WordPress database error: [Disk full (/tmp/#sql_1df056_0.MAI); waiting for someone to free some space... (errno: 28 "No space left on device")]
SELECT COLUMN_NAME FROM INFORMATION_SCHEMA.COLUMNS WHERE table_name = 'sdsaw42_hsa_plugin' AND column_name = 'hsa_options'


Warning: mysqli_num_fields() expects parameter 1 to be mysqli_result, bool given in /var/www/vhosts/protikhon.com/httpdocs/wp-includes/wp-db.php on line 3547

WordPress database error: [Duplicate column name 'hsa_options']
ALTER TABLE sdsaw42_hsa_plugin ADD hsa_options VARCHAR(2000) NOT NULL DEFAULT ''

বাবা হারিয়ে গেছে অজানা মানচিত্রের দেশে বাবা হারিয়ে গেছে অজানা মানচিত্রের দেশে

বাবা হারিয়ে গেছে অজানা মানচিত্রের দেশে

প্রথম প্রকাশঃ জুন ২১, ২০১৫ সময়ঃ ৮:০৬ অপরাহ্ণ.. সর্বশেষ সম্পাদনাঃ ৮:১০ অপরাহ্ণ

অনন্য আজাদ :

azad-4আমার আশেপাশের বাড়ির সবাই ভালো আছে, ইউনিভার্সিটির সবাই ভালো আছে। আমার শত্রুরা তো অনেক সুখে আছে। যারা আমার নাম শুনেনি, আমাকে দেখেনি, আমাকে স্পর্শ করেনি; সবাই ভালো আছে। আমাদের পাশের বাড়ির সেই ছেলেটি সবচেয়ে ভাল আছে; প্রতিদিন সকালবেলা তাঁর বাবার হাত ধরে স্কুলে যায়।

আর আমার সামনের বিল্ডিংয়ে আমার যে বন্ধুটা আছে; সে তো আমার চোখে – স্বর্গে বাস করছে। করবেই তো, করাই তো স্বাভাবিক। সবারই তো বাবা আছে; শুধু আমার নেই। দোষ তো আর তাদের না, যত সব কষ্ট দুঃখ বেদনা সব আমারই। আমার নামটিও রেখেছিল আমার বাবা “অনন্য”।

আসলেই নামের অর্থই প্রমাণ করে দিয়েছিল আমি এক, আমি অদ্বিতীয়, আমি এতিম এক ছেলে। তাঁরপরও আমি বলবো আমি ভালো আছি। কষ্ট হয় মাঝে মধ্যে, কিন্তু আমি আমার কষ্টকে বন্ধু বানিয়ে নিয়েছি। এখন আর তেমন সমস্যা হয় না।

সাত বছর হতে চলল, আমার ভালো লাগে না বন্ধুর বাড়িতে গিয়ে আড্ডা দিতে, ভাল লাগে না কোন ছেলেকে তাঁর বাবার হাত ধরে হেঁটে যেতে দেখলে, সহ্য হয় না কোন ছেলের মুঠোফোনে বাবা লেখাটি ভেসে উঠলে, ভাল লাগে না স্কুল কলেজ বিশ্ববিদ্যালয় এর সামনে কোন বাবাকে তাঁর সন্তানের জন্য অপেক্ষা করতে দেখলে।

আমি ঈর্ষা করি তাদের। আমার বুক ফেটে যায়, চোখ দিয়ে অশ্রু পড়বে পড়বে এমন মনে হয়। রাগ, ক্ষোভ, ঈর্ষা আমাকে তিলে তিলে মেরে ফেলেছে প্রতিনিয়ত। তবে আমি ভালো আছি, সুখে আছি এই পৃথিবীর মানুষের চোখে।

কেউ যখন আমাকে জিজ্ঞেস করে, তোমার বাবা কি করেন? তখন আমি আমার চোখে কালমেঘের পূর্বাভাস দেখতে পাই। তাঁর মানে, আজ রাতে মনের azad-5আকাশে প্রচুর বৃষ্টি হবে। কিন্তু মিথ্যা সান্ত্বনা দিয়ে এই বিষাদের বর্ষণ থামানোর ইচ্ছে তখন আর থাকে না।

আমি তখন দশম শ্রেণীতে পড়তাম। বয়স আমার হবে তের কি চোদ্দ। বাবার ভালোবাসা বুঝতে শিখেছিলাম; মমতা কি; পরিবার কি, সবই বুঝতাম ঠিকই কিন্তু তারপরও তখনও আমি ততটা ঘনিষ্ঠ হতে পারিনি আমার বাবার সাথে। ঘনিষ্ঠ হইনি আমার দুষ্টুমির কারণে, পড়াশুনা বাদ দিয়ে সারাদিন খেলাধুলার কারণে।

বাবার কাছে বকা, মার সবই খেয়েছি। দোষ আমারই ছিল। তারপরও বাবার কাছ থেকে ভালোবাসা কম পাইনি! যখন যা চেয়েছি তাই পেয়েছি। অভাব কি তা যেকোন ক্ষেত্রেই হোক না কেন; কোন সময় বুঝতে দেয়নি। খুব ভয় পেতাম বাবাকে। যতোকিছুই করতাম না কেনো বাবা আমাকে অনেক ভালবাসতেন।

আমি সন্ধ্যার আগে বাসায় না ফিরলে আমাদের বাসা রণক্ষেত্রে পরিণত হতো। বাবা আমাকে নিয়ে শুধু নয়; আমাদের বাসার সবার জন্য চিন্তা করতেন কিন্তু কোনসময়ই প্রকাশ করতেন না। কত সুন্দর সময় কাটছিল আমার।

যেই সময়টা ছিল খেলাধূলা করার, সেই সময় আমি হারিয়েছি আমার বাবাকে। এতিম হয়ে গিয়েছিলাম সারা বিশ্বের কাছে। তের কি চোদ্দ বয়সে নিজের বাবাকে সারা জীবনের জন্য হারানো সে যে কি কষ্টের তা আমার মত পরিস্থিতি যারা পার করেছে, তারাই বুঝবে। আমার মনের কোথাও এক টুকরো ভালবাসায় জড়িয়ে আছেন আমার বাবা।

azad-6কিন্তু সময় তো বড় নিষ্ঠুর। সময়ের স্রোতে হারিয়ে গিয়েছেন আমার লেখক বাবা। জিজ্ঞেস করতে ইচ্ছে করে, যেই ফুলের গন্ধে তোমার ঘুম আসতো না, সেই গাছের নিচে শুয়ে থেকেও তুমি কেন একটিবারও চোখ তুলে তাকিয়ে বলছ না, আমি আছি; আগের মতোই আছি; তুই ভাল থাকিস; তোর মাকেও ভাল রাখিস।

বাবা-ছেলের মধ্যে যেই বন্ধুত্বটি হয়; সেই সময়টুকু, সুযোগটুকু আমি পাইনি বা হয়নি। নিষ্ঠুর সময় আমাকে আমার বাবা থেকে দূরে সরিয়ে দিয়েছে। সমস্ত পৃথিবী যেন আমার বিপক্ষে; প্রতিটি মুহূর্ত আমাকে একা কাল অন্ধকার ঘরে থাকতে বাধ্য করেছে।

বাবার শারীরিক মৃত্যু হয়েছিল অনেক আগেই কিন্তু আমার মৃত্যু ঘটছে প্রতিদিন প্রতিক্ষণে। মানসিক ভাবে মৃত্যুর সাথে লড়াই করে বেঁচে আছি। হ্যাঁ, সত্যিই, আমি ভাল আছি।

“বাবা দিবসে’ আমি একবারও বাসা থেকে বের হইনি; যোগাযোগের মাধ্যম ফেসবুকে এক মিনিটের বেশি সময় কাটানোর সাহস আমার হয়নি। সhumayun-azad-julyত্যি আমার সাহস হয়নি রাস্তাঘাটে বাবা-ছেলের ভালবাসার দৃশ্য দেখার। সত্যি, আমি ভীতু। তবে আমি ভালো আছি।

সামনের বাসার বন্ধু সৌরভের মতো আজ আমি বাবার হাত ধরে ছুটে বেড়ালাম মাঠের পর মাঠ, স্পর্শ করলাম ঘাসের উপর ক্ষুদ্র শিশিরবিন্দুকে, আকাশকে যেন হাতের মুঠোয় এনে দিলো বাবা, চারিদিকে শুধু আনন্দ আর আনন্দ। ওই যে ছুটে আসছে আমার মা ও বোনেরা। আমরা সবাই যেন পৃথিবীতে গড়ে তুলছি স্বর্গ।

আমার মতো; না না, আমাদের মতো এতো সুখী কেউ কি আর আছে! বাবার এক একটি হাসি, এক একটি স্পর্শ যেন আমাদের করে তুলছে সুখময়। উফ, এত বিকট শব্দ কিসের! বজ্রপাত!

কোথায় আমি এখন; আমার বাবা কোথায়; তাহলে কি এটা ঘুম ছিল; স্বপ্ন ছিল; সুখময় স্বপ্ন ছিল। হ্যাঁ, আমি ভালো আছি। এভাবেই আমি ভালো থাকি আমার হারিয়ে যাওয়া বাবাকে স্বপ্নে দেখে। সত্যি, ভালো আছি আমি।

যখনই আমার চোখে আমার বাবার ঘুমন্ত মুখটি ভেসে উঠে, কেন জানি তখনই হঠাৎ আমার মাথায় কবিতা ভর করে। বিড় বিড় করে বলতে থাকি,

ononno-2চোখের পানি ফেলতে ফেলতে
মা গেছে যখন থেমে;
সেই সময় খবর এল
তুমি নাকি হারিয়ে গেলে বাবা;
অজানা মানচিত্রের দেশে।

পৃথিবীর সবার থেকে আমার বাবা শ্রেষ্ঠ তা আমি বলবো না; আমার ক্ষুদ্র জীবনে আমার দেখা শ্রেষ্ঠ মানুষ শ্রেষ্ঠ উপহার “আমার বাবা” তা মেনে নিয়েই সারাজীবন অতিবাহিত করে যাব। আমার বাবা ছিলেন মহাকাশের মতো বিশাল, তার দেখানো ছায়াপথে যেন আমি ছোট্ট ছোট্ট পা ফেলে হেঁটে যেতে পারি, বিশ্বকে বিকশিত করার ক্ষমতা রাখতে পারি , তাঁর মত একজন সৎ সাহসী নির্ভীক মানুষ হয়ে বেঁচে থাকতে পারি।

বাবা, আমি তোমাকে অনেক ভালবাসি। তবে সত্যি, আমি তোমাকে ছাড়া ভালোই আছি, সমাজের কাছে পৃথিবীর কাছে।

সূত্র : ইন্টারনেট

প্রতিক্ষণ / এডি / শারমিন

আরো সংবাদঃ

মন্তব্য করুনঃ

পাঠকের মন্তব্য

সর্বাধিক পঠিত

20G