কানাডায় নাগরিকত্ব আইনে বড় পরিবর্তন, বিল সি–৩ পাসের পথে

প্রকাশঃ নভেম্বর ২৬, ২০২৫ সময়ঃ ৬:৩৭ অপরাহ্ণ.. সর্বশেষ সম্পাদনাঃ ৬:৪৭ অপরাহ্ণ

প্রতিক্ষণ ডেস্ক

বিদেশে জন্ম নেওয়া কানাডীয় বংশোদ্ভূত শিশুদের নাগরিকত্ব জটিলতা দূর করতে ইতিহাসের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ আইন সংস্কারের পথে হাঁটছে কানাডা সরকার। বিল সি–৩ নামে পরিচিত এই নতুন আইন কার্যকর হলে দীর্ঘদিনের ‘ফার্স্ট-জেনারেশন লিমিট’ সংক্রান্ত সমস্যার সমাধান হবে এবং বহু পরিবার নাগরিকত্ব পাওয়ার সুযোগ ফিরে পাবে।

অভিবাসন মন্ত্রী লেনা মেটলেজ ডিয়াব বলেন, “বিল সি–৩ নাগরিকত্ব আইনের দীর্ঘদিনের সমস্যাগুলোর অবসান ঘটাবে এবং বিদেশে জন্ম নেওয়া বা দত্তক নেওয়া শিশুদের তাদের পরিবারের সঙ্গে ন্যায্য অধিকার নিশ্চিত করবে। এতে পুরোনো আইনের কারণে বাদ পড়া মানুষদের নাগরিকত্ব ফিরিয়ে দেওয়া হবে এবং ভবিষ্যতের জন্য স্বচ্ছ নিয়ম তৈরি হবে।”

দীর্ঘদিনের জটিলতা দূর হচ্ছে

আইআরসিসি জানায়, ২০০৯ সালে প্রণীত ‘ফার্স্ট-জেনারেশন লিমিট’ অনুযায়ী, বিদেশে জন্ম নেওয়া কোনো শিশু স্বয়ংক্রিয়ভাবে নাগরিকত্ব পেত না, যদি তার বাবা–মা কানাডার বাইরে জন্ম নেন বা দত্তক নেওয়া হয়ে থাকেন। তবে বাবা–মায়ের একজন কানাডায় জন্মগ্রহণ করলে বা স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায় নাগরিক হলে সন্তান নাগরিকত্ব পেত।
এই জটিলতায় বহু মানুষ ‘হারানো কানাডিয়ান’ নামে পরিচিত ছিল।

২০২৩ সালের ডিসেম্বরে অন্টারিও সুপিরিয়র কোর্ট নিয়মটিকে অসাংবিধানিক ঘোষণা করে। সরকারও আপিল না করে আদালতের রায় মেনে নেয়।

যুক্ত হচ্ছে ‘সাবস্ট্যানশিয়াল কানেকশন টেস্ট’

বিল সি–৩ এর মাধ্যমে পুরোনো বিধিনিষেধের শিকারদের নাগরিকত্ব পুনরুদ্ধার করা ছাড়াও বিদেশে জন্ম নেওয়া ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য নতুন বিধান যুক্ত হচ্ছে।
নতুন নিয়ম অনুযায়ী—
বিদেশে জন্ম নেওয়া বা দত্তক নেওয়া সন্তান নাগরিকত্ব পাবে যদি তার কানাডিয়ান অভিভাবক কানাডায় কমপক্ষে ১,০৯৫ দিন (তিন বছর) বসবাসের প্রমাণ দেখাতে পারেন।
এ মানদণ্ড যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও অস্ট্রেলিয়ার নাগরিকত্ব আইনের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ।

২০২৬ সালের জানুয়ারি পর্যন্ত প্রস্তুতির সময়

আইনটি কার্যকর করতে আইআরসিসিকে ২০২৬ সালের জানুয়ারি পর্যন্ত সময় দেওয়া হয়েছে।
কানাডিয়ান ইমিগ্রেশন লইয়ার্স অ্যাসোসিয়েশনের মতে, আইন কার্যকর হলে নাগরিকত্বের আবেদনের সংখ্যা দ্রুত বাড়বে।

দীর্ঘ ইতিহাসের সমাপ্তি

১৯৪৬ সালের কানাডিয়ান নাগরিকত্ব আইনের কারণে অসংখ্য মানুষ নাগরিকত্ব হারিয়েছিল।
২০০৯ ও ২০১৫ সালের সংশোধনীতে অনেকের সমস্যা সমাধান হলেও ‘ফার্স্ট-জেনারেশন লিমিট’ বিদেশে জন্ম নেওয়া হাজারো পরিবারের সামনে বাধা হয়ে ছিল।
নতুন বিল সি–৩ সেই দীর্ঘদিনের জটিলতার অবসান ঘটাবে বলে আশা করা হচ্ছে।

আরো সংবাদঃ

মন্তব্য করুনঃ

পাঠকের মন্তব্য

20G