চর্চার কোন বিকল্প নেই: ফেরদৌস ওয়াহিদ
বিনোদন প্রতিবেদক, প্রতিক্ষণ ডটকম:
ফেরদৌস ওয়াহিদ বাংলাগানের এক উজ্জ্বল নক্ষত্র। এখনো গানের সঙ্গে আছেন। কণ্ঠ দিচ্ছেন নতুন নতুন গানে। একটি চলচ্চিত্র নির্মাণ করেছিলেন।
আরো নতুন দুটি চলচ্চিত্র নির্মাণে নামতে যাচ্ছেন তিনি। সকল বিষয় মিলিয়ে সাক্ষাতকারে আজকের অতিথি তিনি।
**: আপনার বর্তমান ব্যস্ততা নিয়ে বলুন…
ফেরদৌস ওয়াহিদ: আমার যত ব্যস্ততা ছিল সবই দেশের বর্তমান পরিস্থিতির জন্য থেমে আছে। দেশের পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে আমি আমার হাতে জমে থাকা কাজ গুলো আবার শুরু করবো।
**: কি কি কাজ জমে আছে?
ফেরদৌস ওয়াহিদ: আমার পরিচালনায় দুইটি সিনেমার কাজের কিছু অংশ এগিয়েছিল। প্রাথমিক ভাবে সেই দুইটি সিনেমার নাম ঠিক করা হয়েছে ‘দুর্ধর্ষ অভিযান’ এবং ‘ইছামতি’। দেশের পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে আবার কাজ শুরু করবো।
**: আপনার পরিচালনায় মুক্তি পাওয়া ‘কুসুমপুরের গল্প’ সিনেমাটি থেকে কেমন সাড়া পেয়েছিলেন?
ফেরদৌস ওয়াহিদ: মোটামুটি সাড়া পেয়েছিলাম। আসলে এই সিনেমার মাধ্যমে আমার শুরুটা হয়েছে। সুতরাং অভিজ্ঞতা ছিলনা তেমন। সামনে যে দুইটি সিনেমার কাজ শুরু করেছি সেই দুইটি সিনেমায় সকল ভুল ভ্রান্তি কাটিয়ে উঠে ভালো কিছু উপহার দিতে পারবো বলে বিশ্বাস করছি।
**: আপনার প্রথম সিনেমায় নায়ক-নায়িকা নতুন ছিল। নতুন সিনেমায় নায়ক-নায়িকা হিসেবে কাদের দেখা যেতে পারে?
ফেরদৌস ওয়াহিদ: নতুন সিনেমাতেও আমি নতুনদের উপর আস্থা রাখবো। আমি সবসময় নতুনদের নিয়ে কাজ করতে আগ্রহী। নতুনদেরই নতুন কিছু দেওয়ার ক্ষমতা বেশি থাকে বলে মনে করি আমি।
**:নতুন সিনেমাগুলোর গান কে কে করছে?
ফেরদৌস ওয়াহিদ: গান আমি আর হাবিব মিলেই করছি। গানের কাজগুলো চলছে। খুব শিগগিরি গানগুলো আমার নিজস্ব প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান থেকে প্রকাশ করা হবে।
**: তবে কি এখন এই সিনেমার গানগুলো নিয়েই আপনি ব্যস্ত?
ফেরদৌস ওয়াহিদ: সিনেমার গানের পাশাপাশি নিজের একটি একক অ্যালবামের কাজ চলছে। অ্যালবামে ৬টি গান থাকবে। এটিও আমার প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান থেকে প্রকাশ করা হবে। এছাড়া বিশ্বকাপ ক্রিকেট নিয়ে ইলিয়াসের সুরে একটি গান করলাম। গানটি এখন বিভিন্ন টেলিভিশনে প্রচারিত হচ্ছে। পাশাপাশি স্টেজ শো তো চলছেই।
**: আপনার এবং হাবিব ওয়াহিদের গান নিয়ে একটি অ্যালবাম প্রকাশ হয়েছিল অনেক আগে। মানুষ অনেক ভালোভাবে গ্রহণ করেছিল অ্যালবামের গানগুলো। সামনে কি এমন কোন অ্যালবাম প্রকাশের ইচ্ছে আছে?
ফেরদৌস ওয়াহিদ: আপাতত কোন ইচ্ছে নেই। তবে কাজ যেহেতু ঘরের ভেতরই চলে সেহেতু হঠাৎ করে যেকোন সময়ই এমন অ্যালবাম হয়ে যেতে পারে।
**: নিজের ছেলের সুরে গাইতে পারার অনুভূতি কেমন?
ফেরদৌস ওয়াহিদ: এটা অবশ্যই অনেক ভালো একটা অনুভূতি। প্রতিটি বাবাই তার সন্তানকে একটি সফল জায়গায় দেখতে চায়। হাবিব মিউজিকে সফল হয়েছে বলেই আজ তার সুরে আমি গাইতে পারছি। বিষয়টি আমার জন্য অনেক গর্বের।
**:আপনাদের সময়ের সংগীতের পরিবেশ আর এখনকার সংগীতের পরিবেশের মধ্যে কি কি পার্থক্য আপনার চোখে পড়ে?
ফেরদৌস ওয়াহিদ: পার্থক্য তো কিছুটা হবেই। আসল পার্থক্য হল তখন টেকনোলোজির সহায়তা আমরা পাইনি বললেই চলে। কিন্তু এখনকার ছেলেমেয়েরা সেটা পাচ্ছে। বিষয়টি ইতিবাচক। এখন অনেক সিনিয়র শিল্পীকে বলতে শোনা যায় এখনকার গান ভালো হচ্ছে না। গানগুলোর স্থায়িত্ব কম। আমি তাদের সঙ্গে মোটেও একমত নই। এখনকার গান টিকবে কি টিকবে না তা বোঝা যাবে আরও ১০ থেকে ১৫ বছর পর।
**: এখন যারা গান করছে তাদের মধ্যে কাদের গান আপনার কাছে ভালো লাগে?
ফেরদৌস ওয়াহিদ: অনেকের গানই আমার ভালো লাগে। যেমন ন্যান্সি, কনা, আরফিন রুমি, হৃদয় খান, ইমরান, ইলিয়াস সহ অনেকের গানই আমার কাছে ভালো লাগে। আর হাবিবের কাজ যে ভালো লাগে তা তো আর বলার অপেক্ষা রাখে না। হা হা হা…
**: আপনার নাতি সম্পর্কে কিছু বলুন।
ফেরদৌস ওয়াহিদ: আমার নাতির বয়স দুই বছর হল। এখন ওর সঙ্গে খেলা করেই আমার সময় কাটে।
**:নতুন শিল্পীদের উদ্দেশ্যে যদি আপনার কোন পরামর্শ থাকে…
ফেরদৌস ওয়াহিদ: কেউ যদি নিয়মিত চর্চা না করে তবে তার পক্ষে দীর্ঘদিন টিকে থাকা সম্ভব নয়। এমন অনেক শিল্পী দেখা গেছে যে একটি দুইটি শ্রোতাপ্রিয় গান উপহার দিয়েই হারিয়ে গেছে। এর কারণ তাদের মধ্যে চর্চা ছিল না। সুতরাং পরামর্শ একটাই, চর্চার কোন বিকল্প নেই।
**: এতক্ষণ আমাদের সময় দেওয়ার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।
ফেরদৌস ওয়াহিদ: আপনাকে ধন্যবাদ ও শুভেচ্ছা রইলো।
প্রতিক্ষণ/এডি/আকিদ, সূত্র: বাংলামেইল২৪ ডটকম