ড্রামসিডার ব্যবহার পদ্ধতি

প্রকাশঃ ফেব্রুয়ারি ৯, ২০১৫ সময়ঃ ১২:৫৫ অপরাহ্ণ.. সর্বশেষ সম্পাদনাঃ ১২:৫৬ অপরাহ্ণ

প্রতিক্ষণ ডটকম:

ড্রামসিডারএটি প্লাস্টিকের তৈরি ছয়টি ড্রাম বিশিষ্ট বীজ বপন যন্ত্র। ড্রামগুলো ২.৩ মিটার প্রশস্ত লোহার দন্ডে পরপর সাজানো থাকে। লোহার দন্ডের দুপ্রান্তে প্লাস্টিকের তৈরি দুটি চাকা এবং যন্ত্রটি টানার জন্য একটি হাতল যুক্ত থকে। প্রতিটি ড্রামের দৈর্ঘ্য ২৫ সেন্টিমিটার এবং ব্যাস ৫৫ সেন্টিমিটার এবং এর দু’প্রান্তে ২০ সেন্টিমিটার দূরত্বে দুসারি ছিদ্র আছে। প্রয়োজনে রাবারের তৈরি সংযুক্ত বেল্টের সাহায্যে এক সারি ছিদ্র বন্ধ রাখা যায়। ব্রি ২০০৩ সালে বাংলাদেশে ড্রামসিডার প্রবর্তন করে।

ড্রামসিডারে বীজ ভর্তি ও বপন:

ড্রামের দুই-তৃতীয়াংশ অঙ্কুরিত বীজ দ্বারা পূর্ণ করতে হবে। ড্রামে ভর্তি করার পূর্বে অঙ্কুরিত বীজ ছায়াযুক্ত স্থানে প্রায় ২ ঘণ্টা শুকিয়ে নিতে হবে। এতে ড্রামের ছিদ্র দিয়ে বীজগুলো সমহারে পড়বে। ছয়টি ড্রামে বীজ ভরে ড্রামসিডার যন্ত্রটি দিয়ে একসঙ্গে ১২ লাইনে বীজ বপন করা যায়। অঙ্কুর খুব ছোট হলে অতিরিক্ত বীজ পড়ে যাবে, আবার অঙ্কুর বেশী লম্বা হলে ড্রামের ছিদ্র দিয়ে পড়বে না।

সাধারণত অঙ্কুরের দৈর্ঘ্য ৪-৫ মিলিমিটার, অর্থাৎ একটি ধানের সমান লম্বা হলেই ভাল হয়। বোনার সময় হাতলের সাথে ২-৩ ফুট লম্বা চিকন এক খন্ড কলা গাছ হালকা মই হিসেবে বেঁধে নিলে জমিতে পায়ের দাগ বা গর্ত মুছে যাবে এবং কিছুটা বীজের অপচয়ও রোধ হবে।

অঙ্কুরিত বীজ ড্রামে ভরার সময় লক্ষ্য রাখতে হবে যেন ড্রামের এক তৃতীয়াংশ অবশ্যই খালি থাকে। ড্রামের গায়ে আঁকা ত্রিভূজাকৃতি চিহ্ন যেন সবসময় সামনের দিকে থাকে। সাধারণত একক ঘন সারিতে বীজ বপন করা উত্তম এবং এতে বিঘাপ্রতি ৩.৫-৪.০ কেজি বীজ প্রয়োজন হয়।

ড্রামসিডার ব্যবহারের সুবিধা:

১। বাংলাদেশে আবাদি জমির পরিমাণ দ্রুত হ্রাস পাচ্ছে, যা বছরে প্রায় শতকরা এক ভাগ। এ অবস্থায় সীমিত জমিতে বাড়তি ফসলের জন্য হেক্টর প্রতি ফলন বাড়াতে হবে।

২। অকৃষি ক্ষেত্রে শ্রম বিনিয়োগের সুযোগ বৃদ্ধির ফলে কৃষিকাজের জন্য শ্রমিকের ঘাটতি দেখা দিচ্ছে। এর ফলে শ্রমিক মজুরি বেড়ে যাওয়ায় সনাতন পদ্ধতির ধান চাষ ব্যয়বহুল ও অলাভজনক হয়ে পড়ছে। ড্রাম সিডার যন্ত্রের সাহায্যে কাদা মাটিতে সরাসরি অঙ্কুরিত বীজ বপন একটি শ্রম-সাশ্রয়ী প্রযুক্তি, যার মাধ্যমে ধান চাষাবাদকে লাভজনক করা যেতে পারে।

৩। অধিকন্তু এ পদ্ধতিতে প্রচলিত রোপণের তুলনায় ধানের জীবনকাল প্রায় ১০-২০ দিন কমে যায় এবং ফলন প্রায় ১০-২০% বেশি হয়।

৪। ড্রাম সিডার দিয়ে বপন কৃষকের জন্য স্বাস্থ্যসম্মত একটি পদ্ধতি। কারণ এর ফলে কৃষককে কাদা-পানির মধ্যে কোমর বাঁকা করে অনেক সময় ধরে চারা রোপণ করতে হয় না।

কৃষকের মাঠে ড্রাম সিডার দিয়ে সরাসরি বোনা পদ্ধতিতে ফলন গড়ে প্রায় ১৫% থেকে ২০% বেশি পাওয়া যায় এবং ধান ১০ থেকে ১২ দিন আগে কাটা যায়। ড্রাম সিডার পদ্ধতিতে আবাদ করলে রোপণের তুলনায় আমন মৌসুমে হেক্টর প্রতি প্রায় ৬,০০০ টাকা এবং বোরো মৌসুমে প্রায় ৮,০০০ টাকা অধিক মুনাফা অর্জন করা সম্ভব।

প্রতিক্ষণ/এডি/সিরাজ

আরো সংবাদঃ

মন্তব্য করুনঃ

পাঠকের মন্তব্য



আর্কাইভ

May 2024
S S M T W T F
 123
45678910
11121314151617
18192021222324
25262728293031
20G