WordPress database error: [Disk full (/tmp/#sql_1df056_0.MAI); waiting for someone to free some space... (errno: 28 "No space left on device")]
SELECT COLUMN_NAME FROM INFORMATION_SCHEMA.COLUMNS WHERE table_name = 'sdsaw42_hsa_plugin' AND column_name = 'hsa_options'


Warning: mysqli_num_fields() expects parameter 1 to be mysqli_result, bool given in /var/www/vhosts/protikhon.com/httpdocs/wp-includes/wp-db.php on line 3547

WordPress database error: [Duplicate column name 'hsa_options']
ALTER TABLE sdsaw42_hsa_plugin ADD hsa_options VARCHAR(2000) NOT NULL DEFAULT ''

আগন্তুক ছিলেন না আহসান হাবিব আগন্তুক ছিলেন না আহসান হাবিব

আগন্তুক ছিলেন না আহসান হাবিব

প্রথম প্রকাশঃ জুলাই ১০, ২০১৫ সময়ঃ ১১:১২ পূর্বাহ্ণ.. সর্বশেষ সম্পাদনাঃ ১১:৩৩ পূর্বাহ্ণ

মুনওয়ার আলম নির্ঝর

Untitled-1“আসমানের তারা সাক্ষী
সাক্ষী এই জমিনের ফুল, এই
নিশিরাইত বাঁশবাগান বিস্তর জোনাকি সাক্ষী
সাক্ষী এই জারুল জামরুল, সাক্ষী
পূবের পুকুর, তার ঝাকড়া ডুমুরের পালেস্থির দৃষ্টি
মাছরাঙা আমাকে চেনে
আমি কোনো অভ্যাগত নই
খোদার কসম আমি ভিনদেশী পথিক নই
আমি কোনো আগন্তুক নই”

তিনি কোন আগন্তুক ছিলেন না। তিনি ছিলেন বাংলা সাহিত্যের অন্যতম সেরাদের একজন। দীর্ঘ দিন ‘দৈনিক বাংলা’ পত্রিকার সাহিত্য সম্পাদক পদের দায়িত্ব পালন সূত্রে তিনি স্বাধীনতা-উত্তর বাংলাদেশের সাহিত্য অঙ্গনে অভিভাবকের ভূমিকা রেখেছেন। তিনি পঞ্চাশ দশকের অন্যতম প্রধান আধুনিক কবি হিসেবে পরিগণিত। বলছিলাম বাংলাদেশের খ্যাতিমান কবি ও সাহিত্যিক আহসান হাবিবের কথা।

আহসান হাবীবের জন্ম ১৯১৭ সালের ২ জানুয়ারি পিরোজপুরের শংকরপাশা গ্রামে৷ পিতার নাম হামিজুদ্দীন হাওলাদার৷ মাতা জমিলা খাতুন৷ তাঁর পাঁচ ভাই ও চার বোন৷ অর্থনৈতিক ভাবে অসচ্ছল পিতা মাতার প্রথম সন্তান তিনি৷ পারিবারিকভাবে আহসান হাবীব সাহিত্য সংস্কৃতির আবহের মধ্যে বড় হয়েছেন৷ সেই সূত্রে বাল্যকাল থেকেই লেখালেখির সঙ্গে যুক্ত হন তিনি৷ সেইসময় তাঁর বাড়িতে ছিল আধুনিক সাহিত্যের বইপত্র ও কিছু পুঁথি৷ যেমন আনোয়ারা, মনোয়ারা, মিলন মন্দির প্রভৃতি৷ এসব পড়তে পড়তে একসময় নিজেই কিছু লেখার তাগিদ অনুভব করেন৷ সাহিত্যের অনুকূল পরিবেশ নিয়ে পিরোজপুর গভর্নমেন্ট স্কুল থেকে ১৯৩৫ সালে প্রবেশিকা পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন৷

এরপর তিনি চলে আসেন বরিশালে৷ ভর্তি হন সেখানকার বিখ্যাত বিএম কলেজে৷ কিন্তু অর্থনৈতিক সংকটের কারণে কলেজের পড়াশোনার পাঠ শেষ পর্যন্ত অসমাপ্ত রাখতে হয় তাঁকে৷ বিএম কলেজে দেড় বছর পড়ার পর ১৯৩৬ সালের শেষার্ধে কাজের খোঁজে তিনি রাজধানী কলকাতায় পাড়ি জমান৷ এভাবেই কবি আহসান হাবীবের বরিশাল থেকে তত্কাকলীন রাজধানী কলকাতায় পদার্পণ৷

১২/১৩ বছর বয়সে স্কুলে পড়ার সময়ই ১৯৩৩ সালে স্কুল ম্যাগাজিনে তাঁর একটি প্রবন্ধ ধরম প্রকাশিত হয়৷ ১৯৩৪ সালে তাঁর প্রথম কবিতা মায়ের কবর পাড়ে কিশোর পিরোজপুর গভর্নমেন্ট স্কুল ম্যাগাজিনে ছাপা হয়৷ পরবর্তী সময়ে ছাত্রাবস্থায় কলকাতার কয়েকটি সাহিত্য পত্রিকায় তাঁর লেখা প্রকাশিত হলে নিজের সম্পর্কে আস্থা বেড়ে যায়৷

স্কুলে পড়াকালীন তিনি প্রবন্ধ প্রতিযোগিতার বিষয়বস্তুকে কবিতায় উপস্থাপিত করে পুরস্কৃত হয়েছিলেন৷ ততদিনে অবশ্য দেশ, মোহাম্মদী, বিচিত্রার মতো নামি দামি পত্রপত্রিকায় তাঁর বেশ কিছু লেখা প্রকাশিত হয়ে গেছে৷ কলকাতা গিয়ে শুরু হয় আহসান হাবীবের সংগ্রামমুখর জীবনের পথচলা৷

তিনি কলকাতায় এসে ১৯৩৭ সালে ‘দৈনিক তকবির’ পত্রিকার সহ-সম্পাদকের কাজে নিযুক্ত হন । বেতন মাত্র ১৭ টাকা৷ পরবর্তীতে তিনি ১৯৩৭ সাল থেকে ১৯৩৮ সাল পর্যন্ত কলকাতার ‘বুলবুল’ পত্রিকা ও ১৯৩৯ সাল থেকে ১৯৪৩ সাল পর্যন্ত ‘মাসিক সওগাত’ পত্রিকায় কাজ করেন৷ এছাড়া তিনি আকাশবাণীতে কলকাতা কেন্দ্রের স্টাফ আর্টিস্ট পদে ১৯৪৩ থেকে ১৯৪৭ সাল পর্যন্ত কাজ করেন৷

আহসান হাবীবের প্রকাশিত কাব্যগ্রন্থ ৮টি। অন্যান্য লেখাসহ সব মিলিয়ে তার গ্রন্থের সংখ্যা ২৫। এর মধ্যে রয়েছে কাব্যগ্রন্থ- ‘রাত্রি শেষ’ ১৯৪৭, ‘ছায়া হরিণ’ ১৯৬২, ‘সারা দুপুর’ ১৯৬৪, ‘আশায় বসতি’ ১৯৭৪, ‘দুই হাতে দুই আদিম পাথর’ (১৯৮১), ‘প্রেমের কবিতা’ (১৯৮২) ও ‘বিদীর্ণ দর্পণে মুখ’ (১৯৮৫), কাব্যনুবাদ: ‘খসড়া’ ১৯৮৬, উপন্যাস: ‘অরণ্য নীলিমা’ ১৯৬২, শিশুসাহিত্য: ‘জোছনা রাতের গল্প’ ‘রাণী খালের সাঁকো, ‘বৃষ্টি পড়ে টাপুর টুপুর’ (১৯৭৭), ‘ছুটির দিন দুপুরে’ (১৯৭৮), অনুবাদ: ‘প্রবাল দ্বীপে তিন বন্ধু’ ‘অভিযাত্রী কলম্বাস’ (১৯৫৯), ‘রত্নদ্বীপ’, ‘রাজা বাদশা হাজার মানুষ’, ‘এসো পথ চিনে নিই’ ‘ইন্দোনেশিয়া’ (১৯৬৬), ‘ছোটদের পাকিস্তান’ ও ‘বোকা বোকাই’, সম্পাদিত গ্রন্থ : ‘বিদেশের সেরা গল্প’ ও ‘কাব্যলোক’ (১৯৬৮)।

কবি আহসান হাবীব বরাবরই ছিলেন নির্লিপ্ত অন্তর্মুখী এক মানুষ। বাংলা কবিতায় তার অবদানের স্বীকৃতি স্বরূপ পেয়েছেন একাধিক সাহিত্য পুরস্কার। এর মধ্যে রয়েছে- বাংলা একাডেমি পুরস্কার (১৯৬১), আদমজী সাহিত্য পুরস্কার (১৯৬৪), নাসির উদ্দিন স্বর্ণপদক (১৯৭৭), একুশে পদক (১৯৭৮), বাংলাদেশ লেখিকা সংঘ পদক (১৯৮১), আবুল হাসান স্মৃতি পুরস্কার প্রভৃতি।

বাংলা সাহিত্যের মহান এই কবি ও লেখক আহসান হাবীব আমাদের ছেড়ে চলে গেছেন ১৯৮৫ সালের ১০ জুলাই। তার ৩০তম মৃত্যুবার্ষিকীতে তাকে স্মরণ করি গভীর শ্রদ্ধায় এবং ভালোবাসায়।
প্রতিক্ষণ/এডি/নির্ঝর

আরো সংবাদঃ

মন্তব্য করুনঃ

পাঠকের মন্তব্য

সর্বাধিক পঠিত

20G