WordPress database error: [Disk full (/tmp/#sql_1df056_0.MAI); waiting for someone to free some space... (errno: 28 "No space left on device")]SELECT COLUMN_NAME FROM INFORMATION_SCHEMA.COLUMNS
WHERE table_name = 'sdsaw42_hsa_plugin' AND column_name = 'hsa_options'
WordPress database error: [Duplicate column name 'hsa_options']ALTER TABLE sdsaw42_hsa_plugin ADD hsa_options VARCHAR(2000) NOT NULL DEFAULT ''
মাথায় বড় হেলমেট, কোমরে রশি, হাতে তুলি নিয়ে শরীরের ঘাম ঝরিয়ে কাজ করে চলেছে দিনের পর দিন। একটি বারও পিছন ফিরে তাকায়নি।
যে অবস্থায় থাকুক না কেন তার চোখের সামনে শুধু একটি চেহারাই ভেসে ওঠে, বাবা তুমি কবে আসবে! বাবা এবার সোনামনি কে কথা দিয়েছে খুব তাড়াতাড়ি ফিরে বৈশাখী মেলাতে নিয়ে যাবে।
নীলিমাও তাই এবার তাকিয়ে আছে বৈশাখের দিকে। যেমন করে তার বাবার অপেক্ষায় তাকিয়ে থাকতো গ্রামের মেঠো পথের দিকে।
এই মেয়ের জন্যই তাকে মায়া ছেড়ে আসতে হয়েছে এই যান্ত্রিক শহরে। যেখানে সে শুনতে পায়না বাবা ডাক, ছুয়ে দেখতে পারেনা তার প্রিয় মেয়ের মুখখানা। এ সেই বাবা যার নাম কামরুজ্জামান। যিনি পেশায় রং মিস্ত্রি।
ঢাকার বিভিন্ন স্থানের বড় বড় অট্টালিকায় রং করে করে যার কাটে সারা দিন। তবুও দিন শেষে মনটা কেঁদে ওঠে প্রিয় মুখখানা না দেখাতে। কামরূজ্জামানের বাড়ি যশোর জেলার ঝিকরগাছাতে। তিনি বাবা-মায়ের তিন নম্বর সন্তান। গ্রামের স্কুল থেকে মাধ্যমিক শেষ করেছিল। পাশের গ্রামের শাহানার সাথে তার বিয়ের তিন বছর পরই ঘর আলোকিত করে নীলিমা। কিন্তু ছয় মাসের মাথায় নীলিমা মাতৃহারা হয়। সেই থেকে কামরূজ্জামানই তার সব। আর এখন সেই নীলিমা সতের বছরের কিশোরী।
এতদিন হৃদয়ে আগলে রেখে অবশেষে বাবা ঢাকায়, এতে খুব কষ্ট হয় তার। তাই বার বার বলে, বাবা তুমি কবে আসবে? বাবার হৃদয় তার ডাকে সাড়া দিলেও যেয়ে দেখতে পারছে না তার কলিজার টুকরাকে। কেন সে এত নিষ্ঠুর হলো, কোন ব্যাথায়, অভিমান, নাকি অন্য কোন কারণে? কামরূজ্জামান অবশ্য তা নীলিমাকে মুখ ফুটে বলতে পারছে না। মা মারা যাবার পর সবার ভূমিকা যে তিনি একাই পালন করেছেন। তবে এখন কি করে বলবে মেয়েকে যে, মা! ও মা! তোমার যে পথ প্রায় ফুরিয়ে এসেছে। গন্তব্য খুব কাছাকাছি।
যদিও এটা ডাক্তারদের কথা, একদমই বিশ্বাস করতে চায় না বাবার মন। তাই কি করে বলবে তার মেয়েকে এই কথা। এই চাপা কষ্টের যন্ত্রণা থেকে নিজের প্রিয় নীলিমাকে ও নিজেকে মুক্ত করতে এখন ঢাকার রং মিস্ত্রি। তিল তিল করে জমানো টাকা দিয়ে মেয়েকে বাঁচিয়ে তোলার স্বপ্ন নিয়ে কাজ করছে প্রতিটা দিন, প্রতিটা মূহুর্ত। তার কাজের একমাত্র অনুপ্রেরণা হলো বাবা তুমি কবে আসবে এই কথা। কামরুজ্জামানের এই কথাটি শুনতে কোন মাধ্যম লাগে না।
হৃদয়ের গহিন থেকে বার বার উচ্চারিত হয় এই ধ্বনি। এই শক্তি নিয়ে কামরুজ্জামান চলেছে সামনে দিকে। স্বপ্ন তার মনে। চিকিৎসা করে আবার মেয়ের সাথে মেতে ওঠবে সেই খেলায়। যেখানে মেয়ের শাসনে বাবার সব ঠিক। তা না হলে কত ভূলভ্রান্তির খেসারত না জানি দিতে হয় বাবাকে। এই শাসনের বাধা কত যে মধুর তা ভাবতে ভাবতে তার আনন্দ অশ্রু গড়িয়ে পড়ে কপোল বেয়ে। প্রতিদিনের মত স্বপ্ব বুকে নিয়ে তাই অবিরাম কাজ করে তিনি শেষ পযর্ন্ত তার টাকা যোগাড় করতে পারলেও,পারেনি কামরুজ্জামানের ভাগ্যের সাথে।
দশতালা থেকে শুধু কামরুজ্জামানই পড়েনি পড়েছে তার লালিত স্বপ্ন, কামরুজ্জামানই মরেনি মরেছে তার আকাক্ষা। যার জন্য এত কিছু সেই নীলিমা কি জানতে পারলো তার একমাত্র কাছের কামরুজ্জামানের কথা। সেই মেঠ পথ, সেই বৈশাখ সবই ঠিকটাক শুধু লাল কাপড়ে বাঁধা গাড়ি, বাঁশির পরিবর্তে হুইসেল দেওয়া গাড়ির আওয়াজ তার কানে।