স্বর্গীয় অনুভূতি পাবেন যেখানে…

প্রথম প্রকাশঃ এপ্রিল ১২, ২০১৫ সময়ঃ ৫:১০ অপরাহ্ণ.. সর্বশেষ সম্পাদনাঃ ১২:১৩ অপরাহ্ণ

মঈনুল ইসলাম রাকীব, জাবি প্রতিনিধি

যদি আপনাকে স্বর্গ কল্পনা করতে বলা হয় কি করবেন? চোখ বন্ধ করে যে ভুবন আপনি ভাববেন সেখানে সবুজ গাছপালার প্রাচুর্য, থাকবে পাখির কিচির মিচির, নির্জলা ঝরনা, নানা রকম খাদ্য ইত্যাদি।

আপনি যদি ঠিক এমনই একটি স্বর্গ দেখতে চান তবে আপনাকে ঢাকার অদূরে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে যেতে হবে। প্রায় সাতশ একর জায়গায় স্থাপিত দেশের একমাত্র আবাসিক এ বিশ্ববিদ্যালয়টির নয়নাভিরাম প্রাকৃতিক দৃশ্য আপনাকে পৃথিবীতে স্বর্গের অনুভূতি দেবে।

ju১৯৭১ সালে যাত্রা শুরু করে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়। বিভিন্ন সময় এখানে ভ্রমণে আসা বিদেশী শিক্ষার্থী ও দর্শনার্থীদের মতে পৃথিবীর অন্যতম সুন্দর ক্যাম্পাস এটি। চলুন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বর্গীয় সৌন্দর্যের একটু গভীরে যাওয়া যাক।

সবুজ সমুদ্র: জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়কে যদি একটি পরিচয়ে পরিচিত করতে চান তবে এর নাম দিতে হবে ‘সবুজ সমুদ্র। সাতশ একর জায়গার এমন কোন স্থান নেই যেখানে গাছপালা নেই। দেশের অন্যতম সেরা প্রাকৃতিক উদ্যানও বলা হয় এটিকে। বাংলাদেশের এমন কোন বৃক্ষ নেই যা এখানে পাবেন না। রয়েছে বিদেশী অনেক বৃক্ষও। যদিও অবকাঠামো বিনির্মাণের কারণে বেশ কিছু স্থানের বৃক্ষ নিধন করা হয়েছে তবুও এখনো সবুজের সমারোহ পুরো ক্যাম্পাসে। প্রধান ফটক থেকে ঢুকেই আম, কাঁঠাল, মেহগনি, রাঁধাচুড়া, কৃষ্ণচূড়া, বরুই, কদম, বটগাছ ইত্যাদি গাছের সবুজ পত্র হৃদয় কেড়ে নেবে আপনার।

শয্যায় ও জাগরণে ফুল: জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়কে ফুল সাম্রাজ্য বললে একটুও ভুল হবেনা। শত শত প্রজাতির দেশি ও বিদেশী ফুলে ছেঁয়ে আছে বিশ্ববিদ্যালয়ের অঙ্গন। স্থলে যেমন ফোঁটে গাঁদা,বহু প্রকারের গোলাপ,জবা,হাসনাহেনা, অলকানন্দা, কামিনী, বেলি ঠিক তেমনই জলে ফোঁটে শাপলা ও লাল টুকটুকে পদ্ম। পরিবহন চত্ত্বর এলাকায় ছাতিম ফুলের গন্ধে আপনি অপার্থিব কোন জগতের সন্ধান পেতে পারেন। প্রতিটি হল, কোয়ার্টার, অনুষদের পাশে রয়েছে ফুলের বাগান। বারো মাস সেই বাগানে কোন না কোন ফুল ফুটে থাকে। আপনার মন ভালো করে দিতে পারে বাহারি রকমের ফুলের সুবাস। বোটানিক্যাল গার্ডেনে পাবেন বিদেশী বহু রকম ফুলের দেখা ।

জীববৈচিত্র: সাপ, গুঁইসাপ, নানা জাতের পাখি, শেয়াল, প্রজাপতি, কুকুর, কাঠবিড়ালীসহ হাজার প্রজাতির প্রাণী রয়েছে জাহাঙ্গীরনগরে। এখানে রয়েছে প্রায় ১৭ টি লেক। এসব লেকে মাছের পাশাপাশি রয়েছে প্রাণিজ উদ্ভিদ।

ju2পাখির রাজ্য: জাহাঙ্গীরনগর সত্যিকারের পাখির রাজ্য। জাহাঙ্গীরনগর বাংলাদেশের অন্যতম শ্রেষ্ঠ শীতকালীন পাখির অভয়ারণ্য। সুদূর সাইবেরিয়া হয়ে প্রতিবছর অক্টোবর থেকে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত জাহাঙ্গীরনগর বিদেশী পাখির বাসস্থান হয়। এসময় জাবির প্রতিটি লেক পাখির কূজনে সমৃদ্ধ থাকে। এ পাখি দেখতে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে চলে আসে অজস্র দর্শনার্থী। পাখি পরিচিতি ও দর্শনের সুযোগ করে দেয়ার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিজ্ঞান বিভাগ প্রতিবছর পাখি মেলার আয়োজন করে থাকে।

ঢাকা থেকে প্রতি শুক্রবার অজস্র দর্শনার্থী সপরিবারে চলে আসে জাবিতে। তীব্র যানজট ও প্রযুক্তি নির্ভরতা ছেড়ে অপার্থিব এক ভূখন্ডে এসে যদি মনকে প্রকৃতির হাতে তুলে দিতে চান তবে চলে আসুন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে। জাহাঙ্গীরনগরের ফুল, পাখি, প্রজাপতি, উদ্ভিদ ও মানুষগুলোর সান্নিধ্য পৃথিবীতে বসে স্বর্গের কিছুটা ছোঁয়া দেবে আপনাকে-নিশ্চিত করে বলা যায়।

প্রতিক্ষণ/এডি/তপু

আরো সংবাদঃ

মন্তব্য করুনঃ

পাঠকের মন্তব্য

সর্বাধিক পঠিত

20G