শিক্ষক রাজীব মীর কি আসলেই দোষী ???

প্রকাশঃ এপ্রিল ১৮, ২০১৬ সময়ঃ ১০:০৫ অপরাহ্ণ.. সর্বশেষ সম্পাদনাঃ ১০:২০ অপরাহ্ণ

রাকিব হাসান

razib mirঅসুস্থতার কারণে আজ বিশ্রামে ছিলাম, অফিসে যাইনি। কিন্তু হঠাৎ এত বেশি ফোন, মেসেজ আসা শুরু হলো যে অস্থির হয়ে ওঠলাম। সবাই ফোন দিয়ে জানতে চাচ্ছে রাজীব মীরের কী অবস্থা? এরপর খবর নিতে শুরু করলাম আসলে কী ঘটেছে?

বিভিন্ন সময়ে নারী নিপীড়নকারীদের বিরুদ্ধে রাজীব মীর সোচ্চার ছিলেন। মানববন্ধন করেছেন, বক্তব্য দিয়েছেন। টকশো করেছেন। মাত্র কয়েকদিন আগে উনার বিয়ে খেয়ে আসলাম। আর আজ দেখি তার বিরুদ্ধে ছাত্রী লাঞ্চনার অভিযোগ ?

বিশ্বাস অবিশ্বাসের তর্কে আমি যাচ্ছিনা। তবে তাকে চিনি ২০০১ সাল থেকে। তিনি কবি- লেখক। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের যোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সাবেক চেয়ারম্যান; বর্তমানে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিকতা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক। চবিতে বিভিন্ন সময়ে তাকে নিয়ে বিতর্ক থাকলেও কখনও কাউকে সরাসরি নৈতিক স্থলনের অভিযোগ করতে শুনিনি। লেডিস হলে তাকে আটকে রাখার ঘটনাসহ তার বিরুদ্ধে লিফলেট প্রচারের ঘটনা পত্রিকায় পড়েছি। তার কাছ থেকে জানতে পারি, প্রগতিশীল চিন্তাভাবনার অধিকারী হবার কারণে এবং শিক্ষার্থীদের কাছে ব্যাপক জনপ্রিয়তার কারণে তিনি জামায়াতপন্থীদের ষড়যন্ত্রের শিকার হয়েছেন। তদন্তে দোষী সাব্যস্ত হননি; তাই স্ব-পদে বহাল ছিলেন।

এবার জগন্নাথে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠলো এমন সময়ে যখন তিনি ব্যাচেলর জীবনের ইতি টানলেন। তার ঘনিষ্ঠজনদের কেউ কেউ আমাকে ফোনে জানিয়েছে, মূলত ডিপার্টমেন্টের চেয়ারম্যানের সাথে নবীন বরণ নিয়ে কোন্দলের সূচনা। ভিসি ছিলেন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি। শিক্ষক রাজীব মীর, প্রিয়াঙ্কা ও বর্ণণাকে অনুষ্ঠানে দাওয়াত দেয়া হয়নি বলে তারা অনুষ্ঠানে উপস্থিত হননি। এর সূত্র ধরে চেয়ারম্যান শিক্ষার্থীদের ভিসি বরাবর অভিযোগ দিতে প্ররোচিত করেন। সে প্রেক্ষিতে প্রাথমিক তদন্তে মাস্টার্সের ক্লাস থেকে রাজীব মীর ও অপর দুই শিক্ষককে অব্যাহতি দেয়া হয়। কিন্তু আরেকটি ঘনিষ্ঠ সুত্র বলছে এটা হচ্ছে রাজীবের বিয়ে পরবর্তী রি-অ্যাকশন। কারণ স্যারের বান্ধবীর তালিকা দীর্ঘ ছিলো।অনেকেই তার বিয়ের বিষয়টি মেনে নিতে পারেননি।তাই ফেসবুকে তার স্ত্রীর সাথে একের পর এক ছবি আপলোড দেখে তারা আর সহ্য করতে পারেনি। যেকারণে তাকে ফাঁদে ফেলা হয়েছে।

রাজীব মীরের সাথে টেলিফোনে কথা হয়। তিনি জানান, আবারো ষড়যন্ত্রের শিকার হয়েছেন তিনি। বিভাগের চেয়ারম্যানের সাথে নবীনবরণ নিয়ে মতবিরোধ থাকায় তিনি এক ছাত্রীকে ফোনে ঐ অনুষ্ঠানে যেতে নিষেধ করেছেন, কোন কু-প্রস্তাব দেননি। কাজেই কু-প্রস্তাব বা নম্বর কমিয়ে দেয়া বাড়িয়ে দেয়ার কথা ফোন রেকর্ডে আছে বলে যা দাবি করা হচ্ছে তা ভিত্তিহীন। তাদের বিরুদ্ধে তিনি আইনগত ব্যবস্থা নেবেন। এছাড়া দুই নারী শিক্ষক তার অনুরোধে অনুষ্ঠানে যোগ না দেয়ায় তাদেরও অন্যায়ভাবে মাস্টার্সের ক্লাস থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।

কোনটি সত্য কোনটি মিথ্যা আমি সে বিতর্কে যাচ্ছি না। শুধু এটুকু বলবো, যারা একজন শিক্ষকের বিরুদ্ধে অভিযোগ এনেছে অবশ্যই তাদের তা প্রমাণ করতে হবে। আর রাজীব মীরকেও ভড়কে না গিয়ে আগামীকাল বিশ্ববিদ্যালয় তদন্ত কমিটির কাছে নিজেকে প্রমাণ করতে হবে, তিনি নির্দোষ। যদি অভিযোগ প্রমাণিত হয়, শাস্তি তার প্রাপ্য । কিন্তু যদি অভিযোগ প্রমাণিত না হয়, তাহলে বিশ্ববিদ্যালয়ের উচিত অভিযোগকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া। একই সাথে মানহানির অভিযোগে ওদের বিরুদ্ধেও রাজীব মীরের মামলা করা উচিত।

রাকিব হাসান, রিপোর্টার, একুশে টেলিভিশন

আরো সংবাদঃ

মন্তব্য করুনঃ

পাঠকের মন্তব্য



আর্কাইভ

April 2024
S S M T W T F
 12345
6789101112
13141516171819
20212223242526
27282930  
20G