WordPress database error: [Disk full (/tmp/#sql_1df056_0.MAI); waiting for someone to free some space... (errno: 28 "No space left on device")]SELECT COLUMN_NAME FROM INFORMATION_SCHEMA.COLUMNS
WHERE table_name = 'sdsaw42_hsa_plugin' AND column_name = 'hsa_options'
WordPress database error: [Duplicate column name 'hsa_options']ALTER TABLE sdsaw42_hsa_plugin ADD hsa_options VARCHAR(2000) NOT NULL DEFAULT ''
মোখলেছুর রহমান (চবি প্রতিনিধি)
মায়ের গর্ভ থেকে এসেই আমরা প্রথম যে ভাষার সাথে পরিচিত হই একবারও কি ভেবেছি কীভাবে এই ভাষা আমাদের হলো? এমনটি না ভাবাই স্বাভাবিক। কারণ, মাতৃভাষা প্রতিষ্ঠার জন্য জীবন দিতে হবে এমন ধারনা কটি সন্তানেরইবা থাকে? এ প্রজন্ম এমন প্রশ্নের উত্তর খোঁজা হাজারো প্রশংসার দাবিদার। রক্তমাখা টি-শার্ট যেমন ইতিহাস বলে, তেমনি উজ্জীবিত বিবেকই পারে সেই ইতিহাসের সঠিক অর্থ মস্তকে ধারণ করতে। দেখা যাক, রক্তমাখা ৫২ এর সেই ইতিহাস কেমন ছিল।
১৯৪৭ সালের সেপ্টেম্বর মাসে তমদ্দুন মজলিশ “পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা কী হবে? বাংলা নাকি উর্দু?” নামে একটি পুস্তিকা প্রকাশ করে যেখানে সর্বপ্রথম বাংলাকে পাকিস্তানের একটি রাষ্ট্রভাষা হিসাবে ঘোষণা করার দাবি করা হয়। উল্লেখ্য, সেই সময়ে সরকারি কাজকর্ম ছাড়াও সকল ডাকটিকেট, পোষ্টকার্ড, ট্রেন টিকেটে কেবলমাত্র উর্দু এবং ইংরেজিতে লেখা থাকতো। পশ্চিম পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠী বাংলা সংস্কৃতিকে হিন্দুয়ানী সংস্কৃতি এবং বাংলা ভাষাকে হিন্দুয়ানী ভাষা হিসাবে অভিহিত করে এবং তারা পূর্ব-পাকিস্তানের সংস্কৃতিকে “পাকিস্তানাইজ”, যেটি উর্দু এবং তাদের ভাষায় ইসলামিক করার চেষ্টা চালাতে থাকে।
পাকিস্তান সরকার ঠিক করে উর্দু ভাষাকে সমগ্র পাকিস্তানের জাতীয় ভাষা করা হবে, যদিও পূর্ব পাকিস্তানে উর্দু ভাষার প্রচলন ছিলো খুবই কম। পূর্ব পাকিস্তানের বাংলা ভাষাভাষী মানুষ এই সিদ্ধান্তকে মোটেই মেনে নিতে পারেনি। পূর্ব পাকিস্তানে বাংলাভাষার সম-মর্যাদার দাবীতে শুরু হয় আন্দোলন।
১৯৫২ সালের ২৭ জানুয়ারী ঢাকা সফররত পাকিস্তানের তৎকালীন গভর্ণর জেনারেল খাজা নাজিমুদ্দিন পল্টন ময়দানের সমাবেশে ঘোষণা করেন কেবল মাত্র উর্দুই হবে পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা। সাথে সাথে সমাবেশস্থলে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। শ্লোগান ওঠে “রাষ্ট্রভাষা বাংলা চাই”। এই বক্তব্য সমগ্র পূর্ব-পাকিস্তানে তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে। ১৯৫২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে গভর্নর খাজা নাজিমুদ্দিন জানান যে পাকিস্তান সরকারের সিদ্ধান্ত মেনে নেওয়া হবে। এই ঘোষণার ফলে আন্দোলন আরো জোরদার হয়ে ওঠে। পুলিশ ১৪৪ ধারা জারি করে মিটিং-মিছিল ইত্যাদি বে-আইনি ঘোষণা করে। ২১ ফেব্রুয়ারি, ১৯৫২ সালে এই আদেশ অমান্য করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়-এর অনেক ছাত্র ও আরো কিছু রাজনৈতিক দলের কর্মীরা মিলে একটি মিছিল শুরু করেন।
মিছিলটি ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ-এর কাছে এলে পুলিশ মিছিলের উপর গুলি চালায়। গুলিতে নিহত হন আব্দুস সালাম, রফিক, বরকত, জব্বারসহ আরো অনেকে। এই ঘটনার প্রতিবাদে সারা পূর্ব পাকিস্তানে আন্দোলন ছড়িয়ে পড়ে ও তীব্র আকার ধারণ করে। উপায়ন্তর না দেখে নুরুল আমিন তড়িঘড়ি করে আইন পরিষদে বাংলাকে পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা হিসাবে স্বীকৃতি দেয়া সংক্রান্ত একটি প্রস্তাব আনেন এবং প্রস্তাবটি সর্বসম্মতভাবে পাশ হয়। অবশেষে পাকিস্তান সরকার বাধ্য হয় বাংলা ও উর্দুভাষাকে সমমর্যাদা দিতে।
এই আন্দোলনের স্মৃতিতে পরবর্তীকালে গড়ে তোলা হয় শহীদ মিনার, ঠিক সেই জায়গাতে যেখানে প্রাণ হারিয়েছিলেন রফিক, বরকত, জব্বাররা। ২১ ফেব্রুয়ারি দিনটি বাংলাদেশে শহীদ দিবস হিসাবে পালিত হয়। ১৯৯৯ সালের ১৭ই নভেম্বর ইউনেস্কোর ৩০তম অধিবেশনের সিদ্ধান্তে ভাষার জন্য বাঙালি জাতির সাহসীকতা সারাবিশ্বে আলোচিত হয়েছে। একুশে ফেব্রুয়ারি শহীদদের আত্মত্যাগকে বিশ্বের দরবারে তুলে ধরার মাধ্যমে বাংলা ভাষা অর্জন করলো বিশ্ব মার্যাদা। আর সেই থেকে একুশে ফেব্রুয়ারি পৃথিবীর সব ভাষাভাষী লোকের কাছে একটি উল্লেখযোগ্য দিন হিসেবে স্বীকৃতি পায়।
প্রতিক্ষণ/এডি/এফটি