রাবি রেজিস্ট্রার ও রাকসু জিএসের মুখোমুখি উত্তপ্ত বাকবিতণ্ডা, নেপথ্যে কী?

প্রথম প্রকাশঃ নভেম্বর ১০, ২০২৫ সময়ঃ ১:১০ অপরাহ্ণ.. সর্বশেষ সম্পাদনাঃ ১:১০ অপরাহ্ণ

প্রতিক্ষণ ডেস্ক

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) অধ্যাপক ড. ইফতিখারুল আলম মাসুদ ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (রাকসু) সাধারণ সম্পাদক (জিএস) সালাহউদ্দিন আম্মারের মধ্যে তীব্র বাকবিতণ্ডার ঘটনা ঘটেছে। রোববার (৯ নভেম্বর) দুপুরে রেজিস্ট্রারের কার্যালয়ে এ ঘটনাটি ঘটে।

ঘটনার ভিডিও রোববার রাতেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়লে তা নিয়ে শুরু হয় ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা। ভিডিওতে দেখা যায়, জিএস সালাহউদ্দিন আম্মার রেজিস্ট্রারের কক্ষে প্রবেশ করে ক্লিনিক্যাল সাইকোলজি বিভাগের সভাপতি নিয়োগ সংক্রান্ত বিষয়ে প্রশ্ন করেন। একপর্যায়ে তাদের মধ্যে উত্তপ্ত বাকবিতণ্ডা হয়।

জিএস সালাহউদ্দিনের অভিযোগ, রেজিস্ট্রার ইচ্ছাকৃতভাবে ক্লিনিক্যাল সাইকোলজি বিভাগের সভাপতি নিয়োগের চিঠি আটকে রেখেছেন। তিনি দাবি করেন, শিক্ষার্থীরা ২৩ দিন ধরে আন্দোলন করছে, উপাচার্য স্বাক্ষর করলেও ফাইলটি এখনও বিভাগে পৌঁছায়নি।
তিনি বলেন, “রেজিস্ট্রারকে কল দিয়েও পাইনি। পরে অফিসে গেলে জানানো হয়, তিনি নাকি মহানগর বিএনপির নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করছেন। পরে আমি ভেতরে ঢুকে জানতে চাই বিষয়টি কী, তখন তিনি ক্ষুব্ধ হয়ে আমাকে কক্ষ থেকে বের হয়ে যেতে বলেন।”

ভিডিওতে রেজিস্ট্রারকে আম্মারের প্রতি বারবার ‘গেট আউট’ বলতে এবং ক্ষোভ প্রকাশ করতে শোনা যায়। সালাহউদ্দিন বলেন, “আমি দায়িত্বের জায়গা থেকে বিষয়টি যাচাই করতে গিয়েছিলাম। আমি কোনো রাজনৈতিক দলের এজেন্ডায় কাজ করি না, শিক্ষার্থীদের স্বার্থেই গিয়েছিলাম।”

অন্যদিকে রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ইফতিখারুল আলম মাসুদ অভিযোগ করেছেন, জিএস অনুমতি ছাড়া হঠাৎ চেম্বারে ঢুকে বেয়াদবি করেছেন। তিনি বলেন,
“ক্লিনিক্যাল সাইকোলজি বিভাগের সভাপতির নিয়োগের সিদ্ধান্ত আগেই নেওয়া হয়েছিল, সেটি কার্যকর করার কাজ চলছিল। সেই সময় এনসিপির রাজশাহী মহানগরের নতুন কমিটির নেতারা আমার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাতে এসেছিলেন। কিন্তু সালাহউদ্দিন অপেক্ষা না করে হঠাৎ কক্ষে প্রবেশ করে অশোভন আচরণ করে। আমি তাকে বের হয়ে যেতে বলেছি।”

তিনি আরও বলেন, “ছাত্র-শিক্ষার্থী সংক্রান্ত বিষয়ে আলোচনা করতে রাকসু নেতারা আসতে পারেন, কিন্তু অফিস অর্ডার বা প্রশাসনিক বিষয়ে জিএসের সরাসরি জড়িত হওয়ার সুযোগ নেই। সে সীমা অতিক্রম করেছে।”

বিতর্কিত বৈঠক প্রসঙ্গে এনসিপি রাজশাহী মহানগর আহ্বায়ক মোবাশ্বের রাজ ফেসবুকে লিখেছেন, “ওই বৈঠকে বিএনপির কেউ ছিল না, আমরা এনসিপির নেতারা রেজিস্ট্রারের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাতে গিয়েছিলাম। পিএস সম্ভবত ভুলবশত আমাদের বিএনপি মনে করে তথ্য দিয়েছেন, সেখান থেকেই বিভ্রান্তি শুরু হয়।”

এ বিষয়ে প্রতিক্রিয়া জানিয়ে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের সভাপতি সুলতান আহমেদ রাহী বলেন, “রেজিস্ট্রার ও রাকসু জিএসের বাকবিতণ্ডায় বিএনপির নাম টেনে বিভ্রান্তি ছড়ানো উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। সেখানে বিএনপির কেউই ছিল না।”

ঘটনাটি এখন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়জুড়ে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু। প্রশাসন ও ছাত্র সংগঠনের সম্পর্কের টানাপোড়েনের এই ঘটনাকে অনেকে ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের চলমান অস্থিরতার প্রতিচ্ছবি’ বলছেন।

আরো সংবাদঃ

মন্তব্য করুনঃ

পাঠকের মন্তব্য

সর্বশেষ

সর্বাধিক পঠিত

20G