ইতিহাসের নিদর্শন : দিবর দীঘি

প্রকাশঃ অক্টোবর ২৬, ২০১৫ সময়ঃ ৬:১২ অপরাহ্ণ.. সর্বশেষ সম্পাদনাঃ ৬:১৯ অপরাহ্ণ

সিফাত তন্ময়

1ঐতিহাসিক প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শনগুলোর মধ্যে নওগাঁ জেলার পত্নীতলা উপজেলার দিব্যক জয়স্তম্ভ একটি। কালের সাক্ষী বহন করে আজও মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছে ওই স্তম্ভটি। প্রায় প্রতিটা দিনই ভ্রমণ পিপাসু মানুষ দিবর দিঘী পরিদর্শনে আসেন| নওগাঁ জেলা শহর থেকে ৫৭ কি.মি. পশ্চিম-উত্তরে অবস্থিত পত্নীতলা উপজেলার দিবর দীঘি। পাল আমলে খননকৃত ৬০ বিঘা দিঘীর মাঝখানে আশ্চর্যজনক ভাবে স্থাপিত অখন্ড গ্রানাইড পাথরের স্তম্ভ সুদূর অতীতের বাঙ্গালীর শৌর্যবীর্যের সাক্ষ্য বহন করছে আজও। অর্ধ বর্গবিঘা জমির ওপর অবস্থিত গোলাকার ওই দীঘির মধ্যখানে অবস্থিত আটকোণাবিশিষ্ট গ্রানাইট পাথরে নির্মিত এতবড় স্তম্ভ বাংলাদেশে বিরল। সকলের কাছেই ওই দীঘিটি কর্মকারের জলাশয় নামে পরিচিত। স্তম্ভের সর্বমোট উচ্চতা ৩১ ফুট ৮ ইঞ্চি। পানির নিচের অংশ ৬ ফুট ৩ ইঞ্চি এবং পানির উপরের অংশ ২৫ ফুট ৫ ইঞ্চি। স্তম্ভটির ব্যাস ১০ ফুট ৪ ইঞ্চি। প্রতিটি কোণের পরিধি ১ ফুট সাড়ে ৩ ইঞ্চি। স্তম্ভটিতে কোন লিপি নেই। স্তম্ভের উপরিভাগ খাঁজকাটা অলঙ্করণ দ্বারা সুশোভিত। বৃটিশ প্রত্নতাত্ত্বিক স্যার আলেকজান্ডার ক্যানিং হামের মতে, একাংশ শতাব্দির কৈর্বত্য রাজা দিব্যকের ভ্রাতা রুদ্রকের পুত্র প্রখ্যাত নৃপতি ভীমের কীর্তি এটি। এ স্তম্ভের প্রতিষ্ঠাতা সম্পর্কে ঐতিহাসিকদের মাঝে মতবিরোধ থাকলেও আজ অবধি দিব্যকের কীর্তি বলে অত্র অঞ্চলে প্রবাদ প্রচলিত রয়েছে। ধারণা করা হয়, 2এই শাসনামলে পাল বংশকে পরাজিত করে বিজয় অর্জনের স্মৃতি চিহ্ন হিসাবে দীঘির মাঝখানে জয়স্তম্ভ স্থাপন করা হয়। এটি একটি অখন্ড পাথর কেটে তৈরি করা হয়েছে। স্তম্ভের চারটি কোন থাকার পাশাপাশি এই বিরাট স্তম্ভের উপরিভাগে পরপর তিনটি রেখা রয়েছে যা স্তম্ভটির সৌন্দর্য বৃদ্ধি করে। স্তম্ভটির শীর্ষে রয়েছে নান্দনিক কারু কাব্য যা রাজার স্মৃতিকে আজও অম্লান করে রেখেছে। এদিকে এ প্রাচীন প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শনকে আরও দর্শনীয় করে তুলতে স্থানীয়ভাবে প্রশাসনের সহায়তায় ডাকবাংলো, চিড়িয়াখানা, হোটেল ও পিকনিক স্পট গড়ে তোলা হয়েছে। প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ সেখানে পরিদর্শনে আসেন। স্থানীয় অনেক দিনের দাবি ঐতিহাসিক ওই স্থানে পর্যটন মোটেল ও আকর্ষণীয় পিকনিক স্পট নির্মাণের।

 

যেভাবে যাবেন :

নওগাঁ জেলা সদর বালু ডাঙ্গা বাসস্ট্যান্ড হতে সাপাহারের বাসে উঠে সহজেই এখানে পৌঁছানো যেতে পারে। এক্ষেত্রে দিবর মোড়ে নেমে ভ্যান যোগে সামান্য পাকা পথ। জয়পুরহাট থেকে ধামইরহাট পত্নীতলা হয়েও এখানে যাওয়া যেতে পারে।

 

প্রতিক্ষণ/এডি/এস. টি.

আরো সংবাদঃ

মন্তব্য করুনঃ

পাঠকের মন্তব্য



আর্কাইভ

December 2025
SSMTWTF
 12345
6789101112
13141516171819
20212223242526
2728293031 
20G