হামদ ও নাতের বুলবুল নজরুল
নিজস্ব প্রতিবেদক :
জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বাংলা সঙ্গীতকে সাজিয়েছেন বর্ণিল সাজে। চিরাচরিত বাংলা গানের গতানুগতিক ধারাকে ভেঙে দূর করেছেন একঘেয়েমি। আসলে তার জন্মই যেন হয়েছিল নতুন থেকে নতুনতর কিছু করার জন্য।
অসামান্য প্রতিভাবান কবি কাজী নজরুল ইসলামের ছিল মুহূর্তে রচনা করার জাদুকরি ক্ষমতা। কাজী নজরুল ইসলামের লেখা গজলের সংখ্যা তিন শতাধিক।
তিনি আল্লাহপাকের প্রশংসায় লিখেছেন হামদ। রাসুল (সা.) কে নিয়ে নাত। মহানবী (সা.) এর জীবন ও তাঁর রূপ-সৌন্দর্য বোঝাতে গিয়ে তিনি যে উপমা ও বর্ণনার ভঙ্গি তুলে ধরেছেন, তার সুরের ঔদার্য ও শব্দের অলঙ্কারে যে ব্যাকুলতা ছড়িয়ে দিয়েছেন, সে উপমা আজও বিরল। কবি আল মাহমুদ বলেছেন, ‘কাজী সাহেব উপরে ছিলেন সাধারণ মানুষ আর ভেতরে ছিলেন দারুণ ক্লাসিক্যাল।’ নজরুল ইসলাম বাংলা ভাষায় সর্বাধিক হামদ-নাতের রচয়িতা।
কাজী নজরুল ছিলেন গজল গানের প্রবর্তক। শুধু প্রবর্তকই নন; ছিলেন শ্রেষ্ঠ। প্রভুর প্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়ে লিখেছেন, ‘আল্লাহ আমার প্রভুথ আমার নাহি নাহি ভয়, আমার নবী মুহাম্মদথ যাঁহার তারিফ জগৎময়’। ‘আল্লাহ নামের বীজ বুনেছি এবার মনের মাঠে, ফলবে ফসল বেচব তারে কিয়ামতের হাটে’।
রাসুলের প্রেমে তিনি লিখেছেন ১০০-এর বেশি গজল। তার নাতের একটি বিশেষ বৈশিষ্ট্য ছিল সব গীতিকার থেকে ভিন্ন। অন্য সবাই সৃষ্টির শ্রেষ্ঠত্ব দিয়ে রাসুলের প্রশংসা করেছেন। কিন্তু নজরুল বলেছেন, সৃষ্টিই শ্রেষ্ঠ হয়েছে রাসুলকে পেয়ে। যেমন ‘মুহাম্মদের নাম জপেছিলি বুলবুলি তুই আগে, তাই কি রে তোর কণ্ঠের গান এমন মধুর লাগে’। রাসুলের আগমনে লিখেছেন, ‘ত্রিভুবনের প্রিয় মুহাম্মদ এলো রে দুনিয়ায়, আয়রে সাগর আকাশ বাতাস দেখবি যদি আয়।’
কবি নজরুল শুধু প্রভু ও রাসুলের কথা লিখেই হাত গুটাননি; লিখেছেন মুসলমানদের অতীত-গৌরব এবং বর্তমান দুর্দিনের কথাও। শ্রেষ্ঠত্ব বর্ণনায় বলেছেন,
‘ধর্মের পথে শহীদ যাহারা আমরা সেই সে জাতি,
সাম্য-মৈত্রী এনেছি আমরা বিশ্ব করেছি জ্ঞাতি।
আমরা সেই সে জাতি’।
‘মুসলমানদের জাগরণে লিখেছেন, বাজিছে দামামা বাঁধরে আমামা শির উঁচু করি মুসলমান’, ‘তাওফিক দাও খোদা ইসলামে’।
প্রতিক্ষণ/এডি/নুর














