WordPress database error: [Disk full (/tmp/#sql_1df056_0.MAI); waiting for someone to free some space... (errno: 28 "No space left on device")]SELECT COLUMN_NAME FROM INFORMATION_SCHEMA.COLUMNS
WHERE table_name = 'sdsaw42_hsa_plugin' AND column_name = 'hsa_options'
WordPress database error: [Duplicate column name 'hsa_options']ALTER TABLE sdsaw42_hsa_plugin ADD hsa_options VARCHAR(2000) NOT NULL DEFAULT ''
বিদেশে বাংলাদেশের অনেক প্রকৌশলী কাজ করেন, তবে চিকিৎসকেরা তুলনামূলকভাবে অনেক কম। বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্রে চিকিৎসকদের যাওয়াটা অনেক কঠিন।
কারণ, প্রকৌশলীরা যেমন মাস্টার্স বা পিএইচডিতে ভর্তি হতে পারেন, চিকিৎসকদের বাস্তবতাটা সে রকম নয়। তার পরেও ভারত বা পাকিস্তান থেকে অনেক চিকিৎসক যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমান। সেই তুলনায় বাংলাদেশের চিকিৎসকেরা অনেক কম সুযোগ পান। কারণটা মূলত তথ্যের অভাব।
বাংলাদেশের মেডিকেল ডিগ্রি যুক্তরাষ্ট্রে ‘আধা স্বীকৃত’। আধা স্বীকৃত মানে হলো, আমেরিকার এডুকেশনাল কাউন্সিল ফর ফরেন মেডিকেল গ্র্যাজেুয়েটস (ইসিএফএমজি) দ্বারা তা স্বীকৃত। কিন্তু বাংলাদেশের চিকিৎসকেরা সরাসরি যুক্তরাষ্ট্রে প্রাকটিস করতে পারেন না।
প্রাকটিস করতে হলে প্রথমে ইউনাইটেড স্টেটস মেডিকেল লাইসেন্সিং এক্সামিনেশন (ইউএসএমএলই) পরীক্ষায় পাস করতে হয়। তারপর এখানকার কোনো হাসপাতালের রেসিডেন্সি প্রোগ্রামে যুক্ত হয়ে তিন থেকে চার বছরের কাজের অভিজ্ঞতা নিতে হয়।
বাংলাদেশের যত বাঘা ডিগ্রিই থাকুক না কেন, এই দুটি ধাপ পেরুতেই হবে। এমনকি ব্রিটিশ সিস্টেমের ডিগ্রি, যেমন: এমআরসিপি, এফআরসিএস বা এ রকম যা-ই থাকুক না কেন এবং যত বছরের অভিজ্ঞতাই থাকুক না কেন, ইউএসএমএলই পাস করা ও রেসিডেন্সি করা বাধ্যতামূলক।
ইউরোপ, অস্ট্রেলিয়া বা অন্যান্য দেশের ডিগ্রি থাকলেও কোনো ছাড় নেই। যুক্তরাষ্ট্রে চিকিৎসা পেশায় নিয়োজিত হতে হলে ইউএসএমএলই পাশ করার বিকল্প নেই।
ইউএসএমএলই: ইউএসএমএলই পরীক্ষাটা চিকিৎসকদের চিকিৎসা বিষয়ের জ্ঞান ও ব্যবহারিক দক্ষতার পরীক্ষা। এর মোট পরীক্ষা চারটা। স্টেপ-১, স্টেপ-২ সিকে, স্টেপ-২ সিএস, স্টেপ-৩।
এর মধ্যে স্টেপ-২ সিকে হলো ব্যবহারিক পরীক্ষা। বাকিগুলো এমসিকিউ। স্টেপ-২ সিএস দিতে হয় আমেরিকার পাঁচটি শহরের কোনো একটায় (শিকাগো, ফিলাডেলফিয়া, হিউস্টন, আটলান্টা ও লস অ্যাঞ্জেলেস)। তবে স্টেপ-১ ও স্টেপ-২ সিকে বাংলাদেশের সবচেয়ে কাছে ভারতের কলকাতায়ও দেওয়া যায়।
ইউএসএমএলইর পরীক্ষাগুলো অত্যন্ত কঠিন। পাস নম্বর হলো ৭৫। সব মিলিয়ে ৩০০-এর মধ্যে ১৯২ পেতে হয়। কিন্তু পাস নম্বরের ধারে-কাছে পেলে, মানে কম স্কোর হলে একেবারেই লাভ নেই। এতে রেসিডেন্সি মিলবে না।
আর আরও ভয়ংকর কথা হলো, কম নম্বর পেয়ে পাস করলে টোয়েফল বা জিআরই-এর মতো রিটেইক করা যায় না। একবার পরীক্ষা পাস করলে পরের সাত বছরের মধ্যে আবার ইউএসএমএলই দেওয়া যায় না। (কাজেই কম নম্বর পেয়ে পাসের চেয়ে ফেল করাই ভালো!)।
রেসিডেন্সি: ইউএসএমএলই-এর ধাপগুলো পেরোতে পারলে হাতে মেলে ‘এমডি’ সার্টিফিকেট। স্টেপ-৩ বাদে বাকিগুলো পাস করলেও এটা দেওয়া হয়। পরের ধাপ হলো রেসিডেন্সির জন্য আবেদন করা।
যুক্তরাষ্ট্রের সব মেডিকেল প্রোগ্রাম কেন্দ্রীয়ভাবে আবেদন গ্রহণ করে। ১৫ সেপ্টেম্বরের মধ্যে আবেদন করতে হয়। রিকমেন্ডেশন লেটার লাগে চার-পাঁচটা। লিখতে হয় ‘পার্সোনাল স্টেটমেন্ট’ নামের একটা রচনা। চিকিৎসা সংক্রান্ত কোনো বিষয়ে গবেষণা ও গবেষণাপত্র লেখার অভিজ্ঞতা থাকলে তা খুব কাজে আসে।
আবেদন করার পর অপেক্ষার পালা। অক্টোবর থেকে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ইন্টারভিউ সিজন। সে সময়ে যদি ভাগ্যে শিকা ছেঁড়ে, তাহলে ইন্টারভিউয়ের ডাক মিলবে। নিজের খরচে সেখানে গিয়ে সরাসরি এক দিন ধরে ইন্টারভিউ দিতে হবে। কিন্তু এই ইন্টারভিউয়ের ডাক পাওয়া খুবই কঠিন এক ব্যাপার।
কারণ, অধিকাংশ প্রোগ্রামেই বিদেশি গ্র্যাজুয়েট খুব একটা নেয় না, নিলেও পাঁচ বছরের বেশি আগে পাস করা কাউকে নেয় না। ইন্টারভিউয়ের ডাক পান হাজারে ১০০ জনের মতো। আর তা থেকে নেওয়া হয় মাত্র ৯ বা ১০ জন।
ইন্টারভিউয়ে যদি ডাক মেলে, তার পরে ফেব্রুয়ারি-মার্চে হয় আরেক ধাপ, ম্যাচ (Match)। চিকিৎসকেরা নিজেরা যেখানে ইন্টারভিউ দিয়েছেন, তার একটা র্যাঙ্কিং করেন। কোনটা প্রথম পছন্দ, কোনটা দ্বিতীয়, এ রকম। আর প্রতিটি হাসপাতালেও এভাবে আবেদনকারীদের র্যাঙ্কিং করা হয়; কাকে প্রথম পছন্দ, এ রকম। এই দুই তালিকা মিলে একটা ম্যাচ অ্যালগারিদম (Match algorithm) চালিয়ে ম্যাচ হয় কি না দেখা হয়।
এরপর সবকিছু ঠিকভাবে শেষ হলে মেলে রেসিডেন্সি, যা ২ জুলাই থেকে শুরু হয়। তিন থেকে চার বছর দিনে ১৪ থেকে ১৬ ঘণ্টা, সপ্তাহে ছয় থেকে সাত দিন হাড়ভাঙা খাটুনি করে তারপর মেলে ‘চিকিৎসক’ হিসাবে কাজ করার অনুমতি। রেসিডেন্সির সময় অবশ্য বেতন পাওয়া যায় মাসে চার হাজার ডলারের কাছাকাছি।
পুরা ব্যাপারটায় আর্থিক সংগতি থাকা অনেক জরুরি। ইউএসএমএলই-এর কোচিং করা যায়, কিন্তু সেটার খরচ পরীক্ষাপ্রতি দুই থেকে তিন হাজার ডলার। আর পরীক্ষার ফি ৭০০ থেকে এক হাজার ৫০০ ডলার। রেসিডেন্সি অ্যাপ্লিকেশন অন্তত শ খানেক হাসপাতালে করতে হয়, যার খরচ পড়ে এক হাজার ডলারের ওপরে।
সুতরাং চিকিৎসকদের উচিত ভালো প্রস্তুতি নিয়ে পরীক্ষা দেয়া কারণ, ভালো স্কোরের সুযোগ মাত্র একবার।
প্রতিক্ষণ/এডি/তাজিন