দ্রব্যমূল্যে দাম কমছে, কিন্তু মধ্যবিত্ত-নিম্নবিত্তের উপকার হচ্ছে কোথায়?

প্রকাশঃ ডিসেম্বর ২৫, ২০২২ সময়ঃ ৬:২৬ অপরাহ্ণ.. সর্বশেষ সম্পাদনাঃ ৬:২৬ অপরাহ্ণ

বিশেষ প্রতিবেদন

২০২২ সাল-টা আসলে মধ্যবিত্ত আর নিম্নবিত্তের জন্য কঠিন সময় গেছে। সামনে কি অপেক্ষা করছে তা কেউ জানে না। দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির কারণে এবছরটা সবচেয়ে বেশি সমালোচিত। দ্রব্যমূল্য কমছে শুনলে মধ্যবিত্ত আর নিম্নবিত্ত আশায় ‍বুক বাঁধছে। কিন্তু যা বাহান্ন তাহাই তিপ্পান্ন, দ্রব্যমূল্য যতোট কমছে তাতে মধ্যবিত্ত আর নিম্নবিত্তের কোন লাভ কি হচ্ছে?

দ্রব্যমূল্যে দাম বছরের শেষ ভাগে এসে অবশেষে কমতে শুরু করেছে। তবে তাতে মধ্যবিত্ত আর নিম্নবিত্তের উপকার হচ্ছে এ কথা বলার উপায় কোথায়? ২০২১ সালে যে দামে দ্রব্য ক্রয় করেছে মানুষ সে দামে কি এখন সম্ভব? সেটা সম্ভব না, কারণ সব কিছুর দাম দ্বিগুণ। কিন্তু মধ্যবিত্ত-নিম্নবিত্তের আয় একটাও বাড়েনি। তাহলে এসব দুই-চার টাকা কমেছে ঘোষণা দেয়া মানেই বা-কি!

সাত দিন আগেও চাল, ডাল, ময়দা, তেল, পেঁয়াজ ও আলুসহ বেশ কয়েকটি পণ্যের দাম খানিকটা কমেছে। অবশ্য দাম কমলেও এসব পণ্য নিম্ন আয়ের মানুষের আয়ের সাথে মিলছে না, স্বস্তি দিতে পারছে না মধ্যবিত্ত আর নিম্নবিত্তের মানুষ গুলোকে।

গত সাত দিনের চাল, ডাল, তেল, আটা, ময়দা, মসুর ডাল, আলু, ছোলা, আদা, জিরা, দারুচিনি, ধনে, তেজপাতার দাম কমার তথ্য সরকারি প্রতিষ্ঠান ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) প্রতিবেদনে উঠে এসেছে। তবে দাম বেড়ে গেছে রসুনের।

টিসিবি রাজধানী ঢাকার শাহজাহানপুর, মালিবাগ বাজার, কারওয়ান বাজার, বাদামতলী বাজার, সূত্রাপুর বাজার, শ্যাম বাজার, কচুক্ষেত বাজার, মৌলভী বাজার, মহাখালী বাজার, উত্তরা আজমপুর বাজার, রহমতগঞ্জ বাজার, রামপুরা এবং মিরপুর-১ নম্বর বাজারের পণ্যের দামের তথ্য নিয়ে নতুন প্রতিবেদন তৈরি করেছে।

টিসিবির তথ্য অনুযায়ী, গেল সাত দিনে মোটা চালের দাম ১ দশমিক ৯৪ শতাংশ কমেছে। এক কেজি মোটা চাল বিক্রি হচ্ছে ৪৬-৫৫ টাকায়। এক সপ্তাহ আগে এই চালের কেজি ছিল ৪৮-৫৫ টাকা।

গরিবের মোটা চালের পাশাপাশি দাম কমেছে সরু চাল নাজির ও মিনিকেটের। সেই সঙ্গে মাঝারি মানের পাইজাম ও লতা চালের দামও কমেছে। এক সপ্তাহের ব্যবধানে মাঝারি মানের চালের দাম কমেছে ২ দশমিক ৬২ শতাংশ। এখন এক কেজি মাঝারি মানের চাল বিক্রি হচ্ছে ৫২-৬০ টাকায়, এক সপ্তাহ আগে যা ছিল ৫৫-৬০ টাকা। আর সরু চালের দাম কমেছে দশমিক ৭৩ শতাংশ। এতে এক কেজি সরু চাল বিক্রি হচ্ছে ৫৮-৭৮ টাকায়। এক সপ্তাহ আগে এই চালের দাম ছিল ৬২-৭৫ টাকা।

টিসিবি জানিয়েছে, গেল এক সপ্তাহে সব ধরনের সয়াবিন তেল ও পাম অয়েলের দাম কমেছে। লুজ সয়াবিন তেলের দাম সপ্তাহের ব্যবধানে কমেছে ৫ দশমিক শূন্য ৭ শতাংশ। এতে এক লিটার লুজ সয়াবিন তেল বিক্রি হচ্ছে ১৬৭-১৭০ টাকা, যা আগে ছিল ১৭৫-১৮০ টাকা।

পাঁচ লিটার বোতলের সয়াবিন তেল বিক্রি হচ্ছে ৮৮০-৯০৬ টাকা, যা এক সপ্তাহ আগে ছিল ৮৯০-৯২৫ টাকা। সপ্তাহের ব্যবধানে দাম কমেছে ১ দশমিক ৬০ শতাংশ। আর এক লিটার বোতলের দাম কমেছে ১ দশমিক ৩৫ শতাংশ। এতে বোতলের এক লিটার সয়াবিন তেল বিক্রি হচ্ছে ১৭৮-১৮৭ টাকা, যা আগে ছিল ১৮০-১৯০ টাকা।

অপরদিকে লুজ পাম অয়েলের লিটার বিক্রি হচ্ছে ১১৭-১২৫ টাকা। এক সপ্তাহ আগে ছিল ১১৫-১৩০ টাকা। সপ্তাহের ব্যবধানে দাম কমেছে ১ দশমিক ২২ শতাংশ। আর সুপার পাম অয়েল বিক্রি হচ্ছে ১৩৫-১২ টাকা, যা আগে ছিল ১০-১৫ টাকা। সপ্তাহের ব্যবধানে দাম কমেছে ২ দশমিক ৮১ শতাংশ।

দাম কমার তালিকায় থাকা খোলা ময়দার কেজি বিক্রি হচ্ছে ৭০-৭২ টাকা, যা আগে ছিল ৭০-৭৫ টাকা। সপ্তাহের ব্যবধানে দাম কমেছে ২ দশমিক শূন্য ৭ শতাংশ। দেশি পেঁয়াজের দাম কমেছে ২৫ শতাংশ। এতে এক কেজি দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৩০-৩৫ টাকা, যা আগে ছিল ৪৫-৫৫ টাকা। আমদানি করা পেঁয়াজের দাম কমেছে ১৭ দশমিক ৬৫ শতাংশ। এতে এক কেজি আমদানি করা পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৩০-৪০ টাকা, যা আগে ছিল ৪০-৪৫ টাকা।

টিসিবি জানিয়েছে, গত এক সপ্তাহে বড় ও মাঝারি দানার মসুর ডাল কমেছে। বড় দানার মসুর ডালের দাম কমেছে ২ দশমিক ৩৮ শতাংশ। এতে এক কেজি বড় দানার মসুর ডাল বিক্রি হচ্ছে ১০০-১০৫ টাকা, যা আগে ছিল ১০০-১১০ টাকা। আর মাঝারি দানার মসুর ডালের কেজি বিক্রি হচ্ছে ১২০-১২৫ টাকা, যা আগে ছিল ১২৫-১৩০ টাকা। সপ্তাহের ব্যবধানে দাম কমেছে ৩ দশমিক ৯২ শতাংশ।

গত এক সপ্তাহে ছোলার দাম ২ দশমিক ৮৬ শতাংশ কমেছে। এতে এক কেজি ছোলা বিক্রি হচ্ছে ৮০-৯০ টাকা, যা আগে ছিল ৮৫-৯০ টাকা। আলু বিক্রি হচ্ছে ২০-২৫ টাকা, যা আগে ছিল ২২-৩০ টাকা। সপ্তাহের ব্যবধানে দাম কমেছে ১৩ দশমিক ৪৬ শতাংশ।

সূত্র : টিসিবি

আরো সংবাদঃ

মন্তব্য করুনঃ

পাঠকের মন্তব্য



আর্কাইভ

July 2024
S S M T W T F
 12345
6789101112
13141516171819
20212223242526
2728293031  
20G