মেডিকেলে ভর্তি হওয়া নিয়ে দুশ্চিন্তায় নওগাঁর রহমান

প্রকাশঃ মার্চ ২১, ২০২৩ সময়ঃ ৮:০৪ অপরাহ্ণ.. সর্বশেষ সম্পাদনাঃ ৮:২১ অপরাহ্ণ

কৃষক বাবা আব্দুস সালাম ছেলের মেডিকেলে ভর্তি হওয়া নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন । মেডিকেল কলেজে ভর্তির সুযোগ পেয়েও নওগাঁর আব্দুর রহমানের  চিকিৎসক হওয়ার পথে বাঁধা হয়ে দাঁড়িয়েছে অর্থ।

তিনি চলতি বছর সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন। আগামী ২৭ মার্চ থেকে ৬ এপ্রিলের মধ্যে তাকে ভর্তি হতে হবে। কিন্তু যে পরিমাণ অর্থ লাগবে তা জোগান দেওয়ার সামর্থ্য রহমানের দরিদ্র বাবার নেই।

সাপাহার উপজেলার সীমান্তঘেঁষা পাতাড়ি গ্রামের সন্তান আব্দুর রহমান। বাবা আব্দুস সালাম একজন কৃষক ও মা সামেদা বেগম গৃহিনী। পৈত্রিক সূত্রে পাওয়া দেড় বিঘা জমির মালিক আব্দুস সালাম। এই জমিতে চাষাবাদ করে চলে পাঁচ সদস্যের পরিবার। আব্দুর রহমানরা দুই ভাই ও এক বোন। তিনি ভাই-বোনদের মধ্যে দ্বিতীয়। বড় ভাই হাফেজ আবু রায়হান। তিনি দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী। আর ছোট বোন রহিমা খাতুন এবার এসএসসি দেবে।

ছোটবেলা থেকেই মেধাবী আব্দুর রহমান। তার স্বপ্ন ছিল বড় হয়ে ডাক্তার হবেন। তাকে নিয়ে স্বপ্ন দেখতেন বাবা আব্দুস সালামও। সাপাহার উপজেলার আল হেলাল ইসলামী একাডেমি অ্যান্ড কলেজ থেকে ২০১৭ সালে জেএসসিতে ট্যালেন্টপুলে বৃত্তি, একই প্রতিষ্ঠান থেকে ২০২০ সালে মাধ্যমিকে গোল্ডেন এ প্লাস পেয়ে কৃতিত্বের সঙ্গে উত্তীর্ণ হন রহমান। এরপর রাজশাহী নিউ গর্ভমেন্ট ডিগ্রি কলেজ থেকে ২০২২ সালে উচ্চ মাধ্যমিকে গোল্ডেন এ প্লাস পেয়ে উত্তীর্ণ হন।

মেডিকেলে চান্স পাওয়া আব্দুর রহমান বলেন, ছোটবেলা থেকেই স্বপ্ন ছিল ডাক্তার হবো। ডাক্তার হয়ে মানুষের সেবা করবো। আমাকে নিয়ে বাবা-মায়ের অনেক স্বপ্ন। পরিবারে অভাব থাকার পরও বাবা তা বুঝতে দেননি। উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা দেওয়ার পর ডাক্তার হওয়ার স্বপ্ন নিয়ে পড়াশুনা শুরু করি। অর্থ সংকটে কোচিংয়ে ভর্তি হতে পারিনি। তবে রাজশাহীর একটি কোচিংয়ে শুধু পরীক্ষা দিতাম। আল্লাহর রহমতে ভর্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে সাতক্ষীরা মেডিকেলে সুযোগ পেয়েছি।

তিনি বলেন, আগামী ২৭ মার্চ থেকে ৬ এপ্রিলের মধ্যে ভর্তির সময় দেওয়া হয়েছে। কত টাকা লাগবে তা এখনো জানানো হয়নি। তারপরও ২৫ থেকে ৩০ হাজার টাকার মতো লাগবে। একসঙ্গে এতগুলো টাকা দেওয়ার সামর্থ্য পরিবারের নেই। অর্থ সংকটে ভর্তি হওয়া নিয়ে দুশ্চিন্তার মধ্যে রয়েছি।

ছেলে আব্দুর রহমান মেডিকেলে চান্স পাওয়া নিয়ে শুকরিয়া জানিয়ে বাবা আব্দুস সালাম বলেন, আমরা গরিব মানুষ। অনেক কষ্ট করে তিন ছেলে-মেয়েকে পড়াশোনা করাচ্ছি। ছেলেকে নিয়ে আমাদের অনেক স্বপ্ন। আল্লাহ ছেলেকে ডাক্তার হওয়ার সুযোগ করে দিয়েছেন। আর সে সুযোগকে এখন কাজে লাগাতে হবে। কিন্তু মেডিকেলে ভর্তি হতে যে পরিমাণ অর্থের প্রয়োজন তা আমার সাধ্যের বাইরে। এতগুলো টাকা আমার পক্ষে জোগাড় করা সম্ভব নয়।

তিনি বলেন, সমাজে অনেক হৃদয়বান ব্যক্তি আছেন। কেউ যদি একটু সহযোগিতার হাত বাড়ান তাহলে আমার ছেলের মেডিকেল পড়ার স্বপ্ন পূরণ হবে।

 

আরো সংবাদঃ

মন্তব্য করুনঃ

পাঠকের মন্তব্য



আর্কাইভ

April 2024
S S M T W T F
 12345
6789101112
13141516171819
20212223242526
27282930  
20G