সন্ত্রাসী হামলায় পূজানুষ্ঠান পন্ড

প্রকাশঃ নভেম্বর ২৭, ২০১৫ সময়ঃ ৭:৫১ অপরাহ্ণ.. সর্বশেষ সম্পাদনাঃ ৭:৫১ অপরাহ্ণ

জেলা প্রতিনিধি

barisalআগৈলঝাড়ায় রাসপূর্ণিমায় আয়োজিত লক্ষ্মীপূজার অনুষ্ঠানে স্থানীয় সন্ত্রাসীদের হামলায় সংখ্যালঘু পল্লীর পূজানুষ্ঠান পন্ড হয়েছে। এসময় সন্ত্রাসীদের বাঁধা দিলে তাদের হামলায় মহিলাসহ কমপক্ষে ১০জন আহত।

স্থানীয় সালিশ মীমাংসা চলাকালে ওসি’র নেতৃত্বে ৭জনকে আটক করে থানায় আনার পর রাতের আঁধারে বিপুল পরিমাণ অর্থের বিনিময়ে তাদের ছেড়ে দিয়েছে পুলিশ। এ ঘটনায় পুণরায় সন্ত্রাসী হামলার আশঙ্কায় ওই সংখ্যালঘু পল্লীর বাসিন্দারা চরম আতঙ্কের মধ্যে রয়েছেন। পুলিশের নেতিবাচক কর্মকান্ডে জনমনে ক্ষোভ দানা বেঁধে উঠেছে। এ ঘটনা ঘটেছে উপজেলার বাকাল ইউনিয়নের পূর্ব পয়সারহাট গ্রামে বুধবার ও বৃহস্পতিবার রাতে।

স্থানীয় ও প্রত্যক্ষদর্শী একাধিক সূত্র জানায়, আগৈলঝাড়া-পয়সারহাট মহাসড়কের পাশে ওই গ্রামের বঙ্কিম হালদারের উঠানে বাড়ির অন্যান্য বাসিন্দারা মিলে প্রতিবছরের মত এ বছরও রাসপূর্ণিমা উপলক্ষে লক্ষ্মীপূজার আয়োজন করে। গত বুধবার রাতে পূজা উপলক্ষে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান চলাকালে চেয়ারে বসা নিয়ে আয়োজনকারীদের সাথে বাকবিতন্ডা হয়। বাকবিতন্ডার জের ধরে স্থানীয় আক্কাস দেওয়ানের ছেলে পলাশ দেওয়ান ওরফে তুমুল (২৮) ও সবুজ দেওয়ান (২০) এর নেতৃত্বে একই গ্রামের মজিদ খানের ছেলে মাইনুল (২৪), শহিদ দেওয়ানের ছেলে হামিদুল (২০), ঠান্ডা তালুকদারের ছেলে অলিদ তালুকদার (২০), ফিরোজ খন্দকারের ছেলে রিয়াজুল (১৮), আলমগীর তালুকদারে ছেলে রনি (২০), শাহ আলম তালুকদারের ছেলে শরিফুল (১৮), আশরাফ আলী দেওয়ানের ছেলে সোহেল (২০), সেকেন্দার আলী খন্দকারের ছেলে মিনহাজ (২০), লায়েক দেওয়ানের ছেলে মিজান (২০), ফয়সাল খন্দকারসহ ১৫-২০ জনের একটি সন্ত্রাসী দল পূজানুষ্ঠানে হামলা চালিয়ে পূজার গেট ভেঙ্গে লাইটিং, ডেকোরেশন ও পূজামন্ডপ তছনছ করে দেয়। এসময় হামলাকারীদের বাঁধা দিতে গিয়ে ঐ বাড়ির জুরান হালদার, তার স্ত্রী সীমা রানী, একই বাড়ির কাজল রানী, প্রতিভা হালদার, যুথিকা রানী, পাপন হালদারসহ কমপক্ষে ১০জন আহত হয়।

সন্ত্রাসী হামলার ঘটনায় বৃহস্পতিবার রাতে বঙ্কিমের উঠানে স্থানীয়ভাবে সালিশ বৈঠকের আয়োজন করা হয়। ওই সালিশ বৈঠকে বাকাল ইউপি চেয়ারম্যান বিপুল দাস, আওয়ামীলীগ নেতা আবুল বাশার হাওলাদার বাদশা, জব্বার তালুকদার, যুবলীগ নেতা ফিরোজ সিকদার, জেবারুল খান, আলমগীর খন্দকার, জুয়েল খন্দকার, যুবদল নেতা মাসুদ বখতিয়ারসহ স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন।

সালিশ বৈঠক চলাকালে আগৈলঝাড়া থানার ওসি মনিরুল ইসলাম রাত সাড়ে নয়টার দিকে আকস্মিকভাবে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন। এসময় সালিশবৃন্দ স্থানীয়ভাবে বিচারের আশ্বাস দিলেও ওসি তাদের কথা না রেখে উপরে উল্লেখিত ৭জনকে আটক করে থানায় নিয়ে আসেন। পরে সালিশদার আবুল বাশার হাওলাদার, ফিরোজ সিকদার ও স্থানীয় চেয়ারম্যান বিপুল দাস তাদের ছাড়িয়ে নিতে থানায় যান। গভীর রাতে বিপুল পরিমাণ অর্থের বিনিময়ে আটক হামলাকারীদের ছেড়ে দেন ওসি।

আওয়ামীলীগ নেতা আলহাজ্ব আবুল বাশার হাওলাদার বলেন, হিন্দুপাড়ায় পূজার অনুষ্ঠানে এভাবে হামলা নেক্কারজনক একটি ঘটনা।
আগৈলঝাড়া থানার ওসি মনিরুল ইসলাম সাংবাদিকদের কাছে টাকা নেয়ার কথা অস্বীকার করে বলেন, আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি অবনতির আশঙ্কার তাদের আটক করা হয়েছিল। তাদের বিরুদ্ধে ঐ বাড়ির লোকজনের কোন অভিযোগ না থাকায় ইউপি চেয়ারম্যান ও অন্যান্যদের মুচলেকা নিয়ে তাদের ছেড়ে দেয়া হয়েছে।

এ ঘটনায় পুনরায় সন্ত্রাসী হামলার আশঙ্কায় ওই সংখ্যালঘু পল্লীর বাসিন্দাদের মধ্যে চরম আতঙ্ক বিরাজ করছে। এছাড়া পুলিশের ধরা ছাড়ার অর্থবাণিজ্যের মত নেতিবাচক কর্মকান্ডে স্থানীয় জনসাধারণের মনে চরম ক্ষোভ দেখা দিয়েছে।
প্রতিক্ষণ/এডি/এআরকে

আরো সংবাদঃ

মন্তব্য করুনঃ

পাঠকের মন্তব্য



আর্কাইভ

May 2024
S S M T W T F
 123
45678910
11121314151617
18192021222324
25262728293031
20G