WordPress database error: [Disk full (/tmp/#sql_1df056_0.MAI); waiting for someone to free some space... (errno: 28 "No space left on device")]
SELECT COLUMN_NAME FROM INFORMATION_SCHEMA.COLUMNS WHERE table_name = 'sdsaw42_hsa_plugin' AND column_name = 'hsa_options'


Warning: mysqli_num_fields() expects parameter 1 to be mysqli_result, bool given in /var/www/vhosts/protikhon.com/httpdocs/wp-includes/wp-db.php on line 3547

WordPress database error: [Duplicate column name 'hsa_options']
ALTER TABLE sdsaw42_hsa_plugin ADD hsa_options VARCHAR(2000) NOT NULL DEFAULT ''

চবির চালন্দা গিরিপথ, প্রকৃতির এক অপার বিস্ময় চবির চালন্দা গিরিপথ, প্রকৃতির এক অপার বিস্ময়

চবির চালন্দা গিরিপথ, প্রকৃতির এক অপার বিস্ময়

প্রথম প্রকাশঃ মে ৩, ২০১৭ সময়ঃ ৭:২৬ অপরাহ্ণ.. সর্বশেষ সম্পাদনাঃ ১:৪৩ অপরাহ্ণ

রাকিব হাসান :

পাহাড়ের গা ঘেঁষে উড়ে যাওয়া পাখির ঝাঁক দেখে হয়তোবা বিস্ময়ে ছানাবড়া আপনার চোখ। আর সে মুহূর্তে যদি একটি মায়া হরিণকে চোখের পলকে দৌঁড়ে পালাতে দেখেন পাশের শালবনে; কিংবা সজারুর তাড়া খেয়ে দুটো বন মোরগ ঝোপের আড়ালে লুকিয়ে যায় অথবা বুনো শুয়োরের দল আপনার সামনে দিয়েই দ্বিধাহীনভাবে রাস্তা পেরিয়ে চলে যায়।তখন হয়তো আপনার অবিশ্বাস্য মনে হবে এটা কোন বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস!! অথচ এটাই চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের নিত্যদিনের দৃশ্য।

যান্ত্রিক জীবন থেকে দূরে, প্রকৃতির কোলঘেষে  সৌন্দর্য্যের  লীলাভূমি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের এমন নয়নকাড়া দৃশ্য মুগ্ধতায় ভরে দেবে আপনার মন।ক্যাম্পাসের গাছে গাছে পাখির কলকাকলি, কাঠবিড়ালির দৌঁড়ঝাঁপ আর পাহাড়ের পাদদেশে  মায়াবি হরিণের নিষ্পাপ চাহনি পেছনে ফেলে এগিয়ে যেতে যেতে যখন দুচোখে ঘোর নামবে; তখন কলাভবনের পেছনের মনমোহিনী ঝরণার ঝিরিঝিরি শব্দ আপনাকে চমকে দেবে। কিন্তু এখানেই শেষ নয়, এরপরই অপেক্ষা করছে রাজ্যের বিস্ময়। অ্যাডভেঞ্চার খ্যাত চালন্দা গিরিপথ।

ঝরণার হাতছানি পেছনে ফেলে বন-পাহাড়ের মায়াবী যাদুর টানে অাপন সৌন্দর্যসুধার স্বাদ নিতে মন্ত্রমুগ্ধের মতো আপনাকে টেনে নিয়ে যাবে এই গিরিপথ।

ঝরণার পথ মাড়িয়ে মিঠেছড়া খাল ধরে ঘণ্টা খানেক পায়ে হেঁটে এগুতে হবে। ছড়ার পানি দিয়ে হাঁটার সময় চারপাশের সবুজ প্রকৃতি আর স্বচ্ছ পানির স্রোতধারা চোখ জুড়িয়ে দেবে।

এরপর আরো কিছুদূর এগুতেই পর্বতের ঢাল বেয়ে নিচে নেমে আসা চালন্দা গিরিপথ আপনাকে স্বাগত জানাবে স্বমহিমায়। বিস্ময় ভরা এ গিরিপথ ধরে এগিয়ে যেতে যেতে মনে হবে কেউ যেন বিশাল উচ্চতার একটি পাহাড়কে মাঝ বরাবর কেটে নিয়ে রাস্তা করে দিয়েছে।

আরো পনেরো মিনিট হাঁটার পর মনে হবে গিরিপথের একবারে গভীরে প্রবেশ করেছেন। চারদিকে তাকিয়ে দেখুন কেমন আলো-আঁধারির খেলা। এবার শরীরটা কেমন যেন হীম শিতল হয়ে আসছে। নির্ভয়ে আরেকটু এগিয়ে যান।

প্রায় আধা কিলোমিটার পর্যন্ত একরকম ঝুঁকিহীনভাবে এগিয়ে যেতে থাকুন। সেসময় আশপাশ থেকে হরেক রকম পাখির কিচিরমিচির সুরেলা শব্দ আপনাকে বিমোহিত করবে। এর মাঝে হঠাৎ যদি সাপের শোঁ-শোঁ শব্দ কানে চলে আসে ঘাবড়ে যাবেন না। সতর্কতার সাথে শক্ত পাহাড়ের পাথুরে মাটি আকড়ে ধরে সামনের দিকে পা ফেলুন।

৪০ মিনিট হাঁটার পর এবার পথটি একরকম দুঃসাধ্য মনে হবে। ঝুঁকির মাত্রাটাও বেড়ে যাবে কয়েকগুণ । কেউ সামান্য একটু সচেতনতা হারালেই চরম বিপদের আশঙ্কা, নিচে পড়ে কেটে যেতে পারে পা। এ পথ জয় করতে হলে পিচ্ছিল রাস্তা ধরে সদা সতর্ক থাকতে হবে।

প্রকৃতি যেন তার রহস্যময় সৌন্দর্যকে লুকিয়ে রেখেছে চালন্দা গিরিপথের প্রতিটি ভাঁজে ভাঁজে। গভীর অরণ্য পরিবেষ্টিত সরু এই গিরিপথ ধরে এগিয়ে যেতে যেতে চোখে পড়বে নিচ দিয়ে অবিরাম বয়ে যাওয়া ঠাণ্ডা পানির স্রোতধারা। সেই পানির শীতল স্পর্শ আপনার মন অন্যরকম আনন্দে ভরিয়ে দেবে।

দুপাশে উঁচুপাহাড়ের কালো শিলা দ্বারা স্তরায়িত পথের ভয়ংকর সৌন্দর্য আপনাকে যতটা কাছে টানবে; তার চেয়ে বেশি ভয়ে শিহরিত করবে। কিন্তু প্রকৃতির রূপের যে ঢালি; তা জয় না করে ফিরতে মন চাইবে না। সুতরাং সামনে এগিয়ে যেতেই হবে।

চারদিকে সুনসান নীরবতায়; পাহাড়ের বুক চিরে চলে যাওয়া গিরিপথ যদি মনের মাঝে রহস্যময় ঘোর বা ভয়ের জন্ম দেয় পাত্তা দেবেন না। বরং নিজেকে ডিসকোভারির সেই ‘বিয়ার গ্রিলস’ মনে করে সাহস জড়ো করুন। গিরিপথে আলো-ছায়ার খেলা সচেতন চিত্তে উপভোগ করার দিকে মনোনিবেশ করুন।হাঁটতে হাঁটতে গলা শুকিয়ে গেলে পাহাড়ের বুক চিরে নেমে আসা সুপেয় পানি তো আছেই। বিশুদ্ধ এ পানিতে নিশ্চিন্তে চুমুক দিয়ে দেখুন কি পরম শান্তিতে ভরে উঠছে মন।

এই পথের শেষ কোথায়? সেটা জানতে উঁচু পাহাড়ের ভেতরে ঝরণার পানির উপর দিয়ে হাঁটতে হবে আরো কয়েক ঘন্টা। কিছু পথ আলো, আর কিছু পথ অন্ধকার। হাঁটতে গিয়ে দেখবেন এই চালন্দা গিরি পথটি ঠেকেছে প্রায় সীতাকুন্ড পর্যন্ত। এভাবে ৪/৫ ঘন্টা হাঁটার পর অবশেষে বেরিয়ে আসতে পারবেন এই দূর্গম গিরিপথ থেকে। গিরিপথ শেষ করে সমতলে ফিরে আসার পর মনে হবে যেন রাজ্যের ক্লান্তি এসে ভর করেছে আপনার সমস্ত শরীর জুড়ে। তাতে কী ?

দূর্গম এই পথ জয় করে ফিরে আসার যে আনন্দ তা ‘আমাজন’ জয় করে ফিরে আসার চেয়ে কোন অংশেই কম নয়।  আপনি যদি আ্যাডভেঞ্চারপ্রিয় হন; যদি ভয় জাগানিয়া শিহরণ পেতে চান, রোমাঞ্চের সাক্ষী হতে চান তাহলে অন্তত একবার ঘুরে আসুন চবি ক্যাম্পাসের এই চালন্দা গিরিপথে।

উল্লেখ্য, পাহাড়ের প্রাণজুড়ানো রূপ আর ঘন জঙ্গলের আড়ালে বহুদিন ঢাকা পড়েছিলে এ গিরিপথ। রহস্যপ্রেমী কিছু উদ্যমী তরুণের অভিযাত্রার মাধ্যমে ২০১১ সালে প্রকাশ পায় এই গিরিপথের সৌন্দর্য।

সতর্কতা: যারা চালন্দা ভ্রমণে যেতে চান, তাদের অবশ্যই কিছু পূর্ব প্রস্তুতি নিতে হবে। প্রথমত, কিছু শুকনা খাবার যেমনঃ পানি, মুড়ি, কলা, বিস্কিট ইত্যাদি নিতে ভুলবেন না, কারণ পথটা বেশ দূর । এছাড়া পথটা যেহেতু বিপদজনক,তাই কিছু ঔষধ সাথে রাখা খুবই জরুরী।কারণ যে কোন সময় পা কেটে যেতে পারে ।

আর সাপের হাত থেকে আত্মরক্ষার জন্য  সঙ্গে লাঠি রাখা খুবই জরুরী। এই পথে গ্রুপ করে যাওয়াই ভালো এবং পথ চেনে এমন কাউকে সঙ্গে রাখা উচিত। নিরাপত্তার স্বার্থে বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাডভেঞ্চারপ্রিয় শিক্ষার্থীদের সাথেও দলবেঁধে এই গিরিপথের সৌন্দর্য উপভোগ করতে যেতে পারেন।

প্রতিক্ষণ/এডি/রন

আরো সংবাদঃ

মন্তব্য করুনঃ

পাঠকের মন্তব্য

সর্বাধিক পঠিত

20G