নতুন মুদ্রানীতি ঘোষণা
নিজস্ব প্রতিবেদক
চলতি অর্থবছরের দ্বিতীয়ার্ধের (জানুয়ারি-জুন)জন্য মুদ্রানীতি ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
বৃহস্পতিবার সকালে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের জাহাঙ্গীর আলম কনফারেন্স হলে নতুন মুদ্রানীতি ঘোষণা করেন গর্ভনর ড. আতিউর রহমান ।
বিনিয়োগকারীদের উৎসাহ দিতে ব্যাংকিং খাতে সুদ হার দশমিক ৫০ শতাংশ কমিয়ে রেপোতে ছয় দশমিক ৭৫ এবং রিভার্স রেপোতে চার দশমিক ৭৫ শতাংশ নির্ধারণ করা হয়েছে।
গর্ভনর বলেন, উৎপাদন ও মূল্য পরিস্থিতির সঙ্গে সঙ্গতি রেখে আমরা সংযত কিন্তু সমর্থনমূলক মুদ্রানীতি ভঙ্গি দিয়ে যাচ্ছি। এবারে আমরা মূদ্রানীতিতে সুদহারগুলো কমিয়েছি। বাজারের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে রেপো এবং রিভার্স রেপো হার ৫০ বেসিস পয়েন্ট কমিয়ে যথাক্রমে ৬.৭৫ ও ৪.৭৫ শতাংশ করা হয়েছে। এছাড়া ব্যাপক মুদ্রা ও বেসরকারি খাতের ঋণ যোগানের প্রবৃদ্ধি প্রক্ষেপিত হয়েছে যথাক্রমে ১৫.০ ও ১৪.৮ শতাংশ। এই লক্ষ্যমাত্রা আগের মুদ্রানীতির লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে সামান্য কম, তবে প্রকৃত অর্জনের চেয়ে যথেষ্ট বেশি।
এছাড়া এতে চলতি অর্থবছরের সরকার ঘোষিত প্রবৃদ্ধি লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে বিনিয়োগ ও কর্মসংস্থান বাড়ানোর ওপর বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।
আতিউর রহমান বলেন, ডিসেম্বর মাস শেষে খাদ্য ও জ্বালানি বহির্ভূত কোর মূল্যস্ফীতি দাঁড়িয়েছে ৬.৮ শতাংশ, যা মূল্যস্ফীতিকে ঊর্ধ্বমুখী চাপে রেখেছে। তাই মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে সতর্ক হওয়ার প্রয়োজন রয়েছে। সাম্প্রতিক অর্থনৈতিক সূচকগুলো চলতি বছরের উচ্চ প্রবৃদ্ধির ইঙ্গিত দিচ্ছে। বিশ্ব অর্থনীতিতে মন্দার পরিবেশেও আমাদের রফতানি বাড়ছে। বছর শেষে মূলধনী যন্ত্রপাতি আমদানির পরিমাণ ব্যাপকভাবে বেড়েছে।
তিনি আরও বলেন, বৈদেশিক সূত্রের অর্থায়নসহ বেসরকারি খাতে ঋণ প্রবৃদ্ধি জুনের ১৩.২ শতাংশ থেকে বেড়ে নভেম্বরে ১৩.৭ শতাংশে উন্নীত হয়েছে। আমানত ও ঋণের সুদহার কমেছে এবং এ দুটি সুদহারের ব্যবধান অর্থাৎ স্প্রেড ৫ শতাংশের নিচে নেমে এসেছে। তবে এই স্প্রেড আরো কমানোর জন্য ব্যাংকগুলোকে আমরা তাগিদ দিয়ে যাচ্ছি।
অভ্যন্তরীণ এবং বহির্বিশ্ব উভয় খাতের অর্থনৈতিক উন্নয়নের প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশ ব্যাংক চলতি অর্থবছরে মোট দেশজ উৎপাদনে ৬.৮-৬.৯ শতাংশ প্রবৃদ্ধি এবং ৬.১ শতাংশ মূল্যস্ফীতি প্রক্ষেপণ করছে। তবে বর্তমান রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা বজায় থাকলে অর্থবছর শেষে এই প্রবৃদ্ধির হার ৭ শতাংশও স্পর্শ করতে পারে।
প্রসঙ্গত, গত ৩০ জুলাই চলতি অর্থবছরের প্রথমার্ধের মুদ্রানীতি ঘোষণা করা হয়। এতে বেসরকারি খাতে যোগান বাড়িয়ে উৎপাদন বৃদ্ধির মাধ্যমে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে রাখার সতর্ক পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়। এতে প্রথমার্ধের জন্য বেসরকারি খাতে ১৪ দশমিক ৩০ শতাংশ ও দ্বিতীয়ার্ধের জন্য ১৫ শতাংশ ঋণ প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা প্রাক্কলন করা হয়েছিল। তবে রেপো ও রিভার্স রেপো হার অপরিবর্তিত রাখা হয়েছিল।
প্রতিক্ষণ/এডি/জেডএমলি










