৭বছর ধরে সন্তানের পিতৃপরিচয়ের আশায় দ্বারে দ্বারে ঘুরছে আকলিমা

প্রকাশঃ নভেম্বর ১২, ২০১৯ সময়ঃ ১:০৭ অপরাহ্ণ.. সর্বশেষ সম্পাদনাঃ ১:২০ অপরাহ্ণ

                                       আকলিমার পিতা

কন্যা সন্তানের পিতৃপরিচয়ের আশায় দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন আকলিমা (ছদ্মনাম)। ফরিদপুরের সালথা এলাকায় ২০১২ সালে পাশের বাড়ির শাহাদাত মোল্লার ছেলে সাখাওয়াত মোল্লা তাকে ধর্ষন করেছিল।
পারিবারিক ও সামাজিক লোকলজ্জার ভয়ে কাউকে কিছু বলেনি আকলিমা। এক সময় সে গর্ভবতী হয়ে পড়ে।বিষয়টি জানাজানি হলে গ্রাম্য সালিশ বসে এলাকায়। কিন্তু ধর্ষক সাখাওয়াত প্রভাবশালী হওয়ায় বিচার পায় না আকলিমা। পরে তার বাবা রিকশাচালক আকরাম বাদী হয়ে আসামী সাখাওয়াত ও তার পরিবারের বিরুদ্ধে একটি মামলা করে। মামলা চলতে থাকে কোর্টে।

এদিকে আকলিমার সন্তান ভুমিষ্ট হয়। সমাজে অবৈধ সন্তান জন্মদানকারী হিসেবে ঘৃনার পাত্রে পরিণত হয় আকলিমা। সে সন্তানের বয়স এখন ৭ বছর। অথচ মামলার এখনও কুলকিনারা হয়নি।আকলিমার কন্যার নাম কাজল (ছদ্মনাম)। সন্তানের পিতৃপরিচয়ের আশায় এখন কোর্টের বারান্দায় ঘুরে বেড়ায় আকলিমা।        আকলিমার ৬০ বছর বয়সী হতদরিদ্র রিকশাচালক বাবা প্রতিক্ষণ ডটকমকে বলেন, ‘আমার মেয়েটাকে বাঁচান। এই সমাজ অবৈধ সন্তান জন্মদানকারী হিসেবে তাকে যেভাবে অবহেলা আর ঘৃনার পাত্রে পরিণত করেছে তাতে মেয়েটি আমার যেকোনো সময় আত্মহত্যা করতে পারে।কন্যা সন্তানের পিতৃপরিচয়ের আশায় আমার মেয়ে দ্বারে দ্বারে ঘুরে এখন পাগল প্রায়।’

আকরাম আরো বলেন, কোর্টের নির্দেশে একবার ডিএনএ টেস্ট করা হয় ঢাকা মেডিকেলে। কিন্তু প্রভাবশালী সাখাওয়াত ও তার পরিবার টাকা দিয়ে ডাক্তারকে ম্যানেজ করে আমাদের বিপক্ষে ডিএনএ রিপোর্ট দিয়েছে। আমরা কোর্টে আবেদন করার পর কোর্ট আবার ডিএনএ টেস্ট করার অনুমতি দিয়েছে। আজ ১২ই নভেম্বর আবার ডিএনএ পরীক্ষা হবে। এবার যেন রিপোর্ট ঠিকমত হয় একটু খেয়াল রাখবেন।’

তিনি আরো বলেন, ‘স্বামীর স্বীকৃতি না পেলেও আমার মেয়েটি যেন অন্তত তার সন্তানের পিতৃপরিচয় (বায়োলজিক্যাল ফাদার) এর স্বীকৃতি পায়। কেউ যেন তাকে অবজ্ঞার চোখে না দেখে। বাবা হিসেবে এটাই আমার চাওয়া।’ একথা বলে এই প্রতিবেদকের হাত ধরে কান্নায় ভেঙে পড়েন হারুন।

ফরিদপুরের সালথা এলাকার হারুনের প্রতিবেশী অয়ন বলেন, ‘আকরাম ভাই দরিদ্র মানুষ। তার মেয়ে ভিকটিম। কোথায় যাবে কিছুই জানে না। আমি তাদের ফরিদপুরের কোর্ট থেকে শুরু করে ঢাকা মেডিকেল পর্যন্ত নিয়ে এসেছি। আজ মঙ্গলবার ডিএনএ টেস্ট হবে। আমি চাই ধর্ষকের মুখোশ উন্মোচন হোক। আকলিমার সন্তান তার পিতৃপরিচয়ের স্বীকৃতি পাক। তা না হলে আকলিমার জীবনতো নষ্ট হলো সাথে তার মেয়েটার জীবনটাও দুর্বিসহ হয়ে যাবে।’

উল্লেখ্য, ২০১২ সালে আকলিমা যখন ধর্ষিত হয় তখন তার বয়স ছিলো ১৩ বছর।

প্রতিক্ষণ/এডি/শাআ

আরো সংবাদঃ

মন্তব্য করুনঃ

পাঠকের মন্তব্য



আর্কাইভ

May 2024
S S M T W T F
 123
45678910
11121314151617
18192021222324
25262728293031
20G