চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সুবর্ণজয়ন্তী উৎসবের উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
শনিবার সকালে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে গণভবন থেকে ‘গৌরবের ৫০ বছর’ পূর্তিতে বিশ্ববিদ্যালয় সংশ্লিষ্ট সবাইকে শুভেচ্ছা জানান প্রধানমন্ত্রী।
তিনি বলেন, “আমি নিজে আসতে পারলে খুব আনন্দিত হতাম। সবার সাথে দেখা হতো। মন পড়ে আছে ক্যাম্পাসে, নিজে কেন গেলাম না।”
উদ্বোধনী বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী শিক্ষার্থীদের দায়িত্ব সম্পর্কে সচেতন হওয়ার আহ্বান জানিয়ে বলেন, “যে বিশ্ববিদ্যালয়ে লেখাপড়া করি তাকে নিজের মনে করতে হবে। যারা হলে থাকেন তাদের দায়িত্ব হলের সৌন্দর্য ঠিক রাখা।”
হল ও ক্যাম্পাসের সৌন্দর্য রক্ষায় ফলজ ও ফুলের গাছ লাগানোর কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি সেশনজট ঠেকাতে শিক্ষকদেরও তৎপর হতে অনুরোধ জানান তিনি।
বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর অভ্যন্তরীণ উন্নয়নে প্রাক্তনদের সংগঠন ও অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশগুলোকে এগিয়ে আসারও অনুরোধ করেন শেখ হাসিনা।
“অ্যালামনাইদের অনুষ্ঠানে খাওয়া-দাওয়া আর উৎসব হয়। এটা তাদের কাজ না। আমি যে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাশ করলাম তার জন্য কি করলাম। সেটিও দেখতে হবে।”
ভিডিও কনফারেন্সে প্রধানমন্ত্রী সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে প্রকাশিত স্মারক ডাকটিকিটও অবমুক্ত করেন।
দুই দিনব্যাপী এই আয়োজন শুক্রবার বিকালে আনন্দ শোভাযাত্রার মধ্য দিয়ে শুরু হয়। শনিবারের আলোচনা ও সাংস্কৃতিক পর্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত আছেন জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী।
চবি উপাচার্য অধ্যাপক ইফতেখার উদ্দিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে আরও আছেন ইমেরিটাস অধ্যাপক ড. আনিসুজ্জামান, পানি সম্পদমন্ত্রী আনিসুল ইসলাম মাহমুদ ও সাবেক মেয়র এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরী।
উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. শিরীন আখতার, সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক এজেএম নুরুদ্দিন চৌধুরী, সাবেক চিফ হুইপ উপাধ্যক্ষ আবদুস শহীদ, সংসদ সদস্য ওয়াশিকা আয়শা খান, সাবিহা মুছা, আবু রেজা মো. নেজামুদ্দিন নদভী, চট্টগ্রাম চেম্বারের সভাপতি মাহবুবুল আলম, বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার অধ্যাপক কামরুল হুদা ও প্রক্টর অধ্যাপক আলী আজগর চৌধুরীও উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মাননা দেওয়া হবে, বিকালে হবে সাংস্কৃতিক পরিবেশনা।
এদিকে অর্ধ শতকপূর্তির সুবর্ণচ্ছটায় অংশ নিতে বিপুল সংখ্যক প্রাক্তন শিক্ষার্থী সকাল থেকেই পাহাড়ঘেরা সবুজ ক্যাম্পাসে আসতে শুরু করেন। দশকপুরনো সাবেক শিক্ষার্থীরা সহপাঠীদের কাছে পেয়ে হয়ে উঠেন আত্মহারা।
জারুলতলা, কলাভবন ঝুপড়ি, রেল স্টেশনসহ সর্বত্র পুনর্মিলনীর আনন্দ ভাগ করে নিচ্ছেন বর্তমান শিক্ষার্থীরাও, মেতে উঠছেন আনন্দ-আড্ডায়। গান, স্মৃতিচারণ আর পুরনো সহপাঠীদের সাথে মিলনের আনন্দে উৎসবের রং নিয়েছে পুরো চবি ক্যাম্পাস।
বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জানায়, সুবর্ণজয়ন্তীর পুনর্মিলনীতে অংশ নিতে ১০ হাজারেরও বেশি সাবেক শিক্ষার্থী নিবন্ধন করেন। এর বাইরেও অসংখ্য সাবেক ও বর্তমান শিক্ষার্থী এ আনন্দ আয়োজনে অংশ নিচ্ছেন।