ইসলামের দৃষ্টিতে কসম

প্রকাশঃ মার্চ ১২, ২০১৫ সময়ঃ ১১:৫০ পূর্বাহ্ণ.. সর্বশেষ সম্পাদনাঃ ১১:৫০ পূর্বাহ্ণ

ধর্ম চিন্তা ডেস্ক, প্রতিক্ষণ ডটকম:

oatকসম বা শপথ শব্দের মূল অর্থ ডান হাত। এটি কসম অর্থে ব্যবহৃত হওয়ার কারণ হলো, তখনকার লোকজন শপথ করার সময় একে অপরের হাত ধরত।

শরীয়তের পরিভাষায় يمين তথা কসম বলা হয়, আল্লাহ তাআলার নাম কিংবা সিফাত উল্লেখ করে শপথকৃত বিষয়টির প্রতি গুরুত্বারোপ করা।

শপথ দুই প্রকার

(এক) আল্লাহ তাআলার কোন সৃষ্টি নিয়ে শপথ করা।

যেমন- কাবা শরীফ, নবী, আমানত, জীবন, প্রতিমা অথবা আউলিয়া। এ প্রকার শপথ হারাম ও শির্‌ক। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, শুনে রাখ; আল্লাহ তাআলা তোমাদেরকে বাপ-দাদার নামে শপথ করতে নিষেধ করেছেন। তোমাদের কেউ শপথ করলে আল্লাহ্‌র নামেই করবে অথবা নীরবতা অবলম্বন করবে।[বুখারি ৬১৫৫]

নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন : যে ব্যক্তি গাইরুল্লাহ্‌র নামে কসম করল সে শির্‌ক করল। [আবু দাউদঃ ২৮২৯]। এ ধরনের হারাম কসম ভঙ্গ করলে কোন কাফফারা নেই। কেননা গাইরুল্লাহ্‌র নামে শপথ করা শিরক। আর তা ভঙ্গ করা তাওহীদ। এ কারণেই যে ব্যক্তি গাইরুল্লাহ্‌র নামে শপথ করে তার তওবা করা উচিৎ।

রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন : যে ব্যক্তি লাত ও উয্‌যার শপথ করল তার বলা উচিৎ-لا إله إلا الله – তাছাড়া আল্লাহ তাআলার নাম ও সিফাতসমূহের সম্মান রক্ষার্থে তার নামে কসম করে ভঙ্গ করলে কাফফারা দিতে হয়। এ ক্ষেত্রে অন্য কোন বস্তু তার সমকক্ষ নয়।

(দুই) আল্লাহ তাআলার নাম ও সিফাতের শপথ করা

এটি চার প্রকার

১- শপথের ইচ্ছা ব্যতীত এমনিতেই  ( না, আল্লাহর কসম) বা (হ্যাঁ, আল্লাহর কসম) মুখে উচ্চারণ করা। এ প্রকারের কসম নিরর্থক। এর কারণে কোন কিছু লাযিম হয় না। তবে আল্লাহ্‌র মহত্ত্বের প্রতি লক্ষ্য করে এ থেকেও পরহেয করা উচিৎ।

ইরশাদ হচ্ছে : আল্লাহ তাআলা কসমের ক্ষেত্রে নিরর্থক কসমের জন্য তোমাদের পাকড়াও করবেন না কিন্তু তিনি তোমাদেরকে ঐ কসমসমুহের জন্যে পাকড়াও করবেন যে গুলোকে তোমরা দৃঢ় কর।(সুরা মায়েদাহ :৮৯)

২ – অতীতকালীন কোন বিষয়ের ব্যাপারে সত্য মনে করে কসম করা। পরে দেখা গেল বিষয়টি উল্টো। এটি নিরর্থক।

৩ – অতীতের কোন বিষয়ে জেনে শুনে মিথ্যা কসম করা। এটি সম্পূর্ণ হারাম। এ ব্যাপারে ভীতি প্রদর্শন করা হয়েছে। এটি কবীরা গুনাহের অন্তর্ভুক্ত।

৪ – ভবিষ্যতের কোন সম্ভাব্য বিষয়ে ইচ্ছাকৃতভাবে শপথ করা। এ ধরণের শপথের ক্ষেত্রেই কাফফারা ওয়াজিব হয়। তবে

তিনটি শর্ত সাপেক্ষে :

(১) শপথকারী মুসলমান, বালেগ ও বিবেকসম্পন্ন হওয়া।
(২) নিজ ইচ্ছায় কসম করা। অতএব, বাধ্য হয়ে কসম করলে কাফফারা দিতে হবে না।
(৩) ইচ্ছা করে কসম ভঙ্গ করা। অতএব, বাধ্য হয়ে অথবা ভুলক্রমে কসম ভঙ্গ করলে কাফফারা ওয়াজিব হবে না। উল্লেখিত তিনটি শর্ত পাওয়া গেলে কাফফারা ওয়াজিব হবে।

কসমের কাফফারা নিম্নরূপ :

(তিনটির যে কোন একটি)

(১) দশজন মিসকীনকে খানা খাওয়ানো। প্রত্যেককে অর্ধ সা চাউল ইত্যাদি দেবে।

(২) দশজন মিসকীনকে সালাত আদায় করতে পারে এতটুকু পোশাক দেয়া।

(৩) ত্রুটিমুক্ত একজন মুমিন দাস মুক্ত করে দেয়া।

কাফফারা আদায়কারী তিনটির যে কোন একটি বেছে নিবে। যদি উল্লেখিত কোন একটি না পায় তাহলে একাধারে তিন দিন রোযা রাখবে।

প্রতিক্ষণ/এডি/আকিদ

আরো সংবাদঃ

মন্তব্য করুনঃ

পাঠকের মন্তব্য



আর্কাইভ

May 2024
S S M T W T F
 123
45678910
11121314151617
18192021222324
25262728293031
20G