হাওর নিঃসঙ্গতা ভেঙ্গে ভিন্ন এক আলপনা এঁকে দেয়

প্রকাশঃ ফেব্রুয়ারি ৭, ২০১৫ সময়ঃ ২:৪৬ অপরাহ্ণ.. সর্বশেষ সম্পাদনাঃ ২:৪৬ অপরাহ্ণ

ডেস্ক রিপোর্ট, প্র্রতিক্ষণ ডটকম:

52860c236bd0f-3ভাটির দেশ হওয়ায় আমাদের দেশে হাওর-বাঁওড়ের শেষ নেই। তবে সবচেয়ে বেশি বিল-হাওর দেখা যায় বৃহত্তর সিলেট ও ময়মনসিংহ অঞ্চলে।

বর্ষা আর শুষ্ক মৌসুমে এগুলোর রূপ একেবারেই আলাদা।

দেশে আয়তনের দিক থেকে বিশাল কয়েকটি হাওরের মধ্যে অন্যতম হচ্ছে সুনামগঞ্জ জেলার তাহিরপুর উপজেলার টাঙ্গুয়ার হাওর এবং মৌলভীবাজার জেলার বড়লেখা উপজেলার হাকালুকি হাওর।

টাঙ্গুয়ার হাওর:
টাঙ্গুয়ার হাওরে যাওয়ার পথে কাছাকাছি দূরত্বে আছে শনির হাওর। একসঙ্গে দুটি হাওরই দেখা সম্ভব। টাঙ্গুয়ার হাওরে যাওয়ার জন্য সরাসরি কোনো পথ নেই। বর্ষায় নৌপথই ভরসা। আর শুষ্ক মৌসুমে তাহিরপুর বাজার পর্যন্ত মোটরবাইক। তারপর হাওর পর্যন্ত ইঞ্জিনচালিত নৌকা। পথে কয়েকটি ছোট নদীও পার হতে হয়। তাহিরপুর বাজার থেকে দুই-তিনটি খাল ও বৌলাই নদী হয়ে মূল হাওরের কাছে যেতে হয়। গোলাবাড়ী ক্যাম্পের কাছে আছে কয়েকটি ঘর নিয়ে ছোট্ট একটি বসতি।

দুই পাশের দৃশ্য মনোরম। সারিবদ্ধ হিজল, করচের গাছ এখানকার প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে একটি নতুন মাত্রা যোগ করেছে। অদূরেই মেঘালয়ের পাহাড়। আশপাশে দেখার মতো আরও আছে সোলেমানপুরে মাছের বাজার, নিকটবর্তী বাদাঘাট ইউনিয়নের একটি বড় শিমুল বাগান ও বড়দলের জাদুকাটা নদী। টাঙ্গুয়ায় থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থাসহ নৌকা ভাড়া করা যায়। অথবা তাহিরপুর বাজারেও থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা রয়েছে। প্রথমেই ঢাকা থেকে সরাসরি শ্যামলী এবং এ আর পরিবহনে সুনামগঞ্জ জেলা সদর, তারপর তাহিরপুর হয়ে মূল টাঙ্গুয়ার হাওর।

হাকালুকি হাওর:
কয়েকটি উপজেলা নিয়ে হাকালুকির অবস্থান হওয়ায় বিভিন্ন পথেই সেখানে যাওয়া যায়। তবে বড়লেখা উপজেলা হয়ে বেড়াতে গেলে পাথারিয়া পাহাড় ও সমনবাগ চা-বাগানের প্রাকৃতিক হ্রদগুলো দেখা যাবে। মৌলভীবাজারের বড়লেখা উপজেলা থেকে কানুনগো বাজার হয়ে অটোরিকশায় প্রথমেই কুলাউড়া বাজারে যাওয়া যায়। সব মিলিয়ে বড়লেখা থেকে দূরত্ব ২০ কিলোমিটারের মতো। বাজার থেকে হাঁটাপথ। কিছু দূর যেতেই চোখের সামনে ভেসে উঠবে হাকালুকির বিশাল ধু-ধু প্রান্তর।

52860c28cdc83-4বিকেলে এদিকটায় মাছ বেচাকেনা হয়। শুষ্ক মৌসুমে কম পানিতেও হাকালুকি যেন একটা বিশাল নদী।

আর বর্ষায় তো সাগর। অনেক দূরে হাওরের ভেতর নিঃসঙ্গ হিজলগাছগুলো ভিন্ন এক আলপনা এঁকে দেয়।

বিল-হাওরে ওরাই রাজা। অথই পানিতে দিব্যি কাটিয়ে দিতে পারে মাসের পর মাস। হাওরের ভেতরে আছে তুমুল স্রোতের একটা নদী।

যে গাছগুলো গোটা বর্ষাকাল পানির নিচে ডুবে থাকে, পানি সরে যেতেই সে গাছগুলো নতুন কুঁড়ি ছাড়তে শুরু করে। বিশাল এ হাওরটির উল্লেখযোগ্য অংশ পড়েছে মৌলভীবাজার জেলার বড়লেখা উপজেলায়। ছোট-বড় অনেক বিলের সমন্বয়ে এ হাওর গঠিত। বর্ষায় যে হাওর অথই জলের দরিয়া, শীতে সেই হাওরই ঢেউখেলানো সবুজ ফসলের মাঠ।

কীভাবে যাবেন
ঢাকা থেকে সরাসরি শ্যামলী এবং এস আর পরিবহনে সুনামগঞ্জ জেলা সদর, তারপর তাহিরপুর হয়ে মূল টাঙ্গুয়ার হাওর। আর ঢাকা থেকে সিলেটগামী যেকোনো আন্তনগর ট্রেনে কুলাউড়া স্টেশনে নেমে সেখান থেকে বড়লেখা উপজেলায় যাওয়া যায়। অথবা, শ্যামলী বা রূপসী বাংলা পরিবহনে সরাসরিও যাওয়া যায়। থাকার জন্য হোটেল আমিরাবাদ তুলনামূলকভাবে ভালো।

 

সূত্র: দৈনিক প্রথম আলো, প্রতিক্ষণ/এডি/আকিদ

আরো সংবাদঃ

মন্তব্য করুনঃ

পাঠকের মন্তব্য



আর্কাইভ

May 2024
S S M T W T F
 123
45678910
11121314151617
18192021222324
25262728293031
20G