কলম্বো সাহেবের রহস্যে ঘেরা সমাধি

প্রকাশঃ আগস্ট ৩, ২০২১ সময়ঃ ৮:৫৫ অপরাহ্ণ.. সর্বশেষ সম্পাদনাঃ ৮:৫৫ অপরাহ্ণ

কালের সাক্ষী হয়ে আছে কতশত দালানকোঠা। কত গল্প কত দু:খগাঁথা। আমাদের এই দেশেও রয়েছে এমনই অনেক ঘটনাবহুল ইতিহাস। কখনও কখনও সেখানে রহস্য ভর করে; সত্য আড়ালে থেকে।কেউ নিশ্চিত হয়ে বলতে পারে না কী এর গূঢ় সত্য। তেমনই এক রহস্যে ঢাকা সমাধি। 

পুরনো ঢাকায় অবস্থিত রহস্যময় এই সমাধি। শত শত বছর কেটে গেলেও এর রহস্যের কোনো কূলকিনারা হয়নি। এটি কলম্বো সাহেবের সমাধি নামেই পরিচিত। মুঘল স্থাপত্যরীতিতে বর্গাকার আকৃতির এই সমাধি দেখতে অনেকটাই তখনকার মসজিদের মতো মনে হয়।

ঢাকার ওয়ারীর নারিন্দায় আজও ঠাঁই দাঁড়িয়ে আছে কলম্বো সাহেবের সমাধি। একসময় বিভিন্ন ব্যবসায়িক কাজেই বিদেশিরা পাড়ি জমিয়েছেন ঢাকা শহরে। প্রথম পর্তুগিজরা, এরপর একে একে ওলন্দাজ, ফরাসি, আর্মেনীয়, গ্রিক ও ইংরেজরা ঢাকার মাটিতে পা রাখেন ব্যবসায়ের উদ্দেশে।

আর তাদের পথ ধরে মিশনারিরা আসেন ধর্ম প্রচারের উদ্দেশ্যে। ফলে অল্প সময়ের মধ্যেই ইউরোপীয়দের পদচারণায় মুখরিত হয়ে ওঠে ঢাকা। এক সময় তারা স্থায়ীভাবে ঢাকায় বসবাস শুরু করেন।

একে একে তারা গড়ে তুলতে শুরু করেন বিভি ন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, কারখানা, কুঠি, উপাসনালয়, এমনকি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানও। এমনকি ভীনদেশি হয়েও বাংলার মাটিতেই শেষ নিঃশ্বাসও ত্যাগ করেন তাদের অনেকেই।

ইউরোপীয়দের সমাহিত করার উদ্দেশেই সেখানে সমাধিস্থান তৈরি করা হয়। কবরস্থানের ভেতরের একটি ফলক থেকে জানা যায় ১৬০০ সালে এই জায়গাটিকে কবরস্থান হিসেবে তৈরি করা হয়।

একসময় এই সমাধিক্ষেত্রটি ছিল প্রাচীর ঘেরা। এই সমাধিক্ষেত্রে মোট ছয় ধরনের সমাধির দেখা পাওয়া যায়। বর্তমানে কলম্বো সাহেব সমাধিটি দেশের অন্যতম প্রত্নতাত্ত্বিক স্থাপনা। জানা যায়, ১৭২৪ সালে কলম্বো সাহেব নামক জনৈক এক ব্যক্তিকে এখানে সমাহিত করা হয়।

কলম্বো সাহেব সমাধিটি মোঘল স্থাপত্যরীতিতে বর্গাকারভাবে তৈরি করা হয়েছে। এর চারদিকের প্রতিটি দেয়ালে ৪টি করে প্রবেশপথ রয়েছে। সমাধিক্ষেত্রটির সামনের অংশে নকশা অঙ্কিত পিলার রয়েছে। সামনে রয়েছে অষ্টাভুজাকৃতির একটি পিলার ও পিলারে একটি পরীর ছবি আঁকা আছে।

কে এই কলম্বো সাহেব? তবে কোথাও পাওয়া যায়নি কলম্বো সাহেবকে। তবে জানা যায়, কলম্বো সাহেবের মৃত্যু হয়েছে ১৭৮৭ সালের আগে। কলম্বো সাহেবের প্রকৃত পরিচয় না মিললেও ইউরোপীয় শিল্পীর আঁকা ঢাকার প্রাচীনতম চিত্রকর্মেই দেখা পাওয়া যায় তার সমাধির।

ইউরোপীয় চিত্রশিল্পী জোহান জোফানির ১৭৮৭ সালে তেলরঙে আঁকা ‘নাগাপন ঘাট’ নামে একটি চিত্রকর্ম আঁকেন। সেই চিত্রকর্মে দেখা যায়, ছোট্ট একটি নদীর পাড়ে দুর্গের মতো দেখতে একটি স্থাপনা।

প্রতিক্ষণ/এড/অনি

আরো সংবাদঃ

মন্তব্য করুনঃ

পাঠকের মন্তব্য



আর্কাইভ

May 2024
S S M T W T F
 123
45678910
11121314151617
18192021222324
25262728293031
20G