WordPress database error: [Disk full (/tmp/#sql_1df056_0.MAI); waiting for someone to free some space... (errno: 28 "No space left on device")]SELECT COLUMN_NAME FROM INFORMATION_SCHEMA.COLUMNS
WHERE table_name = 'sdsaw42_hsa_plugin' AND column_name = 'hsa_options'
WordPress database error: [Duplicate column name 'hsa_options']ALTER TABLE sdsaw42_hsa_plugin ADD hsa_options VARCHAR(2000) NOT NULL DEFAULT ''
সবার আগে প্রয়োজন গল্প। যেমন ‘ঠাকুরমার ঝুলি’ থেকে নেওয়া যেতে পারে। আবার একেবারে নতুন গল্প লেখা যেতে পারে। মীনার ক্ষেত্রে যেমন প্রতিটি পর্বে একটা নীতিকথা থাকত। সে অনুযায়ী গল্প লেখা হতো। মোদ্দাকথা, কোন গল্প থেকে এনিমেশন বানাতে হবে, সেটা ঠিক করে ফেলতে হবে শুরুতেই। তার ভিত্তিতে লিখে ফেলতে হবে চিত্রনাট্য।
এবার দেখতে হবে গল্পে মোট কতগুলো চরিত্র আছে। তার একটি তালিকা করতে হবে। সেখানে থাকবে চরিত্রগুলোর বিস্তারিত বিবরণ। যেমন— একটি চরিত্রের সঙ্গে সম্পর্কিত আর কয়টি চরিত্র আছে, কার সঙ্গে কী সম্পর্ক—সব লিখে ফেলতে হবে। কোনো একটি শিশু চরিত্র হয়তো কোনো একটি খেলনা বেশি পছন্দ করে। কিংবা কোনো খাবার। সেগুলো সব টুকে রাখতে হবে।
তারপর তালিকা পাঠাতে হবে ক্যারেক্টার ডিজাইন টিমের কাছে। তারা প্রথমে কনসেপ্ট আর্ট দাঁড় করাবে। মানে চরিত্রগুলোর মূল চেহারা আঁকবে। তার ভিত্তিতে আরো চারটি ছবি আঁকবে; চারদিক থেকে দেখতে কেমন লাগবে। এগুলোকে বলা হয় ‘টার্ন অ্যারাউন্ড’। এরপর বানাতে হবে ‘এক্সপ্রেশন শিট’। তাতে চরিত্রটির সব মুখভঙ্গি থাকবে। হাসি, অল্প হাসি, বেশি হাসি। কান্না, অল্প কান্না, বেশি কান্না। এমনি করে রাগ, হতাশা, বিরক্তি, আনন্দ ইত্যাদি। আর বানাতে হবে ‘লিপ’। মানুষ কথা বলার সময় অনবরত ঠোঁট নাড়তে থাকে। এটা মূলত নির্ভর করে শব্দের স্বরধ্বনিগুলোর ওপরে। ‘অ’ বলতে তোমার ঠোঁট এক রকম নড়ে, ‘আ’ বলতে আরেক রকম। এ রকম ‘ই’, ‘উ’, ‘এ’ ও ‘ও’র জন্য আলাদা আলাদা। এগুলো উচ্চারণের সময় চরিত্রটির ঠোঁট কিভাবে নড়বে, ঠিক করে নেওয়া হবে সেগুলো।
মঞ্চে বা সিনেমার সেটে অভিনয়ের সময় অনেক জিনিস রাখা হয়, যাতে দৃশ্যটাকে সত্যিকারের মনে হয়। টেবিল, চেয়ার, খাট, বই, খাবার, গাড়ি ইত্যাদি অভিনয়ের জন্য যখন যা প্রয়োজন হয়। এগুলোকে বলা হয় প্রপস। চরিত্রের জন্য এ রকম কিছু প্রপস লাগতে পারে। যেমন— শিশু চরিত্রের পছন্দের খেলনা, খাবার। আবার বুড়ো চরিত্রের হাতের লাঠি। চোখের চশমা।
অন্যদিকে কাজ শুরু করে দেবে ব্যাকগ্রাউন্ড ডিজাইন টিম। এনিমেশনের ব্যাকগ্রাউন্ড অনেকটা সিনেমার লোকেশনের মতো ব্যাপার। হয়তো গল্পে আছে চরিত্রগুলো একটা নদীতে বেড়াতে যাবে। তাহলে সেই নদীটা আঁকতে হবে। সঙ্গে নদীতীরের গাছপালা, খেয়াঘাট, বাজার, দোকানপাট। এটা হলো সেই দৃশ্যের ব্যাকগ্রাউন্ড। সেখানে গিয়ে চরিত্রগুলো যদি নৌকায় চড়ে, তাহলে সেটাও আঁকতে হবে। এমনিভাবে পুরো ছবিতে যত ব্যাকগ্রাউন্ড আছে, সেগুলোতে যত উপাদান আছে সব আঁকতে হবে।
তারপর বানাতে হবে স্টোরিবোর্ড। সহজ করে বললে, চিত্রনাট্যকে চিত্রে রূপান্তরিত করা। চিত্রনাট্যে প্রতিটি দৃশ্য বিবরণসহ লেখা থাকে। স্টোরিবোর্ডে সেটা এঁকে বোঝানো হয়। পাশাপাশি শুরু করতে হবে সংগীত ও ডাবিংয়ের কাজ। এনিমেশনে চরিত্রগুলোর হয়ে কথা বলেন বাচিক শিল্পীরা। একে বলে ডাবিং। এই পর্যায়ে ছবি, সংগীত ও ডাবিংয়ের খসড়া করে নিতে হবে। তারপর তিনটা মিলিয়ে নিলে এনিমেশনের একটা প্রাথমিক চেহারা
দাঁড়িয়ে যাবে। বোঝা যাবে, সেটা কেমন হতে যাচ্ছে। একে বলা হয় এনিমেটিক।
ওদিকে ক্যারেক্টার ডিজাইন টিম প্রতিটি চরিত্রের লে-আউট চূড়ান্ত করে ফেলবে। আর ব্যাকগ্রাউন্ড ডিজাইন টিম চূড়ান্ত করবে সব ব্যাকগ্রাউন্ড। চিত্রনাট্য অনুযায়ী ঠিক করে ফেলবে আলো-ছায়ার খেলা। এরপর শুরু হবে মূল এনিমেশন।
প্রথমেই এনিমেটর কি-ফ্রেমগুলো আঁকবেন। মানে চরিত্রগুলোর প্রতিটি কাজের মূল ছবি। একটি চরিত্র হয়তো হাঁটছে। সেটা বোঝাতে পায়ের অনেক অবস্থানের ছবি লাগবে। পা মাটিতে আছে, ওপরে উঠল, ভাঁজ হলো, নিচে নামতে লাগল, মাটিতে পড়ল। সেগুলো আঁকার পর পাঠানো হবে ক্লিন-আপ ডিপার্টমেন্টে। তারা ছবির খুঁটিনাটি বিষয়গুলো ঠিকঠাক করে দেবে।
তারপর কাজে লাগবে ইন-বিটুইন টিম। এনিমেশনের জন্য প্রতি সেকেন্ডে অন্তত ১২টি করে ছবি লাগে। এর চেয়ে বেশি রাখা গেলে ভালো। কিন্তু কম হলে দেখতে ভালো লাগবে না। মনে হয় কেটে কেটে যাচ্ছে। সব ছবি এনিমেটর এঁকে দেন না। তিনি শুধু কি-ফ্রেম আঁকেন। মাঝের ছবিগুলো আঁকা তুলানমূলক সহজ। আগে-পরের ছবির সঙ্গে মিলিয়ে নিলেই হয়। এগুলোকে বলে ইন-বিটুইন। এই টিমের কাজ সেগুলো এঁকে দেওয়া।
এরপর রং করার পালা। সে জন্য কালার ডিপার্টমেন্ট আগে থেকেই একটা গাইডলাইন ঠিক করে ফেলে। কোন কোন রং বেশি গুরুত্ব পাবে, কোন চরিত্রের গায়ের রং-জামার রং কেমন হবে, দিনের কোন বেলায় কোন রং ব্যবহার করা হবে, রাতের বেলায় কোন রং ইত্যাদি। সে অনুযায়ী প্রতিটি ছবি আলাদা করে রং করতে হয়। মানে প্রতি সেকেন্ডের জন্য অন্তত ১২টা করে! আলাদা করে রং করতে হয় প্রতিটি ব্যাকগ্রাউন্ডও।
তারপর সব কিছু একসঙ্গে করা হয়—এনিমেশনের ছবি, ব্যাকগ্রাউন্ড, ডাবিং ও সংগীত। সঙ্গে প্রয়োজনমাফিক জুড়ে দেওয়া হয় ক্যামেরার কাজ। কোথাও হয়তো জুম ইন হলো, কোথাও জুম আউট। কোথাও ক্যামেরা প্যান করে এগিয়ে গেল। কোথাও টপ শট নেওয়া হলো। সেটা শেষ হলে ফাইনাল এডিটিং।
ব্যস! এনিমেশনের সোনার কাঠি ছুঁইয়ে দেওয়ার কাজ শেষ। হাতে আঁঁকা ছবি হয়ে গেল জীবন্ত! এরপর অবশ্য আরেকটা কাজ আছে। পরিচালকের অনুমোদন। এই প্রক্রিয়ারও একটা গালভরা নাম আছে। সোয়েট বক্স। এত খাটাখাটনির পর পরিচালক যদি দৃশ্যটা বাদ দিয়ে দেন, এই ভয়ে নাকি সব কলাকুশলী ঘামতে থাকেন। তাই এমন নাম। আরেক দল অবশ্য বলেন, ওয়াল্ট ডিজনি এই কাজটা করতেন একটা ছোট্ট থিয়েটার ঘরে। সেখানে সবাই গরমে এমন ঘামত যে নামই হয়ে গিয়েছিল সোয়েট বক্স।
এটা অবশ্য টুডি এনিমেশনের প্রক্রিয়া। থ্রিডি বানাতে পরিশ্রম তুলনায় কম। তাতে চরিত্রগুলো এঁকে ফেলার পর আর তেমন আঁকাআঁকির বালাই নেই। তবে অন্য একটা কাজ আছে। সফটওয়্যার ব্যবহার করে চরিত্রগুলোকে ‘রিগ’ করতে হয়। যাকে বলে চরিত্রগুলোতে ‘লজিক’ স্থাপন করা। মানে নড়াচড়া করার সময় সেগুলোর হাত-পা কোনটা কতখানি নড়তে পারে, ঘাড় কতখানি নাড়াতে পারবে—এগুলো ঠিক করে দেওয়া। আর সেখানেই যত কারিকুরি। ‘রিগিং’ ঠিকমতো করা না গেলে দেখতে একেবারেই ভালো লাগে না। আর করতে পারলেই কেল্লা ফতে!
ইউটিউবে ‘হাউ টু মেক এনিমেশন’ লিখে সার্চ দিলে অনেক টিউটোরিয়াল পাবে। চাইলে সেগুলো দেখে দেখে নিজেই এনিমেশন বানাতে পারো।