নীল-সবুজের জলরাশিতে!

প্রকাশঃ জুন ২৩, ২০১৫ সময়ঃ ৮:০৭ পূর্বাহ্ণ.. সর্বশেষ সম্পাদনাঃ ৮:৪৮ পূর্বাহ্ণ

নিজস্ব প্রতিবেদক:

moshajan1প্রকৃতির অপরূপ সৌন্দর্যের লীলাভুমি সিলেটের হবিগঞ্জ দেশী বিদেশী পর্যটকদের কাছে অত্যন্ত জনপ্রিয় একটি স্থান। সুনীল আকাশ, ঘাঢ় সবুজ পাহাড়, এ যেন শিল্পীর তুলিতে আঁকা কোন ছবি।

হবিগঞ্জ জেলা শহর থেকে প্রায় ৫ কি.মি. দূরত্বে মশাজান গ্রামের অবস্থান। পাকা সড়ক থেকে গ্রামের সড়কে প্রবেশের মুখে আপনাকে স্বাগত জানাবে একটি তোরণ। তারপর গাছপালার ছায়ার মধ্যে দিয়ে মিনিট পাঁচেকের পর আপনাকে থমকে দাঁড়াতে হবে। কারণ আপনার সামনে তখন নীলচে সবুজের বিশাল জলরাশি স্থানীয়ভাবে যার নাম মশাজান দিঘি! চারদিকে সুউচ্চ পাহাড়ের মাঝখানে অবস্থিত দিঘিটি সত্যিই অপূর্ব। দিঘির ঝলমল পানি, ছায়া সুনিবিড় পরিবেশ, শাপলা শালুকের উপস্থিতি আরও মনোমুগ্ধকর করে তোলে। আস্তে আস্তে যতই সামনের দিকে এগুতে থাকবেন ততই ভাল লাগবে।moshajan2

স্থির, স্বচ্ছ এই জলরাশি দেখলেই ইচ্ছে জাগবে ছুঁয়ে দেখতে।অনেকে আবার আগ্রহী হতে পারেন এই দিঘির ইতিহাস জানতে। জানা যায়, এই দিঘির বয়স নাকি প্রায় তিনশ বছর। সিপাহসালার সৈয়দ নাসির উদ্দীন (রঃ) এর ষষ্ঠ অধঃস্থন পুরুষ সৈয়দ গিয়াস প্রায় দুইশ একর জমির মাঝখানে এই দিঘিটি খনন করেন।

তিনি ছিলেন তাঁর চাচা সৈয়দ মুসার প্রিয়পাত্র। সৈয়দ মুসার নামে গ্রামের নাম রাখা হয় ‘মুছাজান’ যা বর্তমানে মশাজান নামে পরিচিত। উল্লেখ্য সৈয়দ নাসির উদ্দীন হযরত শাহজালাল (রাঃ) এর সিপাহ ছিলেন। তার সাথে আরো জানা যাবে, দিঘির অলৌকিকত্ব সম্পর্কে। কোন প্রকারের জলজ উদ্ভিদ, কচুরিপানা এবং দিঘির পাড়ের গাছপালা থেকে পতিত পাতাসমূহ এই দিঘিতে টিকতে পারে না। এমনকি গ্রামের জলাশয়ে যে প্রাণীটির অবাধ বিচরণ থাকে সেই জোঁক থেকেও দিঘিটি মুক্ত। সুপেয় পানি রোগ নিরাময়ের জন্য দূর-দূরান্ত থেকে বিশ্বাসীরা আসেন সংগ্রহ করতে।moshajan3

চারপাশের ১২০টি পরিবার এই দিঘি ব্যবহার করেন। সাধারণত দেখা যায়, গ্রামে এ ধরণের জলাশয়ের দখল বা ব্যবহার নিয়ে প্রায়ই দাঙ্গা-হাঙ্গামার সৃষ্টি হয়। কিন্তু আপনাকে জানানো হবে এ যাবৎকাল পর্যন্ত এই দিঘি নিয়ে ব্যবহারকারীদের মধ্যে কোন সমস্যা হয়নি। তাই যদি কখনো এদিকে আসা পড়ে তবে সময় সুযোগ করে দেখে নিতে পারেন প্রকৃতি এই বিশাল সৌন্দর্যকে।

যেভাবে যেতে হবে: ঢাকার সায়েদাবাদ হতে সকাল ৬টা থেকে রাত ১০টার মধ্যে কয়েকটি বাস হবিগঞ্জের উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায়। ঢাকা থেকে সড়কপথে হবিগঞ্জের দূরত্ব ১৭৯ কি: মি:। বিসমিল্লাহ ও অগ্রদূত পরিবহন হবিগঞ্জ যায়। সময় লাগে সাড়ে তিন ঘন্টা। রেলপথে দূরত্ব ২৪২ কি: মি:। রেলপথে ট্রেনে শায়েস্তাগঞ্জ নেমে এরপর বাস ধরে হবিগঞ্জ যেতে পারেন। হবিগঞ্জ শহর থেকে অটোরিক্সা কিংবা রিকশা অথবা সিএনজি করে সোজা চলে যেতে পারেন মশাজান দিঘি। কোথায় থাকবেন: সোনারতরী, হোটেল আলিফ, হোটেল গুলবাগ, হোটেল মধুমতি সহ অনেকগুলো ভাল হোটেল রয়েছে হবিগঞ্জে রাত্রি যাপন করার জন্য। এর যে কোন একটিতে অনায়েশে থেকে রাত্রিযাপন করতে পারেন।

প্রতিক্ষণ/এডি/জহির
 
 

আরো সংবাদঃ

মন্তব্য করুনঃ

পাঠকের মন্তব্য



আর্কাইভ

May 2024
S S M T W T F
 123
45678910
11121314151617
18192021222324
25262728293031
20G