকভাবে দূর্ঘটনাবশত তৈরি হয়েছে। যেমন ১৯৯১ সালে, এক জার্মান পর্বতারোহী অস্ট্রেলিয়ান-ইতালিয়ান সীমান্তের কাছে হিমবাহের উপরে জমে থাকা অবস্থায় একটি মৃতদেহ খুঁজে পান। রেডিওকার্বন ডেটিং পরীক্ষায় জানা যায়, তীর-ধনুকধারী এবং ঘাসের ক্যাপ ও ঘাসের জুতা পরিহিত এই ব্যক্তি মারা গিয়েছিল খ্রিস্টপূর্ব ৩৩৫০ থেকে ৩৩০০ বছর পূর্বে। এই মমিটিকেই মনে করা হয় সবচেয়ে ভালোভাবে সংরক্ষিত পৃথিবীর সবচেয়ে প্রাচীণ মমি।

 

প্রতিক্ষণ/এডি/সাদিয়া

আরো সংবাদঃ

মন্তব্য করুনঃ

পাঠকের মন্তব্য



আর্কাইভ

April 2024
S S M T W T F
 12345
6789101112
13141516171819
20212223242526
27282930  
20G