ভারতীয় উদোম নৃত্যের সিনেমাবহুল দেশে অনিরাপদ সাধারণ নারী

প্রকাশঃ সেপ্টেম্বর ৮, ২০১৭ সময়ঃ ৭:২০ অপরাহ্ণ.. সর্বশেষ সম্পাদনাঃ ৭:২০ অপরাহ্ণ

ভারতের কোয়েম্বাত্তুরে ৪ আগস্ট সোমবার কর্তব্যরত এক নারী পুলিশ সদস্যের সাথে সহকারী পুলিশ কমিশনার জয়ারাম যে নিকৃষ্ট মানসিকতার পরিচয় দিয়েছে একজন নারী হিসেবে আমি তার তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি। পুলিশ হয়েও মেয়েটি যেখানে একজন পুরুষ পুলিশ সদস্যের কাছে যে মোটেও নিরাপদ নয় তার জীবন্ত প্রমাণ দেখলাম অসভ্যটার কর্মকান্ডে। ভাগ্যিস কেউ একজন এ ভিডিওটি করে ঐ হনুমানটার মুখোশটা টেনে হিঁচড়ে সবার সামনে এনে দাঁড় করিয়েছিল। না হলে ঐ মহিলা পুলিশ অফিসারটা শুধু একাই এ কষ্টের ভাগিদার হতো। ধিক্কার জানাই, এ নুংরা মনের ও নিকৃষ্ট মানের এ মুখোশধারী সেবকের প্রতি যে নারীর গায়ে স্পর্শ করেই তার কুরুচিপূর্ণ বিকৃত ও অতৃপ্ত মানসিকতার স্বাদ মেটানোর ব্যর্থ চেষ্টা চালিয়ে গেছেন।

ধুম্মাচালে, মাই নেইম ইজ শিলা, উলালার মতো উদ্দাম যৌনতানির্ভর সিনেমার দেশে মেয়েরা কীভাবে নারী হিসেবে সম্মান পাবে? যেখানে প্রতিটি নায়িকায় এক একজন কুখ্যাত নিলজ্জ,বেহায়া। টাকার জন্য তারা নারীর প্রতি দৃষ্টিভঙ্গিটাই পাল্টে দিতে কুণ্ঠাবোধ করে না। ভারতীয় নারীদের চরম নিরাপত্তাহীনতা ও নারী হিসেবে প্রাপ্য সম্মান না পাওয়ার পেছনে এইসব নীল ছবি অবশ্যই ভূমিকা রাখছে। সিনেমা পাগল ভারতীয়রা নারীকে দেখলেই শিলার কথাই ভাবে। শিলার আহ্বানকে সব নারীর ইশারা মনে করে। সেখানে নারীতো নারীই; সে পুলিশ হোক আর সাধারণ কোনো মেয়ে হোক।

এমন একটা দেশে যখন কোনো নারী এদেশ ছেড়ে চলে গিয়ে নিজেকে নিরাপদ দাবি করে; তখন তাকে কোন দলে ফেলবেন তা নিশ্চয় বলে দিতে হবে না। কারণ সমাজকে ধ্বংস করছে এবং নারীর স্বাভাবিক চলাফেরাকে ব্যাহত করছে সেই নারীরাই; যারা নারী নামের আধুনিক অলিখিত পতিতা। খোলা ময়দানে জনসমক্ষে জনতার বিকৃত চাহিদার সুযোগে তৈরি হয় এসব ওপেন সিক্রেট সিনেমা।

ওদের এই স্বীকৃত পতিতাদের নিয়ে তৈরি ভালবাসার সিনেমা যখন এদেশের আমজনতা হা করে মজা নিয়ে দেখেন; তখন বড় লজ্জা লাগে। সেই দূষিত চোখগুলো যখন এদেশের নারীদের দিকে তাকাবে; তখন কি শিলা কি জাওয়ানির নায়িকাকে খোঁজার চেষ্টা করবে না? করলেই কি আর তাদের মতো আচরণ দেখতে পাবে? যখন পাবে না; তখন কী হবে? দূষিত চোখের বিষাক্ত নীল বিষ ততক্ষণে সারা দেহে-মনে ছড়িয়ে পড়েছে। যার ফলাফল বাসে একা পেয়ে নারীকে গণনির্যাতন। এরপরও তারা ক্ষান্ত হয় না। সারা দেহে ছড়িয়ে পড়া নীল বিষের ছোবল গিয়ে পড়ে গণস্রোতের মধ্যে থাকা নারীর ওপর। নীল বিষের দংশনে চিৎকার করা নারীর আর্তনাদ কেউ শুনতে পায় না। সবাই মত্ত হোলি নৃত্যে।

তাই এই বিষাক্ত সাপগুলোর বিষ ছাড়িয়ে দেশকে নীল নয় সবুজের ক্যানভাসে রূপান্তরিত করতে হবে। ঘরে ঘরে এসব নীলবিষ ছড়ানো সিনেমা দেখা বন্ধ করতে হবে। পরিবারের সদস্যদের ভালো সিনেমা দেখিয়ে সুস্থ-স্বাভাবিক-নির্মল মানসিকতার করে গড়ে তুলতে হবে। তাই আজই শক্ত হাতে দমন করুন এইসব বাজে সংস্কৃতিকে।

 

 

শারমিন আকতার

লেখক: সাংবাদিক

আরো সংবাদঃ

মন্তব্য করুনঃ

পাঠকের মন্তব্য



আর্কাইভ

May 2024
S S M T W T F
 123
45678910
11121314151617
18192021222324
25262728293031
20G