ছাত্রী হলে ছাত্রলীগের হামলা

প্রথম প্রকাশঃ আগস্ট ১৬, ২০১৫ সময়ঃ ৭:৫৪ অপরাহ্ণ.. সর্বশেষ সম্পাদনাঃ ৭:৫৪ অপরাহ্ণ

জেলা প্রতিবেদক

pstu 1পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদালয়ে (পবিপ্রবি) এক ছাত্রীকে মারধরের ঘটনায় সাধারণ ছাত্রীদের তোপের মুখে পড়েন ছাত্রলীগ নেত্রী।

পরে ওই নেত্রীকে উদ্ধার করতে ছাত্রী হলের তালা ভেঙে সেখানে প্রবেশ করে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। এ সময় তারা ছাত্রীদের অকথ্য ভাষায় গালাগাল ও হুমকি দেয় ছাত্রলীগ।

রোববার বিতর্কিত ছাত্রলীগ নেত্রী স্মরণীকাকে হল থেকে বহিষ্কার ও ছাত্রলীগ কর্তৃক সাধারণ ছাত্রীদের হুমকির ঘটনার বিচারের দাবিতে পূর্বঘোষিত মানববন্ধন কর্মসূচি ছাত্রলীগের বাধায় পণ্ড হয়ে গেছে। অবশ্য তার আগে প্রভোস্ট অফিস ঘেরাও করে ওই ছাত্রলীগ নেত্রীকে হল থেকে বহিষ্কারের দাবি জানিয়েছে সাধারণ ছাত্রীরা।

জানা যায়, বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলের ছাত্রলীগ সভাপতি স্মরণীকা রায় (কৃষি অনুষদের ষষ্ঠ সেমিস্টার) শনিবার রাতে একটি অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণের জন্য মাৎস্য বিজ্ঞান অনুষদের চতুর্থ সেমিস্টারের ছাত্রী মৌসুমীকে ডাকতে যায়। শারীরিক অসুস্থতার কারণে মৌসুমী অনুষ্ঠানে যোগদানে অপারগতা প্রকাশ করলে স্মরণীকা তাকে জুনিয়রদের সামনে মারধর করে।

মারধরের ঘটনায় প্রতিবাদে ফেটে পড়ে হলের সাধারণ ছাত্রীর। তারা হল থেকে স্মরণীকার বহিষ্কারের দাবিতে বিক্ষোভ প্রদর্শন করে।

এদিকে ছাত্রলীগ নেত্রীর বিরুদ্ধে বিক্ষোভের খবর পেয়ে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা (পুরুষ) শনিবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলের তালা ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করে। তখন তারা ছাত্রীদের অশ্রাব্য ভাষায় গালিগালাজ করে হল থেকে বের করে দেয়ার হুমকি দেয়। এসময় ছাত্রলীগকর্মীরা বেশ কয়েকজন ছাত্রীকে লাঠি দিয়ে আঘাত ও চুল ধরে টানাটানি করেছে বলে প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে।

পরে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি শান্ত হয় এবং ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের ছাত্রী হল থেকে বের করে দেয়া হয়। তবে ছাত্রীদের উপর হামলা ও হুমকির প্রতিবাদে ফের প্রভোস্ট অফিস ঘেরাও করে বিক্ষোভ করে সাধারণ ছাত্রীরা। এ সময় প্রভোস্ট অফিসে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন অনুষদের ডিন, প্রক্টর, প্রভোস্টরা অবরুদ্ধ হয়ে পড়েন। পরে সাধারণ ছাত্রীদের দাবি মেনে নেয়ার প্রতিশ্রুতি দিলে ছাত্রীরা অবরোধ তুলে নেয়।

এছাড়া রোববার ছাত্রলীগ নেত্রী স্মরণীকাকে হল থেকে বহিষ্কার ও ছাত্রলীগ কর্তৃক সাধারণ ছাত্রীদের হুমকি প্রদানের ঘটনার বিচারের দাবিতে পূর্বঘোষিত মানববন্ধন কর্মসূচি ছাত্রলীগের বাধায় পালন করতে পারেনি।

ছাত্রীদের অভিযোগ, মৌসুমী ছাত্রলীগের কর্মী হওয়া সত্ত্বেও একটি মহল তাকে শিবির ঘোষণা করে ঘটনাটিকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার চেষ্টা করছে। কারণ ছাত্রলীগের প্রতিটি অনুষ্ঠানেই মৌসুমী অংশ নেয়। আসলে পূর্ব শত্রুতার জেরে স্মরণীকা মৌসুমীকে মারধর করেছে।

এ ব্যাপারে পবিপ্রবি ছাত্রলীগ সভাপতি আনিসুজ্জামান আনিস বাংলামেইলকে বলেন, ‘ছাত্রলীগ নেত্রীর সাথে সাধারণ ছাত্রীদের ঝামেলা হয়েছিল। পরবর্তীতে ছাত্রলীগ ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের হস্তক্ষেপে সমাধান হয়েছে।’

তিনি আরো বলেন, ‘ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা তালা ভেঙে হলে প্রবেশ করেনি। হলের গার্ডের কাছ থেকে চাবি নিয়ে তাল খুলে ছাত্রী হলে প্রবেশ করে।’

বেগম ফজিলাতুন্নেছা হলের প্রভোস্ট প্রফেসর স্বদেশ চন্দ্র সামন্ত বাংলামেইলকে বলেন, ‘এখন পরিবেশ মোটামুটি শান্ত রয়েছে। মৌসুমী লিখিত অভিযোগ দিলে তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’

 
প্রতিক্ষণ/এডি/তাফসির

আরো সংবাদঃ

মন্তব্য করুনঃ

পাঠকের মন্তব্য

সর্বাধিক পঠিত

20G