মহাকবি কায়কোবাদের মহাপ্রয়ান

প্রথম প্রকাশঃ জুলাই ২১, ২০১৬ সময়ঃ ৫:০৭ অপরাহ্ণ.. সর্বশেষ সম্পাদনাঃ ৫:১৮ অপরাহ্ণ

প্রতিক্ষণ ডেস্কঃ

kobid_53577504853cc898fdb12a8.75486074_xlarge

আধুনিক বাংলা মহাকাব্য ধারার শেষ কবি কায়কোবাদ ১৮৫৭ সালে ঢাকার নবাবগঞ্জ উপজেলার আগলা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার প্রকৃত নাম মোহাম্মদ কাজেম আল কোরেশী।  ১৯৫১ সালের ২১ জুলাই ৯৪ বছর বয়সে তার মৃত্যু হয়।

কায়কোবাদ ঢাকার পগোজ স্কুল ও সেন্ট গ্রেগরি স্কুলে প্রাথমিক শিক্ষা লাভের পর ঢাকা মাদ্রাসায় এন্ট্রান্স পর্যন্ত অধ্যয়ন করেছিলেন। কিন্তু পরীক্ষার আগেই পোস্ট মাস্টারের চাকরি নিয়ে নিজ গ্রাম আগলায় চলে যান।

অতি অল্প বয়স থেকে কায়কোবাদের সাহিত্য-প্রতিভার স্ফুরণ ঘটেছিল। মাত্র ১৩ বছর বয়সে প্রথম কাব্য বিরহবিলাপ (১৮৭০) প্রকাশিত হয়। তার লেখা অন্যান্য কাব্যগ্রন্থ হচ্ছে- কুসুম কানন (১৮৭৩), অশ্রুমালা (১৮৯৫), মহাশ্মশান (১৯০৪), শিব-মন্দির (১৯২২), অমিয়ধারা (১৯২৩), শ্মশান-ভস্ম (১৯২৪) ও মহরম শরীফ (১৯৩২)। কবির মৃত্যুর বহু দিন পরে প্রেমের ফুল (১৯৭০), প্রেমের বাণী (১৯৭০), প্রেম-পারিজাত (১৯৭০), মন্দাকিনী-ধারা (১৯৭১) এবং গওছ পাকের প্রেমের কুঞ্জ (১৯৭৯) প্রকাশিত হয়। অনেক বিলম্বে বাংলা একাডেমি কায়কোবাদ রচনাবলী (চার খণ্ড, ১৯৯৪-৯৭) প্রকাশ করেছে।

কায়কোবাদ বাংলার অপর দুই মহাকবি হেমচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায় ও নবীনচন্দ্র সেনের ধারায় মহাকাব্য রচনা করেছেন। নবীনচন্দ্রই ছিলেন তার প্রধান আদর্শ। কায়কোবাদের মহাশ্মশান হচ্ছে মহাকাব্য। ১৭৬১ সালের তৃতীয় পানিপথের যুদ্ধ অবলম্বনে রচিত এ কাব্যে জয়-পরাজয় অপেক্ষা ধ্বংসের ভয়াবহতা প্রকট হওয়ায় এর নাম মহাশ্মশান।

এটি তার শ্রেষ্ঠ রচনা এবং এর দ্বারাই তিনি ‘মহাকবি’ রূপে খ্যাতি অর্জন করেছেন। তার গীতিকবিতায় প্রেম, প্রকৃতি, স্বদেশ ও আধ্যাত্মিকতা প্রকাশ পেয়েছে। কায়কোবাদের কাব্যসাধনার মূল উদ্দেশ্য ছিল পশ্চাৎপদ বাঙালি মুসলমান স¤প্রদায়কে তার অতীত ঐতিহ্য সম্পর্কে সচেতন এবং তা পুনরুদ্ধারে উদ্বুদ্ধ করা।

তিনি ছিলেন ধর্মীয় অসাম্প্রদায়িক চেতনার অধিকারী, যার প্রকাশ ঘটেছে তার বিভিন্ন রচনায়। তিনি হিন্দু-মুসলিম উভয় সম্প্রদায়ের ধর্মীয় বিষয় নিয়ে কাব্য রচনা করেছেন। ১৯৩২ সালে কলকাতায় বঙ্গীয় মুসলিম সাহিত্য সম্মেলনের মূল অধিবেশনে তিনি সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন।

বাংলা কাব্য সাহিত্যে অসাধারণ অবদানের জন্য নিখিল ভারত সাহিত্যসঙ্ঘ তাকে কাব্যভূষণ, বিদ্যাভূষণ ও সাহিত্যরত্ন (১৯২৫) উপাধিতে ভূষিত করেছিল। ১৯৫১ সালের ২১ জুলাই ৯৪ বছর বয়সে তার মৃত্যু হয় এবং আজিমপুর কবরস্থানে তিনি চিরশয্যায় শায়িত।

 

প্রতিক্ষণ/এডি/আরএম

আরো সংবাদঃ

মন্তব্য করুনঃ

পাঠকের মন্তব্য

সর্বাধিক পঠিত

20G