WordPress database error: [Disk full (/tmp/#sql_1df056_0.MAI); waiting for someone to free some space... (errno: 28 "No space left on device")]SELECT COLUMN_NAME FROM INFORMATION_SCHEMA.COLUMNS
WHERE table_name = 'sdsaw42_hsa_plugin' AND column_name = 'hsa_options'
WordPress database error: [Duplicate column name 'hsa_options']ALTER TABLE sdsaw42_hsa_plugin ADD hsa_options VARCHAR(2000) NOT NULL DEFAULT ''
সাহিত্য ডেস্ক,প্রতিক্ষণ ডট কম
[১৯৪০]
অবাক পৃথিবী ! অবাক করলে তুমি
জন্মেই দেখি ক্ষুব্ধ স্বদেশভূমি ।
অবাক পৃথিবী ! আমরা যে পরাধীন
অবাক কি দ্রুত জমে ক্রোধ দিন দিন ;
অবাক পৃথিবী ! অবাক করলে আরো—
দেখি এই দেশে অন্ন নেইকো কারো ।
অবাক পৃথিবী ! অবাক যে বারবার
দেখি এই দেশে মৃত্যুরই কারবার ।
হিসেবের খাতা যখনই নিয়েছি হাতে
দেখেছি লিখিত— ‘রক্ত খরচ’ তাতে ;
এদেশে জন্মে পদাঘাতই শুধু পেলাম,
অবাক পৃথিবী ! সেলাম, তোমাকে সেলাম !
[১৯৪৬]
বিদ্রোহ আজ বিদ্রোহ চারিদিকে,
আমি যাই তারি দিন–পঞ্জিকা লিখে,
এত বিদ্রোহ কখনো দেখেনি কেউ,
দিকে দিকে ওঠে অবাধ্যতার ঢেউ ;
স্বপ্ন–চূড়ার থেকে নেমে এসো সব —
শুনেছ ? শুনছ উদ্দাম কলরব ?
নয়া ইতিহাস লিখছে ধর্মঘট,
রক্তে রক্তে আঁকা প্রচ্ছদ–পট ।
প্রত্যহ যারা ঘৃণিত ও পদানত,
দেখ আজ তারা সবেগে সমুদ্যত ;
তাদেরই দলের পেছনে আমিও আছি,
তাদেরই মধ্যে আমিও যে মরি–বাঁচি ।
তাইতো চলেছি দিন–পঞ্জিকা লিখে—
বিদ্রোহ আজ ! বিপ্লব চারিদিকে ॥
আগামী
জড় নই, মৃত নই, নই অন্ধকারের খনিজ,
আমি তো জীবন্ত প্রাণ, আমি এক অঙ্কুরিত বীজ;
মাটিতে লালিত, ভীরু, শুধু আজ আকাশের ডাকে
মেলেছি সন্দিগ্ধ চোখ, স্বপ্ন ঘিরে রয়েছে আমাকে।
যদিও নগণ্য আমি, তুচ্ছ বটবৃক্ষের সমাজে
তবু ক্ষুদ্র এ শরীরে গোপনে মর্মরধ্বনি বাজে,
বিদীর্ণ করেছি মাটি, দেখেছি আলোর আনাগোনা
শিকড়ে আমার তাই অরণ্যের বিশাল চেতনা।
আজ শুধু অঙ্কুরিত, জানি কাল ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র পাতা
উদ্দাম হাওয়ার তালে তাল রেখে নেড়ে যাবে মাথা:
তারপর দৃপ্ত শাখা মেলে দেব সবার সম্মুখে,
ফোটাব বিস্মিত ফুল প্রতিবেশী গাছেদের মুখে।
সংহত কঠিন ঝড়ে দৃঢ়প্রাণ প্রত্যেক শিকড়:
শাখায় শাখায় বাধা, প্রত্যাহত হবে জানি ঝড়;
অঙ্কুরিত বন্ধু যত মাথা তুলে আমারই আহ্বানে
জানি তারা মুখরিত হবে নব অরণ্যের গানে।
আগামী বসন্তে জেনো মিশে যাব বৃহতের দলে;
জয়ধ্বনি কিশলয়ে : সম্বর্ধনা জানাবে সকলে।
ক্ষুদ্র আমি তুচ্ছ নই—জানি আমি ভবী বনস্পতি,
বৃষ্টির, মাটির রসে পাই আমি তারি তো সম্মতি।
সেদিন ছায়ায় এসো : হানো যদি কঠিন কুঠারে,
তবুও তোমায় আমি হাতছানি দেব বারে বারে;
ফল দেব, ফুল দেব, দেব আমি পাখিরও কূজন
একই মাটিতে পুষ্ট তোমাদের আপনজন॥
আগ্নেয়গিরি
কখনো হঠাৎ মনে হয় :
আমি এক আগ্নেয় পাহাড় ৷
শান্তির ছায়া–নিবিড় গুহায় নিদ্রিত সিংহের মতো
চোখে আমার বহু দিনের তন্দ্রা ৷
এক বিস্ফোরণ থেকে আর এক বিস্ফোরণের মাঝখানে
আমাকে তোমরা বিদ্রূপে বিদ্ধ করেছ বারংবার
আমি পাথর : আমি তা সহ্য করেছি ৷
মুখে আমার মৃদু হাসি,
বুকে আমার পুঞ্জীভূত ফুটন্ত লাভা ৷
সিংহের মত আধ–বোজা চোখে আমি কেবলি দেখছি :
মিথ্যার ভিতে কল্পনার মশলায় গড়া তোমাদের শহর,
আমাকে ঘিরে রচিত উৎসবের নির্বোধ অমরাবতী,
বিদ্রূপের হাসি আর বিদ্বেষের আতস–বাজি—
তোমাদের নগরে মদমত্ত পূর্ণিমা ৷
দেখ, দেখ :
ছায়াঘন, অরণ্য–নিবিড় আমাকে দেখ,
দেখ আমার নিরুদ্বিগ্ন বন্যতা
তোমাদের শহর আমাকে বিদ্রূপ করুক,
কুঠারে কুঠারে আমার ধৈর্যকে করুক আহত,
কিছুতেই বিশ্বাস ক’রো না—
আমি ভিসুভিয়স–ফুজিয়ামার সহোদর ৷
তোমাদের কাছে অজ্ঞাত থাক
ভেতরে ভেতরে মোচড় দিয়ে ওঠা আমার অগ্ন্যুদ্গার,
অরণ্যে ঢাকা অন্তর্নিহিত উত্তাপের জ্বালা ৷
তোমার আকাশে ফ্যাকাশে প্রেত আলো,
বুনো পাহাড়ে মৃদু–ধোঁয়ার অবগুন্ঠন :
ও কিছু নয়, হয়তো নতুন এক মেঘদূত ৷
উৎসব কর, উৎসব কর—
ভুলে যাও পেছনে আছে এক আগ্নেয় পাহাড়,
ভিসুভিয়স–ফুজিয়ামার জাগ্রত বংশধর ৷
আর
আমার দিনপঞ্জিকায় আসন্ন হোক
বিস্ফোরণের চরম, পবিত্র তিথি ৷৷
————- ————–
প্রতিক্ষণ/এডি/সাইমুম