কুরআন ও সুন্নাহর আলোকে দানশীলতা ও কৃপণতা

প্রকাশঃ জানুয়ারি ৩১, ২০১৫ সময়ঃ ১২:২৬ অপরাহ্ণ.. সর্বশেষ সম্পাদনাঃ ১২:৩১ অপরাহ্ণ

ধর্ম চিন্তা ডেস্ক , প্রতিক্ষণ ডটকম:

money-bribe-1মহান আল্লাহ বলেন, তোমরা যা কিছু ব্যয় করবে তিনি তার বিনিময় দেবেন। (সূরা সাবা ৩৯)

তিনি আরো বলেন, তোমরা যা কিছু ধন-সম্পদ দান কর, তা নিজেদের উপকারের জন্যই। আল্লাহর সন্তোষটি ব্যতীত অন্য কোন উদ্দেশ্যে তোমরা দান করো না।

আর তোমরা যা দান কর, তার পুরস্কার পূর্ণভাবে প্রদান করা হবে এবং তোমাদের প্রতি অন্যায় করা হবে না।(সূরা বাকারাহ ২৭২)

তিনি অন্যএ বলেন, তোমরা যা কিছু ধন-সম্পদ দান কর, আল্লাহ তা সবিশেষ অবহিত। (সূরা বাকারাহ ২৭৩)

এ বিষয়ে অনেক হাদীস উল্লেখ করা হল।

১) ইবনে মাসঊদ (রাঃ) থেকে বর্ণিত, নবী (সাঃ) বলেছেন, কেবলমাত্র দুটি বিষয়ে ঈর্ষা করা যায় (১) ঐ ব্যক্তির প্রতি যাকে মহান আল্লাহ সম্পদ দিয়েছেন,অতঃপর তাকে হক পথে অকাতরে দান করার ক্ষমতা দান করেছেন এবং (২) ঐ ব্যক্তির প্রতি যাকে মহান আল্লাহ হিকমত দান করেছেন, অতঃপর সে তার দ্বারা ফায়সালা করে ও তা শিক্ষা দেয়। (সহীহুল বুখারী ৭৩, ১৪০৯, ৭১৪১, মুসলিম ৮১৬)

*হাদীসের অর্থ হল, উক্ত দুই প্রকার মানুষ ছাড়া অন্য কারো প্রতি ঈর্ষা করা বৈধ নয়।

২) উক্ত রাবী থেকেই বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (সাঃ) লোকদেরকে প্রশ্ন করলেন, তোমাদের মধ্যে এমন ব্যক্তি কে আছে, যে নিজের সম্পদের চেয়ে তার ওয়ারেসের সম্পদকে বেশি প্রিয় মনে করে?
তাঁরা জবাব দিলেন, হে আল্লাহর রসুল! আমাদের মাঝে এমন কোন ব্যক্তি কেউ নেই, যে তার নিজের সম্পদকে বেশি প্রিয় মনে করে না।
তখন তিনি বললেন, নিশ্চয়ই মানুষের নিজের সম্পদ তাই, যা সে আগে পাঠিয়েছে। আর এ ছাড়া যে মাল বাকী থাকবে, তা হল ওয়ারেসের মাল। (সহীহুল বুখারী ৬৪৪২, নাসায়ী ৩৬১২,আহমাদ ৩৬১৯)

৩) আদী ইবনে হাতেম (রাঃ) বলেন, আমি নবী (সাঃ)-কে বলতে শুনেছি, তোমরা জাহান্নাম থেকে বাঁচো; যদিও খেজুরের এক টুকরো সাদকাহ করে হয়। (সহীহুল বুখারী ১৪১৩,১৪১৭,৩৫৯৫,৬০২৩, নাসায়ী ২৫৫২,২৫৫৩,আহমাদ ১৭৭৮২)

৪) জাবের (রাঃ) কর্তৃক বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী (সাঃ)-এর নিকট এমন কোন জিনিসই চাওয়া হয়নি, যা জবাব দিয়ে তিনি না বলেছেন। (সহীহুল বুখারী ৬০৩৪,আহমাদ ১৩৭৭২)

৫) আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) কর্তৃক বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী (সাঃ) বলেছেন, প্রতিদিন সকালে দুজন ফেরেশতা অবতরণ করেন। তাঁদের একজন বলেন, হে আল্লাহ! দাতাকে তার দানের বিনিময় দিন। আর অপরজন বলেন, হে আল্লাহ! কৃপণকে ধ্বংস দিন। (সহীহুল বুখারী ১৪৪২, মুসলিম ১০১০)

কৃপণতা ও ব্যয়কুণ্ঠতা

আল্লাহ তাআলা বলেন, পক্ষান্তরে যে কার্পণ্য করে ও নিজেকে স্বয়ংসম্পূর্ণ মনে করে। আর সদ্বিষয়কে মিথ্যাজ্ঞান করে অচিরেই তার জন্য আমি সুগম করে দেব (জাহান্নামের) কঠোর পরিণামের পথ। যখন সে ধ্বংস হবে, তখন তার সম্পদ তার কোন কাজেই আসবে না। (সূরা লাইল ৮-১১)

তিনি আরো বলেন, যারা অন্তরে কার্পণ্য হতে মুক্ত, তারাই সফলকাম। (সূরা তাগাবূন ১৬)

জাবের (রাঃ) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন, অত্যাচার করা থেকে বাঁচ। কেননা, অত্যাচার কিয়ামতের দিনের অন্ধকার। আর কৃপণতা থেকে দূরে থাকো । কেননা, কৃপণতা তোমাদের পূর্ববর্তীদেরকে ধ্বংস করে দিয়েছে।(এই কৃপণতাই) তাদেরকে প্ররোচিত করেছিল, ফলে তারা নিজদের রক্তপাত ঘটিয়েছিল এবং তাদের উপর হারামকৃত বস্তুস্মূহকে হালাল করে নিয়েছিল। (মুসলিম ২৫৭৮, আহমাদ ১৪০৫২)

 

প্রতিক্ষণ/এডি/ইসলাম

আরো সংবাদঃ

মন্তব্য করুনঃ

পাঠকের মন্তব্য



আর্কাইভ

May 2024
S S M T W T F
 123
45678910
11121314151617
18192021222324
25262728293031
20G