রাজ্জাককে জন্মদিনের শুভেচ্ছা

প্রকাশঃ জানুয়ারি ১৯, ২০১৫ সময়ঃ ৫:৪৮ অপরাহ্ণ.. সর্বশেষ সম্পাদনাঃ ৫:৪৮ অপরাহ্ণ

রাজ্জাকবিনোদন ডেস্ক,প্রতিক্ষণ ডট কম
২৩শে জানুয়ারি নায়করাজ রাজ্জাকের  জন্মদিন। এবার নায়ক রাজ্জাক মুখোমুখি হয়েছেন ।

কেমন আছেন, কি করছেন?

রাজ্জাকঃ ভালো আছি। এখন তেমন কিছু করছিনা। নাতি-নাতনিদের সাথে গল্প করছি।

এখন কি কাজ করছেন?

রাজ্জাকঃ নতুন করে বেশ ক’টি ছবিতে চুক্তিবদ্ধ হয়েছি। এ ছাড়া কলকাতার দু’টি ছবিতে অভিনয় করার কথা আছে।

এখন যে সব ছবি তৈরি হচ্ছে তা আগের মত মানুষ কেন মনে রাখেনা?

রাজ্জাকঃ আগের দিনের ছবির কাহিনী, পরিচালক, নায়ক-নায়িকা, সবকিছু ছিল যত্ন নিয়ে করা। আমরা কত পরিশ্রম করে ছবি তৈরি করতাম। বছর দুই লাগত একটি ছবি করতে। এখন তিন মাসেই ছবি বানিয়ে ফেলে সুতরাং কি করে ভালো ছবি আশা করা যায়।
কোটি টাকার ফকির পরিচালনার কথা কিছু বলুন।

রাজ্জাকঃ আমি এটা পরিচালনা করেছি। আমার পরিচালিত প্রথম ছবি যেখানে আমার দুই ছেলে আর আমি অভিনয় করেছি। গত সপ্তাহে মুক্তি পেল আমরা তিনজন অভিনীত ‘মা আমার চোখের মনি’ ছবিটি।

‘জীবন থেকে নেয়া’ ছবির শুটিংয়ের কথা জানতে চাই।

রাজ্জাকঃ পাকিস্তান আমলে ছবিটি নির্মিত হয়। জহির রায়হান খুব সাহসী মেধা সম্পন্ন কারিগর। ছবির শুটিং চলাকালে এফডিসির ৩ নং ফ্লোরে পাকিস্তানীরা এসে হানা দেয়। আমাকে এবং জহির রায়হানকে পাকিস্তানী ক্যাম্পে ধরে নিয়ে যায়। সে সময় তিনি পাকিস্তানীদেরকে বলেন, তোমাদের সেন্সর বোর্ড আছেনা? আগে দেখ কি তৈরি করছি।

তিনি কাউকে বুঝতে না দিয়ে একটি পাকিস্তান বিরোধী চলচ্চিত্র তৈরি করে ফেল্লেন।

জহির রায়হান সম্পর্কে আপনার মূল্যায়ন?

রাজ্জাকঃ আমাকে তৈরি করেছেন তিনি। আমাদের সম্পর্ক ছিল গুরু-শিষ্যের। আমি খুব কাছ থেকে দেখেছি তাকে। তার কোন চাহিদা ছিলনা। শুধু কাজকে প্রাধান্য দিতেন। এমন ক্ষনজন্মা সুপুরুষ যুগে যুগে আসেনা। যতদিন বেঁচে থাকবো জহির রায়হান আমার মাঝে বেঁচে থাকবেন।

জীবন থেকে নেয়া ছবিতে কাজের কিছু অভিজ্ঞতা বলবেন কি?

রাজ্জাকঃ পাকিস্তান আমল চলছে। দেশে তখন ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র গন্ডগোল চলছিলো। সে সময় চ্যালেঞ্জ নিয়ে এ ছবির শুটিং করতে হয়েছিলো। জহির রায়হান শহীদ মিনারে পাকিস্তানীদের বিরুদ্ধে ছবির চিত্রায়ন করেন। আরো অনেক অভিজ্ঞতা আছে যা বলে শেষ করা যাবেনা। জীবন থেকে নেয়া ছবিটি আমার মুক্তিযুদ্ধের দলিল।

প্রায় ৪০ বছর ধরে অভিনয়ের সাথে জড়িত আছেন। আমাদেরকে কিছু কি বলার আছে?

রাজ্জাকঃ তেমন কিছুই না। একটা কথা বলতে পারি, বয়স ৬৯ হলেও মনের দিক থেকে আমি তরুণ। তারুণ্যের শক্তি ছিল বলেই আমি একদিন শূন্য হাতে স্ত্রী আর শিশু বাপ্পাকে সংগে নিয়ে ঢাকায় এসেছিলাম, কাজ শুরু করেছিলাম, তারপর পরিশ্রম করে আজকে এতটা পথ পাড়ি দিয়েছি। আমি মনে করি সেই তারুণ্যের শক্তির জোরেই এ বয়সে চলচ্চিত্র নির্মান করছি। ভবিষ্যতে এভাবেই কাজ করে যাব। কারন চলচ্চিত্র ছাড়া অন্য কিছুই মনে আসেনা। তাই এতটুকুই বলতে পারি যে চলচ্চিত্রকে আজীবনের সংগী করে নিয়েই পথ চলতে চাই।

কোন ছবিগুলোর কথা খুব করে মনে পড়ে?

রাজ্জাকঃ কাগজের নৌকা, আগুন নিয়ে খেলা, যোগ বিয়োগ, আবির্ভাব, জীবন থেকে নেয়া, রংবাজ -এসব ছবির কথা খুব মনে পড়ে।

অভিনয় জীবনের স্মরণীয় ঘটনা কি?

রাজ্জাকঃ অভিনয় জীবনে চার’শর বেশি ছবিতে অভিনয় করেছি। স্মরণীয় ছবি আর ঘটনা তো অনেক, বলে শেষ করা যাবেনা। কয়েকটি ছবির প্রতি দুর্বলতা খানিকটা বেশি। প্রথম নায়ক হিসেবে ব্রেক পাই বেহুলা ছবিতে। এ ছবির একটি দৃশ্যে অভিনয় করতে গিয়ে পানিতে ডুবে মরতে বসেছিলাম। ‘জীবন থেকে নেয়া’ ও ওরা এগারোজন’ ছবিতে অভিনয় করতে পেরে আমি গর্ব অনুভব করি। নিজের পরিচালনায় প্রথম ছবি ‘অনন্ত প্রেম’ আমার স্মরণীয় একটি ছবি। একইভাবে ‘জোকার’ আর ‘চাপাডাঙার বউ’ আমার পছন্দের ছবি।

আপনার ছেলে-মেয়ে কয়জন?

রাজ্জাকঃ ২ ছেলে, ১ মেয়ে। বাপ্পারাজ, সম্রাট ও ময়না।

বাপ্পারাজ ও সম্রাট আপনার প্রত্যাশা কতটুকু পূরণ করতে পেরেছে?

রাজ্জাকঃ চলচ্চিত্রে এগিয়ে যেতে হলে যা যা দরকার বাপ্পা ও সম্রাটের মধ্যে তার সবই আছে। আমার সন্তান হিসেবে বাড়তি কোন সুযোগ তারা পাক তা আমি কখনো চাইনি। আমার হাত ধরে তাদের অভিষেক হয়েছে, এটুকুই যথেষ্ট। বাকীটুকু নির্ভর করছে তাদের উপর।

আপনার জীবনে কার অনুপ্রেরণা বেশি কাজ করেছে বলে আপনি মনে করেন?

রাজ্জাকঃ আমার স্ত্রী রাজলক্ষীর। আমি বিশ্বাস করি জীবনের সব সৌভাগ্যের মূলে আছেন আমার স্ত্রী লক্ষী। ও যদি সংসার না সামলাতো তাহলে এত সুন্দর জীবন আমি পেতাম না। কত নায়িকার সাথে অভিনয় করেছি, সব সময় চিন্তামুক্ত হয়ে কাজ করেছি।

আপনার জন্মস্থান কোথায়?

রাজ্জাকঃ কলকাতা। আমি ১৯৪২ সালের ২৩শে জানুয়ারি জন্মগ্রহন করি।

আমাদের পক্ষ থেকে আপনার জন্য জন্মদিনের শুভেচ্ছা।

রাজ্জাকঃ সবাইকে আমার পক্ষ থেকে প্রাণঢালাভালোবাসা।                                 [তথ্য সূত্রঃকমিউনিটি]

আরো সংবাদঃ

মন্তব্য করুনঃ

পাঠকের মন্তব্য



আর্কাইভ

May 2024
S S M T W T F
 123
45678910
11121314151617
18192021222324
25262728293031
20G