উখিয়ায় বোরো চাষে ডিগকাটা রোগ: কৃষকরা হতাশ

প্রকাশঃ এপ্রিল ১০, ২০১৭ সময়ঃ ৯:০৯ অপরাহ্ণ.. সর্বশেষ সম্পাদনাঃ ৯:১৩ অপরাহ্ণ

কায়সার হামিদ মানিক, উখিয়া (কক্সবাজার) প্রতিনিধি:

উখিয়ায় বোরো চাষে ব্যাপক হারে ডিগকাটা রোগের লক্ষণ দেখা গেছে । কৃষকেরা মরিয়া হয়ে চাষাবাদে কীটনাশক ঔষধ স্প্রে করেও কোন সুফল পাচ্ছেনা বলে অভিযোগ উঠেছে। বিদ্যুৎ ও জ্বালানী সংকট কাটিয়ে উঠতে না উঠতে মহামারি আকারে ডিগকাটা রোগে শতশত একর বোরো চাষাবাদ আক্রান্ত হওয়ায় কৃষকেরা হতাশ হয়ে পড়েছে।

সরজমিনে সাদৃকাটা, ফলিয়া পাড়া, মাছকারিয়া, হাজির পাড়া, নলবনিয়া, হরিনমারা, দুছড়ি, টাইপালং, পূর্বডিগলিয়া পালং, ডেইলপাড়া, দরগাহবিল, গয়ালমারা এবং চাকবৈঠা এলাকায় বোরো চাষাবাদের জমি ঘুরে দেখা যায়, স্থানীয় কৃষকেরা জমিতে স্প্রে করে কীটনাশক ঔষধ দিচ্ছে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে ডেইলপাড়ার কৃষক আলী আকবর (৪৫) বলেন, ডিগকাটা রোগে ধরেছে ফসলে, কীটনাশক ঔষধ ব্যবহার করেও কোন কাজ হচ্ছেনা।

একই এলাকার কৃষক আব্দুল মজিদ (৪০) বলেন, এক ধরনের পোকা ধানের ডিগ (থোর) কেঠে ফেলছে। যার ফলে ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা মাথায় রেখে আগে-ভাগে ঔষধ ছিটানো হচ্ছে।

ডিগলিয়াপালং এলাকার মৌলভী সোহেল বলেন, ব্লস্ট আর ডিগকাটা রোগ থেকে বোরো চাষাবাদ বাঁচাতে দিনরাত কষ্ট করে যেতে হচ্ছে। কীটনাশক থেকে শুরু করে বিভিন্ন প্রকার ঔষধ রোগ-বালাই দমনে প্রয়োগ করেও কাজ হচ্ছে না।

গয়ালমারা এলাকার কৃষক মোহাম্মদ আলম (৪৫)বলেন, দেড় হাজার টাকা লাগিয়ত দিয়ে ২০ শতক জমিতে বোরো চাষাবাদ করতে এ পর্যন্ত ৫ হাজার টাকা ব্যয় হয়েছে।যেভাবে ডিগকাটা রোগে ধরেছে তাতে ফসল নিয়ে দুর্চিন্তায় আছি। তবে এ ব্যাপারে কৃষি অফিস সার্বিক সহযোগিতা করে যাচ্ছে।

বিদ্যুৎ, জ্বালানী ও পানি সমস্যা কাটিয়ে এ উপজেলার বোরো চাষাবাদে থোর পড়া উপক্রম হয়েছে। এ মূহুর্তে ব্যাপক আকারে ডিগকাটা রোগে ফসল আক্রান্ত হওয়ায় কৃষকেরা হতাশ হয়ে পড়েছে।

কৃষকরা জানান, সরকার সহজ শর্তে কৃষি ঋণ বিতরণের সংশ্লিষ্ট ব্যাংকগুলোকে নির্দেশ দিলেও কতিপয় রাজনৈতিক নেতার আত্বীয় স্বজন ছাড়া প্রকৃত কৃষকেরা কৃষি ঋণ থেকে বঞ্চিত হয়েছে। পরিবারের চাহিদা পুরনের জন্য এক তৃতীয়াংশ ভুমিহীন কৃষক চড়া সুদে ঋণ নিয়ে অথবা সহায় সম্পত্তি বন্ধকি রেখে সীমিত পরিমাণ জমিতে বোরো চাষাবাদ করেছে। এমতাবস্থায় রোগ বালাইয়ে আক্রান্ত ফসল ঘরে তোলা আদৌ সম্ভব হবে কি-না তা নিয়ে কৃষকদের মাঝে মিশ্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে।

এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোঃ শরিফুল ইসলাম মুঠোফোনে জানান, কিছু কিছু এলাকায় ব্লস্ট রোগ দেখা দিলে আমরা উঠান বৈঠকের মাধ্যমে এ ব্যাপারে কৃষকদের রোগ-বালাই দমনে বিভিন্ন ভাবে দিক নির্দেশনা দিয়েছি। পাশাপাশি ডিগকাটাসহ সকল রোগের আক্রমণ থেকে বোরো চাষাবাদকে বাঁচাতে আমরা মাঠে সার্বক্ষণিক ব্লক সুপারভাইজারদের নিয়োজিত রেখেছি।

প্রতিক্ষণ/এডি/সাই

 

আরো সংবাদঃ

মন্তব্য করুনঃ

পাঠকের মন্তব্য

20G