সৌন্দর্য ও স্বাস্থ্যের অলংকার অলিভ অয়েল

প্রথম প্রকাশঃ ডিসেম্বর ১৭, ২০১৫ সময়ঃ ১০:০১ অপরাহ্ণ.. সর্বশেষ সম্পাদনাঃ ৯:০৫ পূর্বাহ্ণ

প্রতিক্ষণ ডেস্ক

আদিকাল থেকে অলিভ অয়েল বা জলপাইয়ের তেল বহুল প্রচলিত। আর এই তেলের ব্যবহার আজও অটুট আছে। শীতে নিজের ত্বকের যত্নে  জলপাইয়ের তেলের তুলনা হয় না। সুন্দর্য ও স্বাস্থের অলংকার হিসেবে আখ্যায়িত করা হয় এই তেলকে। হেলেন অফ ট্রয় খ্যাত লেখক হোমার ,অলিভ অয়েলকে তরল সোনা বলে আখ্যায়িত করেছিলেন।

oliv-oilইটালিয়ান অভিনেত্রী সোফিয়া লরেন নিজের সৌন্দর্যের গোপন রহস্যের পেছনে অলিভ অয়েল গোসলের অবদানের কথা জানিয়েছিলেন।

অলিভ অয়েল এ ভিটামিন, মিনারেল, ফ্যাটি এসিডে ভরপুর।এই তেলের গুনাগুণ এখানেই সীমাবদ্ধ নয়। জেনে নিন এই তেলে লুকিয়ে আছে কতশত উপকারী দিক।

রূপচর্চায় অলিভ অয়েল: রূপচর্চার অনুসঙ্গ হিসেবে অলিভ অয়েলকে অলংকারের সাথে তুলনা করা যায়।

– গোসলের আগে এক বালতি পানিতে ৫ টেবিল চামচ অলিভ অয়েল মিশিয়ে নিতে পারেন এতে রুক্ষতা দূর হবে। এছাড়া গোসলের আগে এই তেল শরীরে ম্যাসাজ করে নিলেও ভাল ফলাফল পাবেন।

-নখের ভঙ্গুরতা রোধ করতে তেলটিকে একটু গরম করে নিন তারপর নখ গুলো ডুবিয়ে রাখুন ৫-১০ মিনিট। এভাবে নিয়মিত করলে নখ শক্ত হবে সাথে নখের উজ্জলতাও বাড়বে।

-রাতে ঘুমোতে যাওয়ার আগে চোখের চার পাশে  অলিভ অয়েল লাগিয়ে ঘুমতে যান। এতে চোখের চারপাশের কুঁচকে থাকা ত্বককে হাইড্রেট করে আর নরম করে তোলে।

-রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে পায়ে অলিভ অয়েল ম্যাসাজ করে নিন, তারপর মোজা পরে ঘুমান। সকালে পা হয়ে উঠবে নরম ও উজ্জ্বল।

– রুক্ষ ঠোঁটের কমলতা ফিরিয়ে আনতে  অলিভ অয়েল কার্যকরী।

-একটি ডিমের কুসুমের সাথে ১ টেবিল চামচ অলিভ অয়েল আর ৩ ফোটা লেবুর রস মিশিয়ে প্যাক তৈরি করুন। তারপর মুখে লাগিয়ে ৫-১০ মিনিট অপেক্ষা করে প্রথমে হালকা গরম পানি তারপর ঠাণ্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। নরমাল অথবা শুষ্ক ত্বকে এই মাস্ক আর্দ্রতা বজায় রাখবে সেই সাথে নরম কোমল করে তুলবে।রাতে ঘুমানোর সময় নাইট ক্রিম হিসেবেও ব্যবহার করতে পারবেন। অলিভ অয়েল স্কিনকে নরম করে।

-সপ্তাহে অন্তত একবার হালকা গরম অলিভ অয়েল চুলে ভালো ভাবে ম্যাসাজ করে লাগান। এভাবে ২/৩ ঘণ্টা চুলে তেল লাগিয়ে রেখে শ্যাম্পু করুন। তারপর নিজেই লক্ষ করবেন ঝলমলে ও স্বাস্থ্যকর চুলের বাহার। এছাড়া এতে চুলের খুসকি দুর করে, নতুন চুল গজায় ও চুল পড়া কমাতে সহায়তা করে।

অলিভ

স্বাস্থ সুরক্ষায় অলিভ অয়েল: বহিরাগত সৌন্দর্য ছাড়াও অলিভ অয়েল আমাদের অভ্যন্তরীণ  দিকও অনেক বেশি সুরক্ষিত রাখে।

আমেরিকান হার্ট ফাউন্ডেশন গবেষণায় প্রমাণিত হয়েছে,রান্নার তেল হিসেবে অলিভ ওয়েল সবচেয়ে স্বাস্থ্যকর। এতে উপকারী মনোস্যাটুরেটেড ফ্যাট রয়েছে যা ক্ষতিকর কোলেস্টরেল কমায়, হৃদরোগ ও স্ট্রোকের ঝুঁকি হ্রাস করে।

তবে এই তেলকে সবচেয়ে স্বাস্থ্যকর অবস্থায় পেতে হলে একটি নির্দিষ্ট তাপমাত্রার মধ্যে রান্না করতে হবে। একে বলা হয় ‘স্মোক পয়েন্ট’। কারণ একটি বিশেষ তাপমাত্রায় অলিভ ওয়েল তার স্বাস্থ্যকর উপাদান হারিয়ে রাসায়নিক পদার্থ উৎপন্ন করে। বিজ্ঞানীদের মতে, এক্সট্রা ভার্জিন অলিভ ওয়েলের স্মোক পয়েন্ট ৩২০ ডিগ্রি ফারেনহাইট এবং ভার্জিনের ক্ষেত্রে তা ৪২০ ডিগ্রি ফারেনহাইট।

অলিভ ওয়েল বিশেষজ্ঞ ড. লুইসিতো সারকেসি বলেন, ‘উচ্চ তাপমাত্রায় রান্না হলেও অলিভ ওয়েল থেকে যে পরিমাণ ক্ষতিকর রাসায়নিক পদার্থ  নির্গত হয়, তা অন্যান্য তেল অপেক্ষা নগণ্য। তাই সব দিক থেকে অলিভ ওয়েলই সেরা।’

আবার স্মোক পয়েন্টই একমাত্র বিষয় নয়। তেলের স্বাদ, গন্ধ এবং বৈশিষ্ট্য অটুট রাখতেও তাপমাত্রা বড় বিষয়। বাদামের তেলের স্মোক পয়েন্ট ৪৫০ ডিগ্রি ফারেনহাইট, তিলের তেলের স্মোক পয়েন্ট ৪১০ ডিগ্রি ফারেনহাইট,
-কোষ্ঠকাঠিন্য রোধে এই তেল অনেক কার্যকরী। পেট পরিষ্কার না থাকার কারণে আমাদের অনেকেরই মুখে ব্রণ দেখা দেয়। তাই ব্রণের সমস্যা সমাধানের সাথে সাথে পেটের সমস্যাও সমাধান করতে হয়। প্রতিদিন সকালে কিছু খাওয়ার আগে ১ টেবিল চামচ অলিভ অয়েল খাবেন। কয়েকদিনের মধ্যেই আপনার সমস্যার সমাধান হবে।

-চোখের যত্নেও ব্যবহার করতে পারেন এই তেলটি। মাশকারার বদলে চোখের পাপড়ি, ভ্রু তে অলিভ অয়েল লাগান আর বাড়িয়ে তুলুন আপনার চোখের সৌন্দর্য সাথে পান স্বাস্থকর চোখ।

 

প্রতিক্ষণ/এডি/জেডএমলি

আরো সংবাদঃ

মন্তব্য করুনঃ

পাঠকের মন্তব্য

সর্বাধিক পঠিত

20G