পার্বত্যাঞ্চলে অপরাধের দায় কি শুধুই বাঙালির ?

প্রকাশঃ সেপ্টেম্বর ২৬, ২০২০ সময়ঃ ৪:০৯ অপরাহ্ণ.. সর্বশেষ সম্পাদনাঃ ৪:১২ অপরাহ্ণ

ধর্ষণ চিরদিনই জঘন্য কাজ ছিলো, আছে এবং থাকবে।কিন্তু এই ধর্ষণ ঘটনাকে কেন্দ্র করে সবচেয়ে বেশি রাজনীতি,সুশীলগিরি হয়ে থাকে বাংলাদেশে। ঘটনাভেদে সেটা Anti-State মানসিকতায়ও রূপ নেয়।

সম্প্রতি পাহাড়ে একজন উপজাতি প্রতিবন্ধী নারী ডাকাতদল কর্তৃক ধর্ষিত হয়েছেন। অত্যন্ত জঘন্য ও পাশবিক এই ঘটনার বিচার দাবি করছি। ইতোমধ্যে ৭ জন গ্রেপ্তার হয়েছেন চট্টগ্রাম হতে। রাষ্ট্রের বিচারালয় এর সর্বোচ্চ বিচার নিশ্চিত করবে, এমনটাই আশা করছি।

কিন্তু এই ধর্ষণ কে কেন্দ্র করে সুশীলদের গলায় ‘পাহাড়ে বাঙালি বসবাসের কারণে সব পাপাচার ও অনাচার’ এমন মনোভাব সম্পন্ন বক্তব্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম সয়লাব। যেন পাহাড়ে সব দোষ বাঙালির, যেমন মায়ানমারে সব দোষ রোহিঙ্গাদের।

ধর্ষণ নিজে একটি বড় অপরাধ, সেই সাথে এটি একটি Cohesive Criminal Offence ও।
মানে অনেক অপরাধের সাথে এটি সমান্তরালে সংযুক্ত থাকে।যেমন, কোন নারী অপহরণের শিকার হলেন। উদ্ধার হওয়ার পর পুলিশের প্রথম প্রশ্নই থাকে- যৌন হেনস্থার শিকার হয়েছেন কিনা??? বা নারী গৃহকর্মী নিগৃহীত হলে,সবার আগে সে যৌন নিগ্রহের শিকার হয়েছে কিনা, সেটা জিজ্ঞাসা করা হয়।

ডাকাতি হলে নারীর উপর যৌন আক্রমণের ইতিহাস এ অঞ্চলে সর্বজন জ্ঞাত। বিশেষত চর অঞ্চলে এই ধরণের ঘৃণিত অপরাধ সবচেয়ে বেশি ঘটেছে এবং ঘটে চলেছে।এমন আরো অনেক উদাহরণ দেয়া যায়।

কিন্তু পাহাড়ে হওয়া কোন অপরাধের বিশ্লেষণ কেন নৃতাত্ত্বিক ভাবেই করতে হবে, এট আমার মাথায় ঢোকে না।
নারী নির্যাতন কোন ধর্ম বর্ণ,নৃতাত্ত্বিক পরিচয় বা অন্য কোন সংজ্ঞায়ন বা বিশ্লেষণের মাধ্যমে উপস্থাপনার অবকাশ আদৌ
আছে কি…?

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রী যে কিনা দেশের সবচেয়ে প্রাধিকার প্রাপ্ত নারীদের একজন, সে যেমন পাশবিকতার শিকার তেমনি একই ভাবে পাশবিকতার শিকার উপজাতি নারীটিও। একই ভাবে সিলেটের এমসি কলেজে ঘটা ধর্ষণের ঘটনায় নির্যাতিত নারীটিও পুরুষ পাশবিকতার শিকার।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় বা সিলেটের ধর্ষণের ঘটনায় কেউ নৃতাত্ত্বিক ভাবে ব্যাখ্যা করছেন না কেন…? কেন এখানে কেউ বলছেন না- ছেলেটি রংপুরের বলে আজ চট্টগ্রামের মেয়েটি ধর্ষণের শিকার হলো’….

কেন এই ঘটনা নিয়ে এনজিও বা বৈদেশিক সংগঠন গুলো এগিয়ে আসছে না???কিন্তু একই রকম ধর্ষণের ঘটনায়- উপজাতি নারীটির ক্ষেত্রে দোষ দেয়া হচ্ছে পুরো বাঙালি জাতিকে….!

এখানে আনা হচ্ছে, পার্বত্য চুক্তি, বাঙালি বিতাড়নের মাধ্যমে মহৌষধী প্রেসক্রিপশন….!

একটি জাতিগত দ্বন্দের সব উপাদান ভরে দিয়ে যাচ্ছেন সবার মনে। প্রশ্ন থাকলো, পুরো বাঙালি বিতাড়নের পর পাহাড়ে কি কোনদিন আর ডাকাতি হবে না….? কোন ডাকাত কি আর কোন ধর্ষণ করবে না…?

এই গ্যারান্টি কি সুশীলরা দিতে পারবেন?????

 

এস এম নুরুন নবী

সাবেক শিক্ষার্থী, সাংবাদিকতা বিভাগ, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়

আরো সংবাদঃ

মন্তব্য করুনঃ

পাঠকের মন্তব্য



আর্কাইভ

May 2024
S S M T W T F
 123
45678910
11121314151617
18192021222324
25262728293031
20G