সুস্থতা আল্লাহর নেয়ামত

প্রকাশঃ মে ২৫, ২০১৫ সময়ঃ ১:১৪ অপরাহ্ণ.. সর্বশেষ সম্পাদনাঃ ৪:৩৪ অপরাহ্ণ

নিজস্ব প্রতিবেদক :

well beingইসলামে স্বাস্থ্য ও চিকিৎসার গুরুত্ব অত্যধিক। কারণ ইবাদত করার জন্য শারীরিক শক্তি প্রয়োজন। আল্লাহর পথে জিহাদ করার জন্য, দ্বীন প্রচার করার জন্য, তাহাজ্জুদ নামাজ পড়ার জন্য শারীরিক শক্তি প্রয়োজন।

আল্লাহর নবী (সা.) বলেন, হে আমার উম্মত, পাঁচটি সম্পদ হারানোর আগে তার মর্যাদা দাও। ১. মারা যাওয়ার আগেই তোমার জীবনের প্রতি মুহূর্তকে কাজে লাগাও। ২. বুড়ো হওয়ার আগে যৌবনকে কাজে লাগাও। ৩. দারিদ্র্যের আগে সচ্ছলতার মূল্য দাও। ৪. অসুস্থতার আগে স্বাস্থ্যকে মূল্য দাও। ৫. ব্যস্ততার আগে অবসরকে কাজে লাগাও (মুসতাদরিকে হাকেম)।

মহানবী (সা.) আমাদের অসুস্থ হওয়ার আগে স্বাস্থ্যকে সৎ কাজে ব্যবহার করার জন্য উৎসাহিত করেছেন। তিনি বলেছেন, স্বাস্থ্যকে কাজে লাগাও, স্বাস্থ্যকে রক্ষা করো। আল্লাহর নবী তার সাহাবিকে যিনি সারা দিন রোজা রাখেন, সারা রাত নফল নামাজ পড়েন, ডেকে বললেন, হে আমার সাহাবি, জেনে রাখ, ‘নিশ্চয় তোমার ওপর তোমার শরীরের হক রয়েছে।‘(বোখারি ২.৬৯৭)

আমার এ শরীর আমার নয়, এটি ব্যবহার করার জন্য আমাকে দেয়া হয়েছে। কিছু দিনের জন্য এটি শুধু আল্লাহর দেয়া আমানত। আমি দাবি করি এটি আমার হাত, আমার শরীর, এটি আমার পা। হোটেলে রুম যারা ভাড়া নেয়, তারাও দাবি করে এটি আমার রুম। হোটেলের রুমকে আমার রুম দাবি করা যেমন সাময়িক, এটির আসল মালিক আমি নই। একইভাবে হাত, পা, অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ আমার এ দাবিও সাময়িক। আসল মালিক আল্লাহ তায়ালা। এটিকে যত্রতত্র ব্যবহার করার জন্য দেয়া হয়নি।

ইসলামী ফিকাহ্, ইসলামী আইন ও ইসলামী বিধিবিধান প্রণয়নের ক্ষেত্রে পাঁচটি উদ্দেশ্যকে সামনে রেখে প্রণয়ন করা হয়েছে। আরবিতে বলা হয় (মাকাসেদে শরিয়া) শরিয়তের উদ্দেশ্য।

প্রথমত, মানবজাতির শরীরকে রক্ষা করা, প্রাণকে হেফাজত করা। এজন্য হত্যা নিষিদ্ধ। একজন আরেকজনকে হত্যা করতে পারে না।

দ্বিতীয়ত, মানুষের বিবেক-বুদ্ধি ও মানসিক স্বাস্থ্যকে রক্ষা করা। যেই জিনিসের কারণে মানুষের মানসিক স্বাস্থ্য নষ্ট হয়ে যায়, সেগুলোকে ইসলাম হারাম করেছে। যত নেশা উদ্রেককারী উপাদান হতে পারে ইসলাম তা হারাম করেছে।

তৃতীয়ত, স্বাস্থ্যকে হেফাজত করা, বংশকে হেফাজত করা। জেনা করা ও ব্যভিচার করা হারাম। কারণ ব্যভিচার করলে মানুষের বংশ নষ্ট হয়ে যায়। মানুষের পরিচিতি নষ্ট হয়ে যায়। এজন্য কোনো মেয়ের একই সময় একাধিক বিবাহ করা হারাম। একজন মহিলা একজন স্বামী গ্রহণ করতে পারে। একাধিক স্বামী একসঙ্গে গ্রহণ করতে পারে না। একটি নারী যদি একই সময় একাধিক স্বামী গ্রহণ করে তখন তার গর্ভে যে বাচ্চা আসবে তা কোন পিতার নির্ণয় করতে কঠিন হবে। এজন্য মহিলাদের একাধিক বিবাহ একই সময় ইসলাম হারাম করেছে।

চতুর্থত, মানুষের ইজ্জতকে হেফাজত করা। এজন্য অযথা কারও সমালোচনা করা, কারও গিবত করা ইসলামে হারাম। কারও বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ ও বানোয়াট কথা প্রচার করা হারাম। কেউ কারও বিরুদ্ধে যদি মিথ্যা অভিযোগ প্রচার করে, আদালতে এসে যদি সাক্ষী পেশ করতে না পারে, তা হলে ইসলামী আইন অনুযায়ী তাকে ৮০টি বেত দেয়া হবে। ইসলামের দৃষ্টিতে এ লোক আজীবনের জন্য ফাসেক হয়ে যাবে। আদালতে তার সাক্ষী আর গ্রহণযোগ্য হবে না। (সূরা নূর : ৪)।

পঞ্চম, মানুষের সম্পদের হেফাজত করা। চুরি, রাহাজানি, ডাকাতি ইত্যাদি করা হারাম। ফিকাহর কিতাবগুলো থেকেও আমরা শিখলাম যে, শরিয়া আইনের টার্গেটের মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ একটি হলো মানুষের স্বাস্থ্য রক্ষা করা।

প্রতিক্ষণ/এডি/নুর

আরো সংবাদঃ

মন্তব্য করুনঃ

পাঠকের মন্তব্য



আর্কাইভ

May 2024
S S M T W T F
 123
45678910
11121314151617
18192021222324
25262728293031
20G