অগণন মুসলমানের প্রাণের পরিভাষাকে অমন কটাক্ষ করে কী করে?

প্রকাশঃ অক্টোবর ২১, ২০২০ সময়ঃ ৫:১৫ অপরাহ্ণ.. সর্বশেষ সম্পাদনাঃ ৫:১৫ অপরাহ্ণ

প্রথম বর্ষে ক্লাস করছি। স্যার প্রবেশ করলেন। সালাম দিলাম।নিলেন না। ধর্মীয় বিদ্যার ব্যাকগ্রাউন্ড নিয়ে যাওয়া,এই আমির মনে খচখচানি .. সতীর্থকে ফিসফিসিয়ে বললাম, স্যার যে সালামের জবাব দিলেন না! উন্মুখ প্রফেসর শুনলেন। বললেন,“সালাম দিয়েছো তাই না? ক্লাসে সালাম দেবে না। করিডরে চাইলে দিতে পারো।না দিলে খুশি হবো।” এই প্রফেসর ধর্মকর্ম করতেন। পরে দাড়িও রেখেছেন। তার উক্তির প্রত্যুত্তরে আমার জিহবা’পরে ঘুরছে পাককালামের অমিয় বাণী,
” ইয়া আইয়্যুহাল্লাজিনা আমানু লা তাদখুলু বুয়ুতান গাইরা বুয়ুতিকুম হাত্তা তাসতানিসু ও তুসাল্লামু আলা আহিলিহা।” ও হে মুমিনগণ,তোমরা কারো ঘরে/অন্দরে তার অনুমতি ও সালাম ব্যতিরেকে প্রবেশ করবে না।
এই প্রফেসর অনেক কিছু জানলেও ‘ইসলাম’ জানেন না। যা জানেন,তা খণ্ডিত ও ভয়ঙ্কর! এই অধ্যাপকদের জন্য আমার আজীবনের করুণা। আহা,এত জানিলে বাপ, যাহা জানিবার জিনিবার তাহা জানিলে না- জিনিলে না!
টকশোর অধ্যাপককে শুনলাম। তিনি আর যাই জানুন না কেন, ইসলাম জানেন না। উনি ইসলামকে জামায়াতে ইসলামের প্যাকেটে গুলিয়ে দিলেন! কোটি কোটি মানুষের আচরিত জীবন ব্যবস্থাপনার নাম আল দ্বীন আল ইসলাম। সেই অমোঘ বিধানের অনশ্বর অবিনাশী সৌন্দর্য হলো তার ভাববিনিময় প্রথা। সকালে বিকালে শব্দান্তর করে নয়,চব্বিশঘণ্টা ধরে একই চিরন্তন বাণী দিয়ে মানুষের শুভকামনা করা…আসসালামু আলাইকুম। এই প্রথা চির নতুন।শাশ্বত। অতুলনীয়। অজর। অক্ষয়। এর কোন বিকল্প হতে পারে না।
হতে পারে বিকল,বিনষ্ট রূপ! ওই অধ্যাপকের উচ্চারিত স্লামালেকুম,এই আদর্শের বিকৃতি মাত্র। খোদা হাফিজ এর বদলে আল্লাহ হাফিজ বলা নেহায়েত সৌন্দর্য ও সৌকর্যবর্ধক। অথচ তাতে তিনি জামায়াত বিএনপির ডিসকোর্স খুঁজে পান; সিঙ্গারা সমুচাভক্ষক…গবেষক বটে!
তার মতন অজস্র অযুত ধর্মজ্ঞ দিয়ে উচ্চায়তনিক পঠনপাঠন চলছে। ফলে অজ্ঞতা অজ্ঞানতা অন্ধকার জেঁকে বসেছে আমাদের বিদ্যায়,বিদ্যালয়ে। বিশ্ববিদ্যালয় বিদ্যায় মানুষ হবে উদার উন্নত উজ্জ্বল ও পরমতসহিষ্ণু। কিন্তু এরা সংকীর্ণ বিক্ষিপ্ত বিকলাঙ্গ ও পরশ্রীকাতর। তাদের বোধ বুদ্ধি বিচার বিবেচনা সাংঘাতিকভাবে একপেশে, হীনম্মন্যতায় ভরা ও অরুচিকর উগ্রতার নামান্তর। তারা সব না বুঝে বলে করে এমন নয়,হিংসায় জিঘাসায় অন্তরে বর্বরও বটে। নইলে অগণন মুসলমানের প্রাণের পরিভাষাকে অমন কটাক্ষ করে কী করে?
দেখুন, নামের আগেপরে উপাধি ডিগ্রি সংযোজন বিয়োজন মানুষকে ‘বিশেষ’ করে তুলতে পারে না।ওগুলো একাডেমিক কাগজ,বংশীয় তিলক আর প্রাপ্য বুঝে নেয়ার কৌশলমাত্র। আত্মার স্ফুর্তি,মননের বিকাশ, রূহের পরিশুদ্ধি অর্জনে বড় দালান,সুশোভন চেয়ার আর ভারভারিক্কির পদ আবশ্যক নয়। আবশ্যক চিন্তার শুদ্ধতা, বিধায়কের খাস অনুগ্রহ ও ব্যক্তির যাপিত জীবনের ইতিবাচক পারম্পর্য। হুট করে কেউ জাতে উঠতে পারে না! তবে হুট করেই পচে যেতে পারে যে কেউ; যেমন ঢাবির এই অধ্যাপক। তিনি নিশ্চয় ‘গাইরিল মাগদুব ও ওলাদ্দাল্লিন’ নইলে এহেন অধর্ম উচ্চারণ মুসলিম নামধারীর মুখে আসে কীভাবে?
আর যেটাই শিখুন,শেখান ভুলভাল আপত্তি নাই। ইলমে ইলাহির আলাপে নিজকে বিজ্ঞ বানাতে যাবেন না। খাদে পড়ে যাবেনই। আল্লাহ হেদায়াত দিন আমাদের।
শিক্ষক ও লেখক
মিজান বিন মজিদ

আরো সংবাদঃ

মন্তব্য করুনঃ

পাঠকের মন্তব্য



আর্কাইভ

April 2024
S S M T W T F
 12345
6789101112
13141516171819
20212223242526
27282930  
20G