বিমান ভ্রমণে মোবাইল ফোন এয়ারপ্লেন মোডে না রাখলে কী হয়?
প্রতিক্ষণ ডেস্ক
বিমান যাত্রায় মোবাইল ফোন এয়ারপ্লেন মোডে রাখা বাধ্যতামূলক হলেও অনেকেই এর কারণ জানেন না। সত্যি বলতে, ফোন এয়ারপ্লেন মোডে না রাখলে বড় কোনো দুর্ঘটনার আশঙ্কা না থাকলেও এটি পাইলটদের যোগাযোগ ব্যবস্থায় সামান্য বিভ্রান্তি তৈরি করতে পারে।
পাইলটদের হেডসেটই উড্ডয়ন ও অবতরণের সময় প্রধান ভরসা। এ সময় টাওয়ারের সঙ্গে স্পষ্ট যোগাযোগ নিশ্চিত করা খুব জরুরি। পাইলটদের অভিজ্ঞতা বলছে, যাত্রীদের ফোন নেটওয়ার্ক খুঁজতে থাকলে হেডসেটে ‘ভোঁ-ভোঁ’ ধরনের শব্দ হতে পারে। এটি বিপজ্জনক না হলেও গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশ শোনা কঠিন হয়ে পড়ে। নিরাপত্তার পাশাপাশি এটি ভদ্রতার বিষয়ও।
নিয়মের পেছনের ইতিহাস
১৯৯১ সালে যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল এভিয়েশন অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (এফএএ) বিমানে সেলফোন ব্যবহার নিষিদ্ধ করে। তখন ধারণা ছিল, সেলুলার সিগন্যাল বিমানের যন্ত্রে বিঘ্ন ঘটাতে পারে। প্রযুক্তি উন্নতির ফলে ২০১৩ সালে এফএএ জানায়—ফোন এয়ারপ্লেন মোডে থাকলে কোনো ঝুঁকি নেই। ২০০৩ থেকে ২০০৯ সালের মধ্যে মাত্র ২৯টি ঘটনায় এ ধরনের বিভ্রান্তির ধারণা পাওয়া গিয়েছিল।
ইউরোপ ও আমেরিকার পার্থক্য
ইউরোপ ও যুক্তরাজ্যে যাত্রীরা বিমানে ফোন কল ও মেসেজ ব্যবহার করতে পারেন। কারণ সেখানে ব্যবহৃত ৫জি নেটওয়ার্ক কম ফ্রিকোয়েন্সির হওয়ায় বিমানযন্ত্রে বিঘ্ন সৃষ্টি করে না। এ ছাড়া বেশিরভাগ এয়ারলাইন পিকোসেল নামের প্রযুক্তি ব্যবহার করে স্যাটেলাইটের মাধ্যমে নিরাপদ সংযোগ দেয়।
কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রে উচ্চ ফ্রিকোয়েন্সির ৫জি ব্যবহারের কারণে বিমানের যন্ত্রাংশে বাধা তৈরি হওয়ার আশঙ্কা থাকে। তাই সেখানে এখনো এয়ারপ্লেন মোডই বাধ্যতামূলক।
শাস্তির উদাহরণ
ফোন এয়ারপ্লেন মোডে না রাখা অপরাধ হিসেবে জেল হয় না। তবে জরিমানার ঘটনা আছে। ২০১৬ সালে যুক্তরাজ্যের এক যাত্রী এ কারণে ৬০০ ডলারের বেশি জরিমানা দেন। ২০১৮ সালে আরও এক যাত্রী মোবাইল ফোন নিয়ে তর্কে জড়িয়ে প্লেন থেকে নামতে বাধ্য হন।
কেন এয়ারপ্লেন মোডে রাখবেন?
পাইলটের যোগাযোগে বিভ্রান্তি তৈরি হয় না
নেটওয়ার্ক খোঁজার ফলে ব্যাটারি দ্রুত শেষ হয় না
ফ্লাইট অভিজ্ঞতা আরামদায়ক হয়
বিমান কর্তৃপক্ষের নিয়ম মেনে চলাই সবচেয়ে নিরাপদ। যাত্রার সময় ফোন এয়ারপ্লেন মোডে রাখুন এবং নিশ্চিন্তে ভ্রমণ উপভোগ করুন।












