শুকিয়ে যাচ্ছে তিস্তা, হুমকিতে উত্তরাঞ্চলের কৃষি ও জীবন

প্রকাশঃ অক্টোবর ৩০, ২০২৫ সময়ঃ ৬:৫৮ অপরাহ্ণ.. সর্বশেষ সম্পাদনাঃ ৬:৫৮ অপরাহ্ণ

প্রতিক্ষণ ডেস্ক

বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চলের প্রাণ তিস্তা নদী এখন প্রায় মৃতপ্রায়। একসময় স্রোতস্বিনী এই নদী আজ ধু ধু বালুচরে পরিণত হয়েছে। পানি কমে যাওয়ায় থমকে গেছে কৃষি ও সেচ কার্যক্রম।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) তথ্য অনুযায়ী, গত ১১ দিনে তিস্তা ব্যারেজে গড়ে পানি প্রবাহ মাত্র ১৭ হাজার কিউসেক, যা স্বাভাবিকের অর্ধেকেরও কম। নদীর গভীরতা প্রায় অর্ধেকে নেমে গেছে এবং তলদেশের পানি ও ভূগর্ভস্থ জলস্তর কমছে।

ফসলের ক্ষতি শুরু হয়েছে। ধান, ভুট্টা, পাট ও তিলসহ নানা ফসল অপরিপক্ক অবস্থায় শুকিয়ে যাচ্ছে। আসন্ন রবি মৌসুমের সেচ কার্যক্রমও ব্যাপকভাবে ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।

নদী বিশেষজ্ঞরা বলছেন, তিস্তার তলদেশ ভরাট হওয়ায় পানি কমছে। রংপুরের নদী গবেষক ড. তুহিন ওয়াদুদ জানান, “বিজ্ঞানসম্মতভাবে তিস্তা পুনঃখনন না হলে উত্তরাঞ্চল মরুভূমিতে পরিণত হবে।”

বর্ষার সময় ভারত থেকে নেমে আসা ঢালের পানিতে তিস্তা আবারও উছলে যায়। তীব্র স্রোতে নদীভাঙনে হাজার হাজার বসতবাড়ি পানিতে ভেসে যায়, অসংখ্য গবাদি পশু ও পাখি তলিয়ে যায়। পাউবোর তথ্য অনুযায়ী, গত এক দশকে ২০ হাজারেরও বেশি পরিবার নদী ভাঙনে বাস্তুচ্যুত হয়েছে।

রংপুর বিভাগের নীলফামারী, রংপুর, লালমনিরহাট, কুড়িগ্রাম ও গাইবান্ধা জেলায় ‘তিস্তা বাঁচাও, উত্তরবঙ্গ বাঁচাও’ স্লোগানে আন্দোলন চলছে। স্থানীয় বাসিন্দা ও পরিবেশবাদীরা মানববন্ধন ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন।

পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান জানান, ২০২৬ সালের জানুয়ারিতে ১২ হাজার কোটি টাকার তিস্তা মহাপরিকল্পনার কাজ শুরু হবে, যেখানে চীন ৬ হাজার ৭০০ কোটি টাকার ঋণ সহায়তা দেবে।

তিস্তা নদী শুধু একটি নদী নয়, এটি উত্তরবঙ্গের জীবন ও সংস্কৃতির প্রতীক। নদীটি হারালে ক্ষতিগ্রস্ত হবে কৃষি, জীবন ও সংস্কৃতি।

আরো সংবাদঃ

মন্তব্য করুনঃ

পাঠকের মন্তব্য

20G