WordPress database error: [Disk full (/tmp/#sql_1df056_0.MAI); waiting for someone to free some space... (errno: 28 "No space left on device")]
SELECT COLUMN_NAME FROM INFORMATION_SCHEMA.COLUMNS WHERE table_name = 'sdsaw42_hsa_plugin' AND column_name = 'hsa_options'


Warning: mysqli_num_fields() expects parameter 1 to be mysqli_result, bool given in /var/www/vhosts/protikhon.com/httpdocs/wp-includes/wp-db.php on line 3547

WordPress database error: [Duplicate column name 'hsa_options']
ALTER TABLE sdsaw42_hsa_plugin ADD hsa_options VARCHAR(2000) NOT NULL DEFAULT ''

এক কৃষ্ণাঙ্গ রাষ্ট্রপতির ভয় এক কৃষ্ণাঙ্গ রাষ্ট্রপতির ভয়

এক কৃষ্ণাঙ্গ রাষ্ট্রপতির ভয়

প্রথম প্রকাশঃ এপ্রিল ১৫, ২০১৬ সময়ঃ ৪:১৩ অপরাহ্ণ.. সর্বশেষ সম্পাদনাঃ ১০:০৪ পূর্বাহ্ণ

প্রতিক্ষণ ডেস্কঃ

Barack-Obamaবারাক ওবামা আমেরিকার প্রথম কৃষ্ণাঙ্গ প্রেসিডেন্ট, যিনি প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী থাকাকালীন বর্ণবাদকে আমেরিকার পুরনো সমস্যা দাস ব্যবসার মতো ভয়ানক হিসেবে চিহ্নিত করেছিলেন। তবে পরবর্তীতে বিভিন্ন ঘটনায় বর্ণবাদ সম্বন্ধে তার দ্বিমুখী আচরণ ধরা পড়ে।

কৃষাঙ্গ বালক ট্রেভর মার্টিনের মৃত্য ও আসন্ন সংঘর্ষ নিয়ে করা প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার বক্তব্যে বর্ণবাদ বিষয়ে তাঁর বিড়ম্বনা সবচেয়ে ভালো ধরা পড়ে। ওবামা তাঁর রাষ্ট্রপতির দায়িত্বকে মধ্যমপন্থার সৌধ হিসেবে স্থাপন করেছেন। সত্যিকার অর্থে তিনি তাঁর বক্তব্যে রক্ষণশীলদের মতাদর্শের প্রতিই সম্মতি জ্ঞাপন করেন। তিনি নিয়মিত রোনাল্ড রিগানের উদ্ধৃতি দেন। তিনি উচ্ছ্বাসের সাথে আমেরিকান জনগণেতর জ্ঞানের প্রশংসা করেন, এবং বিশ্বাস করেন সর্বোচ্চ মিথ্যা টাউন স্কয়ারে রয়েছে। তাই তাঁর পরিবর্তন ও সমৃদ্ধির স্লোগান সত্ত্বেও ওবামা একজন রক্ষণশীল বিপ্লবী। আর তাঁর রক্ষণশীলতা সবচেয়ে বেশি ধরা পড়ে বর্ণবাদ প্রসঙ্গে, অথচ বর্ণগত দিক থেকে ওবামা ছিলেন অন্যান্য প্রেসিডেন্টের চেয়ে ভিন্ন।

বর্ণ বা রেস সম্পর্কে ওবামার রক্ষণশীলতা তাঁর বক্তব্যে ফুঁটে ওঠে। । বর্ণবাদ বিষয়টি যে আমেরিকার বর্তমানকে ও তাঁর রাষ্ট্রপতিত্বকে সমস্যায় ফেলছে, এ নিয়ে কথা বলতে তিনি অস্বীকার করেন। কিন্তু গত ফেব্রুয়ারিতে, ৯ মিলিমিটার হ্যান্ডগানের সাহায্যে জর্জ জিমারম্যান নামক ২৮ বছর বয়স্ক একজন ইন্সুরেন্স কর্মী ফ্লোরিডার স্যানফোর্ডে ট্রেভর মার্টিন নামের একজন কৃষ্ণাঙ্গ কিশোরকে হত্যা করে এই মনে করে যে, তাঁর দায়িত্ব দেশে সম্ভাব্য অনুপ্রবেশকারীদের ঠেকানো। শেষে দেখা যায়, সেই সম্ভাব্য অনুপবেশকারী একজন হুডি পড়া বালক, যার কাছে ছিল কেবল ক্যান্ডি, স্কিতল নামক খেলনা আর বরফ দেওয়া চা। আঞ্চলিক কর্তৃপক্ষ প্রহমে জিমারম্যানকে গেফতারে অস্বীকৃতি জানায়। এর কারণ হিসেবে তারা জিমারম্যানের উদ্ধৃতি দেয় যাতে জিমারম্যান দাবি করেছে, সে আত্ন-রক্ষার্থে গুলি চালিয়েছে। এরপর জাতীয় পর্যায়ে আন্দোলন ছড়িয়ে পড়ে। অভিনেতা জ্যামি ফক্স, সাবেক মিশিগান গভর্ণর জ্যানিফার গ্রেনহোম, মিয়ামি হিটের সদস্যদের মতো সেলিব্রেটিরা হুডি পরিহিত অবস্থায় ছবি তোলেন। শিকাগোর প্রতিনিধি ববি রাশ বাড়ির মেঝে জাতিগত প্রোফাইলিংকে ভৎর্সনা করার জন্য ব্যবহার করলে তাকে চেম্বার থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়।

মার্টিনের মৃত্যু নিয়ে সাংবাদিকরা হোয়াইট হাউসের বক্তব্য প্রত্যাশা করতে শুরু করেন। সে সময় আমেরিকার প্রথম কৃষ্ণাঙ্গ প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা বলেন, “আমি যখন এই ছেলেটির কথা ভাবি, আমি নিজের সন্তানদের কথা ভাবি, এবং আমি ভাবি যে আমেরিকার প্রত্যেক বাবা-মার বোঝা উচিত এই ঘটনার প্রত্যেকটি দিক অনুসন্ধান করা কেন কর্তব্য। এবং এই ঘটনা ফেডারেল, স্টেট এবং লোকাল – সবাইকে একসাথে নিয়ে আসে ঘটনাটা কীভাবে ঘটেছিল এটা খুঁজে বের করার জন্য।
তবে ট্রেভর মার্টিনের পিতা-মাতার প্রতি আমার প্রধাণ মেসেজ হচ্ছে, যদি আমার একটা ছেলে থাকতো, সে দেখতে মার্টিনের মতোই হতো। তারা যে আশা করছেন প্রত্যেক আমেরিকান ঘটনাটাকে গুরুত্বের সাথে নেবেন এবং ঘটনার মূলে যাবেন এটা সম্পূর্ণ সঠিক।”

কিন্তু প্রেসিডেন্টের এই আপাত নিরীহ বক্তব্যটি নিয়েও আমেরিকার বর্ণবাদী সমাজ জল ঘোলা করে। রিপাবলিকান রাজনীতিবিদ নিউট গিনগ্রিচ বলেন, “প্রেসিডেন্ট কি বোঝতে চাইছেন যদি একটা শ্বেতাঙ্গ ছেলে মারা যেত, যে দেখতে ওবামার মতো হতো না, তাহলে সেটা ঠিক ছিল?” ন্যাশনাল রিভিউও সমস্যাটিকে হালকা করতে চায় এই বলে যে, “তখনই সমস্যার সূত্রপাত হয় যখন একজন কৃষ্ণাঙ্গ কোন শ্বেতাঙ্গের গুলিতে মারা যায়।”

২০০৮ সালে যখন ওবামা ভার্জিনিয়া, নিউ মেক্সিকো, ওহিও, নর্থ ক্যারলিনার মতো রাজ্যগুলোতে জয়লাভ করতে শুরু করেন, তখন মনে হচ্ছিল বর্ণবাদের উপর জাতীয়তাবাদ জয়লাভ করেছে। কিন্তু বাস্তবতা আসলে ভিন্ন। বারাক ওবামা আমেরিকার সবচেয়ে সফল কৃষ্ণাঙ্গ রাজনীতিবিদ অবশ্যই, কিন্তু তিনি এ খ্যাতি অর্জন করেছেন বর্ণবাদের বিরুদ্ধে একটিও কথা না বলে।

শার্লি শেরড সারা জীবন কাজ করেছেন এমন একটি পৃথিবী তৈরি করতে যেখানে মিশ্র বর্ণের পিতা-মাতার মিশ্র বর্ণের সন্তানের প্রেসিডেন্ট হওয়াটা সসামাজিকভাবে গ্রহণযোগ্য এবং আইনত সিদ্ধ হবে। এর জন্য তিনি আত্নীয়র হত্যা, নিজের কোম্পানির ধ্বংস এবং নিজের মর্যাদার হানির মতো বিষয়গুলো সহ্য করেছেন। অথচ তাকে চাকরিচ্যুত হতে হয়েছে ওবামার আমলে। কান্নাভরাক্রান্ত স্বরে প্রশ্ন করে শেরড, আমি আমার ৪ নাতি-নাতনিকে কীভাবে ব্যাখ্যা করবো যে আমি একজন কৃষ্ণাঙ্গ প্রেসিডেন্টের সময় চাকরিচ্যুত হয়েছি?

শেরড আরেকটি গল্প শোনান। ২০০০ সালে পুলিশ প্রিন্স জোন্স নামের একজন তরুণকে গুলি করে মেরে ফেলেন। প্রিন্স জোন্স হাওয়ার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ছিল এবং তার মা ছিল একজন রেডিওলজিস্ট। পুলিশ অফিসার দাবি করেছেন, তিনি ড্রাগ ডিলার ভেবে জোন্সকে অনুসরন করেছেন। কিন্তু আদতে ড্রাগ ডিলারটি ছিল কিছুটা খাঁটো এবং জোন্স ছিল লম্বা। পুলিশ অফিসারটি আরো দাবি করেন, তিনি পুলিশ বলে সতর্ক করলে জোন্স তার গাড়িটিকে পিটানো শুরু করে। কিন্তু শেরড বলেন, তিনি জোন্সকে যতটুকু চেনেন তাতে এই দাবিগুলো ভিত্তিহীন মনে হয়।
কার্লটন জোন্স, যে অফিসারটি প্রিন্স জোন্সকে হত্যা করে এবং একটি ছোট্ট মেয়েকে পিতৃহীন করে তার বিরুদ্ধে কখনো ক্রিমিনাল চার্জ আনা হয়নি। এই ঘটনায় চোখের পাতাও কাঁপেনি আমেরিকান সমাজের। শেরড বলেন, তিনি ৯/১১ ঘটনার পর বাড়তি কোন ক্ষোভ অনুভব করেননি কারণ তিনি এমন একটি দেশে বাস করেন, যেখানে তার বন্ধু ঘর থেকে মাত্র দুই পা দূরেই হত্যার শিকার হয়।

পরবর্তীতে যখন বারাক ওবামা আমেরিকার প্রথম কৃষ্ণাঙ্গ প্রেসিডেন্ট হিসেবে নির্বাচিত হন, শেরড অবস্থা পরিবর্তনের আশা করেছিলেন বলে জানান। কিন্তু ট্রেভর মার্টিনের মৃত্যু তার আশায় জল ঢেলে দেয়। বরং জোন্সের তুলনায় মার্টিনের মৃত্যুতে সমাজের প্রতিক্রিয়া ছিল আরো ভয়াবহ। মানুষ নিজেদের হুডি, আইস টি, স্কিটল নামক খেলনার সাথে মৃত ভঙ্গিতে পোজ দিয়ে ছবি তুলে একজন কৃষ্ণাঙ্গ বালকের মৃত্যু নিয়ে তামাশা করতে শুরু করে।

বারাক ওবামার একটি চমৎকার গুণ হচ্ছে তিনি শ্বেতাঙ্গদের মধ্যে বর্ণ সচেতনতা বা রেস কনসাশনেস শান্ত করে রাখতে পারেন। যে কোন পেশাজীবি কৃষ্ণাঙ্গ এই কৌশলটির সঙ্গে সুপরিচিত। কিন্তু এই কৌশলটি ওবামা শাসনামলের আগে এত ব্যাপকহারে চর্চা করা হয়নি। এই কৌশলে কোন ধরণের অপমানেই ক্রুদ্ধ হওয়া যায় না। বরং সমঝোতা করা হয়। এ থেক বোঝা যায় আমেরিকায় কৃষ্ণাঙ্গদেরকে শ্বেতাঙ্গদের গ্রহণযোগ্যতা পেতে কি পরিমাণ আত্নসংযম চর্চা করতে হয়।

তারপরও ওবামার ঐতিহাসিক বিজয়ের পেছনের কারণটি হচ্ছে আমেরিকার কৃষ্ণাঙ্গ সমাজ এ জয়কে গর্বের সাথে ধারণ করে রাখে। কে অস্বীকার করবে কালো রাষ্ট্রপতির ক্ষমতার সম্ভাবনাকে? কে কেড়ে নেবে তার প্রেসিডেন্টের কালো চুল স্পর্শ করে এক কৃষ্ণাঙ্গ বালকের নিশ্চিত বোধ করার অধিকারের সম্ভাবনাকে?
তাই বোধহয় একজন কৃষ্ণাঙ্গ ব্যক্তির বারাক ওবামাকে ঘৃণা করার সব রকম কারণ থাকলেও তারা ওবামাকে কোনভাবেই আঘাত করতে চান না।

 

প্রতিক্ষণ/এডি/সাদিয়া

আরো সংবাদঃ

মন্তব্য করুনঃ

পাঠকের মন্তব্য

সর্বাধিক পঠিত

20G