চট্টগ্রামের বোস ব্রাদার্সকে জরিমানা

প্রকাশঃ নভেম্বর ২২, ২০২৫ সময়ঃ ৮:৫৮ অপরাহ্ণ.. সর্বশেষ সম্পাদনাঃ ৮:৫৮ অপরাহ্ণ

প্রতিক্ষণ ডেস্ক

চট্টগ্রামের নন্দনকাননের বিখ্যাত মিষ্টির দোকান বোস ব্রাদার্সে তেলাপোকা, চিকা, ইঁদুর ও টিকটিকির উপস্থিতি ধরা পড়েছে। বহু বছর ধরে পরিবার ও অতিথি আপ্যায়নের জন্য যাদের অনেকে ভরসা করে এই দোকান থেকে মিষ্টি কিনতেন, হঠাৎ এমন নোংরা পরিবেশের খবর জানাজানি হওয়ায় তারা গভীর হতাশা ও ক্ষোভ প্রকাশ করছেন।

বৃহস্পতিবার (২০ নভেম্বর) সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মাসুমা আক্তার কণার নেতৃত্বে পরিচালিত ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযানে বোস ব্রাদার্সের উৎপাদন ইউনিটে একের পর এক গুরুতর অনিয়ম ধরা পড়ে। দেখা যায়, পুরো উৎপাদন এলাকা জুড়ে ইঁদুর, তেলাপোকা ও টিকটিকির বিচরণ; অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে অসুস্থ কর্মীদের দিয়ে খাবার প্রস্তুত; রান্নাঘরে জমে থাকা আবর্জনা; এবং লেবেলিং নীতিমালা উপেক্ষা করে অনিবন্ধিতভাবে খাদ্য উৎপাদনের মতো নানা অসঙ্গতি। এসব অপরাধের দায়ে নিরাপদ খাদ্য আইন, ২০১৩ অনুযায়ী প্রতিষ্ঠানটিকে তিন লাখ টাকা জরিমানা করা হয়, যা现场 আদায়ও করা হয়।

অভিযানের খবর ছড়িয়ে পড়লে নিয়মিত ক্রেতা মুজিবুল হক ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে বলেন, পরিবারে যেকোনো অনুষ্ঠানেই বোস ব্রাদার্সের মিষ্টি নেওয়া ছিল বহু বছরের অভ্যাস। ব্র্যান্ডটির প্রতি অন্ধ বিশ্বাসই ছিল। কিন্তু রান্নাঘরে ইঁদুর–তেলাপোকা, অসুস্থ কর্মী—এসব শুনে সত্যিই হতাশ হয়েছি। এত পরিচিত একটি প্রতিষ্ঠানের এমন বেহাল দশা বিশ্বাস করা কঠিন।

১৯২০ সালে শুধাংশু বিমল বোসের হাত ধরে প্রতিষ্ঠিত বোস ব্রাদার্স চট্টগ্রামের অন্যতম পুরোনো এবং ঐতিহ্যবাহী মিষ্টির দোকান। শুধু মিষ্টির জন্যই নয়, দোকানটি ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনের সময় বিপ্লবীদের আড্ডাস্থল হিসেবে পরিচিত ছিল। মাস্টারদা সূর্য সেন, প্রীতিলতা ওয়াদ্দেদার ও কল্পনা দত্তের মতো বিপ্লবীরা এখানে বসেই বহু আন্দোলনের পরিকল্পনা করেছেন। দীর্ঘদিন ধরে পারিবারিকভাবে পরিচালিত এ দোকানে বর্তমানে রসমালাই, রসগোল্লা, দধি, কালোজাম, বাদশাভোগ, সন্দেশ ও চমচমসহ প্রায় ১৫ ধরনের মিষ্টি বিক্রি হয়।

এদিন নগরের এনায়েতবাজারেও আরেকটি মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করেন সহকারী কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সোনিয়া হক। রয়েল বাংলা সুইটস হাউসে অভিযান চালিয়ে সেখানেও অনিবন্ধিত ও অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে নিম্নমানের খাদ্য উৎপাদন, মেয়াদোত্তীর্ণ পণ্য সংরক্ষণ এবং নিয়মবহির্ভূত লেবেলিংয়ের মতো অনিয়ম পাওয়া যায়। এসব অপরাধের দায়ে প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে নিরাপদ খাদ্য আইনে দুই লাখ টাকা জরিমানা করা হয় এবং তাৎক্ষণিকভাবে পরিশোধ করা হয়।

আরো সংবাদঃ

মন্তব্য করুনঃ

পাঠকের মন্তব্য

20G