হাজার রাতের শ্রেষ্ঠ রাত লাইলাতুল কদর

প্রকাশঃ জুন ২২, ২০১৭ সময়ঃ ২:১৩ অপরাহ্ণ.. সর্বশেষ সম্পাদনাঃ ৪:০৭ অপরাহ্ণ

২৬ রমযানের আজকের ইফতারের পরপর শুরু হবে যাবে ২৭ রমযান। আজকের রাতটি রমজানের শেষ দশ দিনের বিজোড় রাত। এই বিজোড় রাতে লাইলাতুল কদরের দেখা পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞ আমেলগণ।

সেদিক বিচারে হাজার রাতের চেয়ে শ্রেষ্ঠ পবিত্র লাইলাতুল কদরের সেই মহা কাঙ্খিত রাত আজ। মহিমান্বিত এই রাতেই মহান আল্লাহ্তায়ালা পবিত্র কোরআন অবতীর্ণ করেন। হেরা গুহায় ধ্যানরত রাসূলে পাক (সাঃ)-এর কাছে প্রথম পৌঁছান মুক্তির বাণী ‘ইক্রা বিস্মি রাব্বিকাল্লাজি খালাক (পড় তোমার প্রভুর নামে, যিনি তোমাকে সৃষ্টি করেছেন) ”।

এই রাতের মহিমা বর্ণনা করতে গিয়ে কোরান শরীফে সূরা কদরে স্বয়ং আল্লাহ্ রাব্বুল আলামিন বলেছেন, ‘লাইলাতুল কাদরি খাইরুম মিন আলফি শাহ্র’। অর্থাৎ হাজার মাসের চেয়ে সর্বোত্তম এই রাত।

লাইলাতুল কদরের জন্য সুনির্দিষ্ট কোনো রাতকে নির্ধারণ করা হয়নি। বরং রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, রমজানের শেষ ১০ দিনের বিজোড় রাতে ‘লাইলাতুল কদর’ তালাশ কর।

আজ যেহেতু বিজোড় রাত। আবার এ রাতে আলেমদের অনেকেই লাইলাতুল কদর হওয়ার ব্যাপারে মত দিয়েছেন। তাই আজকের রাতে লাইলাতুল কদর লাভে বেশি বেশি ইবাদত করা আবশ্যক।

মানুষের জীবন পরিচালনা গাইড ও সংবিধান পবিত্র কুরআনুল কারিম আজকের রাতেই নাজিল হয়েছে। আর তা ছিল ২৬ রমজান দিবাগত রাত তথা ২৭তম রাত। এ কারণে লাইলাতুল কদরের মর্যাদা এত বেশি।

এ রাতে কুরআন নাজিলের সম্মানার্থে আল্লাহ ঘোষণা দিলেন- ‘লাইলাতুল কদর হাজার মাস অপেক্ষা উত্তম। সুতরাং কুরআন নাজিলের রাতে কুরআনকে বাস্তবজীবনে বাস্তবায়ন করার অঙ্গীকার গ্রহণের পাশাপাশি বিশ্বনবির সুন্নতের পরিপূর্ণ অনুসরণের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণ এবং বাস্তবায়ন করাই হবে লাইলাতুল কদরের সেরা প্রাপ্তি।

এ রাতে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হজরত আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহুকে আল্লাহর নিকট গোনাহ মাফের দোয়া শিখিয়েছিলেন। তাই উম্মতে মুহাম্মাদির উচিত প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের শেখানো দোয়ার মাধ্যমে গোনাহ মাফের জন্য তাওবা করা।

দোয়াটি হলো: ‘আল্লাহুম্মা ইন্নাকা আ`ফুওয়ুন; তুহিব্বুল আ`ফওয়া; ফা`ফু আন্না।’
অর্থ : হে আল্লাহ! আপনি ক্ষমাশীল; ক্ষমা করতে ভালো বাসেন; অতএব আমাকে ক্ষমা করে দিন। (মুসনাদে আহমাদ, ইবনে মাজাহ, তিরমিজি, মিশকাত)

লাইলাতুল কদর যেহেতু হাজার মাস অপেক্ষা উত্তম রাত। তাই বান্দার জন্য এ রাতের হক বা অধিকার হলো আল্লাহর নৈকট্য লাভের পাশাপাশি মানুষের দুনিয়ার জীবনে সুখ-শান্তির আবেদন-নিবেদন আল্লাহর দরবারে পেশ করা। যাতে এ রাতে আল্লাহ তাআলা বান্দার জন্য সর্বোত্তম ভাগ্য নির্ধারণ করেন। দুনিয়ার যাবতীয় কল্যাণ দান করেন।

মানুষের জীবনে কারণে অকারণে অসংখ্য ওয়াক্ত নামাজ ছুটে যায়। তাদের জন্য নামাজ কাযার সূবর্ণ সময় পবিত্র লাইলাতুল কদর।’ কারণ আল্লাহ তাআলার ঘোষণা অনুযায়ী, লাইলাতুল কদর হাজার মাসে চেয়ে উত্তম।

এ রাতে যদি কেউ এক ওয়াক্ত নামাজ কাযা আদায় করে তবে আল্লাহর ঘোষণা অনুযায়ী হাজার ঐ ওয়াক্তের নামাজের কাযা আদায় হওয়ার কথা। আর এমনটি আশা করে কাযা আদায় করা মুসলিম উম্মাহর জন্য জরুরি। সুতরাং এ রাতে ন্যূনতম পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ একবার করে কাযা আদায় করা উচিত। আল্লাহ ইচ্ছা করলে এ ওসিলায় বিগত জীবনে ছুটে যাওয়া নামাজগুলোর কাযা আদায়কে কবুল করে ঐ বান্দাকে মাফ করে দিতে পারেন।

প্রতিক্ষণ/এডি/শাআ

আরো সংবাদঃ

মন্তব্য করুনঃ

পাঠকের মন্তব্য



আর্কাইভ

April 2024
S S M T W T F
 12345
6789101112
13141516171819
20212223242526
27282930  
20G