জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি) গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষক রাজীব মীর কে নিয়ে গণমাধ্যমে ভুল সংবাদ প্রচারিত হয়েছে। সূত্র যাচাই না করে রিপোর্ট করে তাকে হেয় করা হয়েছে ।
বিশ্ববিদ্যালয় সুত্রে জানা যায়, তদন্ত কমিটি আজ মঙ্গলবার তিন শিক্ষককে অভিযোগের বিষয়ে তলব করে।নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শিক্ষক জানান, ‘তদন্ত কমিটিতে ফোন রেকর্ড যাচাই করে দেখা যায়; রাজীব মীর তার এক ছাত্রীকে বলছেন, যেন চেয়ারম্যান আয়োজিত নবীনবরন অনুষ্ঠানে যোগ না দেয়। রেকর্ড-এ যৌন হয়রানি, কু-প্রস্তাব এবং নম্বর কমিয়ে দেয়ার বিষযে কোন কথাই হয়নি। বরং চেয়ারম্যান আয়োজিত নবীন বরনে যোগ না দেয়ার জন্য ঐ ছাত্রীকে বার বার বলা হয়েছে। এছাড়া চেয়ারম্যানকে উদ্দেশ্য করে রেগে গিয়ে কিছু কখা বলা হয়েছে। এর বাইরে কিছু নেই’।
এ বিষযে সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষাথীরা অভিযোগ করেন, বিভাগের চেয়ারম্যান এক ছাত্রীকে ফাস্ট বানানোর প্রলোভন দেখিয়ে রাজীব মীরের বিরুদ্ধে অন্যায়ভাবে ভিসি বরাবর অভিযোগ করিয়েছেন।ঐ ছাত্রী লোভে পড়ে একাজ করেছে; তদন্তে তা বেরিয়ে আসবে বলেও জানান তারা।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে শিক্ষক রাজীব মীর জানান, ‘তদন্ত কমিটিতে সব উপস্থাপন করা হয়েছে। তারা বিচার-বিশ্লেষণ করে তদন্ত প্রতিবেদন দেবেন। আশা করি ষড়যন্ত্র উন্মোচিত হবে এবং আমি ন্যায় বিচার পাব। এর বেশি কিছু বলতে চাই না্’।
এদিকে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষক মীর মোশারেফ হোসেন (রাজীব মীর), বর্ণনা ভৌমিক ও প্রিয়াঙ্কা স্বর্ণকারের বিরুদ্ধে চেয়ারম্যানের ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে মানববন্ধন করেছে বিভাগের সাধারণ শিক্ষার্থীরা।
মানববন্ধনে শিক্ষার্থীরা বলেন, ‘ওই ৩ শিক্ষককে আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ না দিয়ে বিভাগের নেয়া ভুল সিদ্ধান্তকে যৌক্তিক করার জন্য বিভিন্নভাবে ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে। উদ্দেশ্যমূলকভাবে তাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ দাঁড় করানো হয়েছে। যা ভিত্তিহীন ও মানহানিকর’।
শিক্ষার্থীরা আরো বলেন, ‘নিয়মানুযায়ী বিভাগের পরবর্তী চেয়ারপার্সন হওয়ার কথা রয়েছে রাজীব মীরের। তার চেয়ারপার্সন পদ বানচালের জন্যই বর্তমান চেয়ারপার্সন এসব ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছেন। ইতিপূর্বে বিভাগের বর্তমান চেয়ারপারসনের নানা অনিয়মের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানান ওই ৩ শিক্ষক। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে বর্তমান চেয়ারপারসন এসব পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছেন’।
উল্লেখ্য, বিভাগের নবীণবরণ অনুষ্ঠানকে কেন্দ্র করে বিরোধের জের ধরে গত ১১ এপ্রিল রাজীব মীরসহ ৩ শিক্ষককে মাস্টার্সের পাঠদান থেকে অব্যাহতি দিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। কিন্তু ১৮ এপ্রিল সংবাদমাধ্যমে এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে রাজীব মীরের বিরুদ্ধে নৈতিক স্খলন, অনৈতিক প্রস্তাব, হুমকি প্রদানসহ নানা বিষয়ে শিক্ষাথীদের কাছে ফোন রেকর্ড আছে বলে দাবি করা হয় । এমনকি কথা না শুনলে রাজীব মীরসহ অন্য দুই শিক্ষক প্রিয়াঙ্কা ও বনর্ণা শিক্ষার্থীদের নম্বর কমিয়ে দেবে এমন অভিযোগও রেকডেৃ আছে বলে জানানো হয় । আর এ তথ্যের সত্যতা যাচাই না করে বিভিন্ন গণমাধ্যম রিপোর্ প্রচারিত হয়।
একটি অনলাইন রাজীব মীরের বিয়ের দিনের টুপি পরা ছবি দিয়েও তাকে নাজেহাল করার চেষ্টা করেছে। কয়েকটি গণমাধ্যমের সাংবাদিক তা ফলাও করে ঐ শিক্ষককে অপদস্ত করে ফেসবুকে নিউজটি শেয়ারও দেন। গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এমন প্রচারণার কারণে রাজীব মীর সামাজিকভাবে হেয় প্রতিপন্ন হয়েছেন বলে জানিয়েছেন তার ঘনিষ্ঠজনরা।
প্রাতক্ষণ/এডি/রাহা
==========