ভাঙ্গায় আসন পুনর্বিন্যাসের প্রতিবাদে মহাসড়ক ও রেলপথ অবরোধ, ভোগান্তিতে যাত্রীরা
প্রতিক্ষণ ডেস্ক
ফ

ফরিদপুরের ভাঙ্গায় সংসদীয় আসন পুনর্বিন্যাসের প্রতিবাদে টানা তৃতীয় দিনের মতো সকাল-সন্ধ্যা মহাসড়ক ও রেলপথ অবরোধ চলছে। রোববার সকাল ছয়টা থেকে শুরু হওয়া এ কর্মসূচির কারণে ঢাকা-খুলনা ও ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। পাশাপাশি ঢাকা-খুলনা রেলপথে দুটি ট্রেন আটকা পড়েছে। এতে হাজারো যাত্রী পড়েছেন চরম ভোগান্তিতে।
নির্বাচন কমিশন গত ৪ সেপ্টেম্বর ফরিদপুর-৪ আসনের আওতাধীন আলগী ও হামিরদী ইউনিয়নকে কেটে ফরিদপুর-২ আসনে যুক্ত করার গেজেট প্রকাশ করে। এর প্রতিবাদে স্থানীয়রা ৫ সেপ্টেম্বর প্রথমে মহাসড়ক অবরোধ করে তিন দিনের সময়সীমা দেন। কিন্তু দাবি পূরণ না হওয়ায় মঙ্গলবার থেকে ফের অবরোধ শুরু হয় এবং টানা কয়েকদিন এ কর্মসূচি চলছে।
আজ সকালে কাফনের কাপড় পরে আলগী ইউনিয়নের সোয়াদী বাসস্ট্যান্ড ও হামিরদীর মনসুরাবাদ এলাকায় অবরোধ শুরু করেন আন্দোলনকারীরা। সকাল আটটা থেকে ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কের পুখুরিয়া, হামিরদী, মাধবপুর বাসস্ট্যান্ড এবং ভাঙ্গা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সামনেও একই কর্মসূচি পালিত হয়।
অবরোধের ফলে ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা খুলনাগামী সুন্দরবন এক্সপ্রেস ও খুলনা থেকে ঢাকাগামী নকশীকাঁথা কমিউটার ট্রেন ভাঙ্গা এলাকায় আটকা পড়ে। যাত্রীরা কেউ ট্রেনে বসেই অপেক্ষা করছেন, কেউ আবার নেমে তিন কিলোমিটার দূরের ভাঙ্গা গোলচত্বরের দিকে হাঁটতে শুরু করেছেন।
কুষ্টিয়াগামী এক যাত্রী বজলুর রহমান ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “দেশে সরকার আছে কি না বুঝতে পারছি না। স্থানীয় সমস্যার জন্য সাধারণ মানুষ কেন ভোগান্তির শিকার হবে?” আরেক যাত্রী শবনম নেছা দুই সন্তানকে নিয়ে ঢাকায় ফেরার পথে আটকা পড়েছেন। তিনি বাধ্য হয়ে ব্যাগ কাঁধে নিয়ে বিকল্প বাহনের খোঁজে রওনা দেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, আন্দোলনে নারী-পুরুষ উভয়েই অংশ নিয়েছেন। তাঁরা লাল পতাকা নাড়িয়ে ট্রেন থামান। তবে যাত্রীদের সঙ্গে কোনো দুর্ব্যবহার করা হয়নি।
এ বিষয়ে দুপুরে ভাঙ্গা উপজেলা পরিষদে এক ব্রিফিংয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মিজানুর রহমান জানান, আন্দোলনের প্রতি প্রশাসন শুরু থেকেই সহানুভূতিশীল থাকলেও ক্রমেই পরিস্থিতি জটিল হচ্ছে এবং মানুষের দুর্ভোগ বাড়ছে। তাই বিকেল থেকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী হস্তক্ষেপ করবে বলে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, “আলগী ও হামিরদী ইউনিয়ন নগরকান্দা বা সালথার সঙ্গে যুক্ত হবে না। এখানকার ভোটাররা ভাঙ্গাতেই ভোট দেবেন ও সব ধরনের সেবা ভাঙ্গা উপজেলা থেকেই পাবেন। মানুষকে বিভ্রান্ত করার জন্যই এই আন্দোলন হচ্ছে।”












